অপরাধ

বিমানবন্দরে আটক মাদকের চালানের রহস্য উদঘাটন

ঢাকা, ১৪ অক্টোবর- হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক নতুন মাদকের চালানের রহস্য উদঘাটন করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। বিমানবন্দরে তল্লাশির সময় পোশাকের চালানে কোকেনসদৃশ এমফিটামিন নামের বিপুল পরিমাণ মাদকের চালানটি যাচ্ছিল অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী সিডনিতে। এ ঘটনায় বাংলাদেশের ৭ পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আহসানুল জব্বার বলেন, এমফিটামিন জাতীয় মাদক পাচার হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। একটি বিদেশি কুরিয়ারের মাধ্যমে আটক হওয়া মাদক বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার কথা ছিল।

উপ-পরিচালক ফজলুর রহমান বলেন, বিষয়টি তদন্ত শেষ পর্যায়ে। তবে প্রাথমিকভাবে অনেক কিছু পেয়েছি। সেখানে মাদকটি কোথা থেকে কীভাবে আনা হয়েছে, কারা এনেছে, এর গন্তব্য কোথায় ছিল আমরা প্রাথমিকভাবে মেলাতে পেরেছি। প্রয়োজনে আরও তদন্ত করে দেখা হবে।

জানা গেছে, বিমানবন্দরে আটক হওয়ার পর থেকে নতুন মাদক নিয়ে সরকারসহ প্রশাসনের চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। এরপরই গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের খিলগাঁও সার্কেল। তদন্তের শুরুতেই প্রথমে মতিঝিলের ইউনাইটেড কুরিয়ার সার্ভিসে যোগাযোগ করা হয়। আটক মাদকের গায়ে সাভির্সটির নাম লেখা ছিল। মূলত সেখান থেকে আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিস ফিডেক্সের মাধ্যমে সিডনি পাচারের পরিকল্পনা ছিল পাচারকারীদের।

আরও পড়ুন: ক্ষণে ক্ষণে কোটিপতি ছাত্র

সূত্র জানায়, ইউনাইটেড কুরিয়ার সার্ভিসে খোঁজ নেওয়া হলে, সেখান থেকে বুকিং দেওয়া অপর মাদক পাচারকারী রুবেলের নাম বেরিয়ে আসে। রুবেলের মোবাইল নম্বর নেওয়া হয়। তবে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে য় প্রযুক্তির মাধ্যমে তিন থেকে চারটি নম্বর ট‌্যাক করে সন্দেহভাজন হিসেবে রুবেলকে শনাক্ত করা হয়। ৪ অক্টোবর মোহাম্মদপুরের ৩/১৮ বাঁশবাড়ির ৫ তলা ভবনের তৃতীয় তলায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এখান থেকে আন্তর্জাতিক মাদকপাচারের নিয়ন্ত্রক জুনাইদ ইবনে সিদ্দিকি, তার সহযোগী নজরুল ইসলাম, মো. বাপ্পি ও বাবুল মজুমদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পরই মূলত রহস্য বেরিয়ে আসতে থাকে।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানতে পারেন, গত জুলাইয়ে ইয়াবা বা অন্য শুকনো মাদকের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হয় এই অ্যাম্ফিটামিন নতুন মাদক বেনাপোল সীমান্ত নিয়ে আসে। এরপর পাচারকারিরা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে মিটফোর্ডে কেমিক্যাল মাকের্টে নিয়ে আসে। বেনাপোল থেকে সুন্দরবন, ইউনাইডেট, করোতোয়াসহ বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসে তারা বৈধ মালামাল হিসেবে বুকিং দেয়। তথ্য এবং প্রমাণাদির ভিত্তিতে মিটফোডের কেমিক্যাল মাকের্টের আজাদ এন্টারপ্রাইজে অভিযান পরিচালনা করে দোকান মালিক মো. আবুল কালাম আজাদ ওরফে বান্টিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত ৪ জনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রুবেলকে কুরিয়ার সার্ভিসে বুকিং দেওয়ার সহযোগিতাকারী হিসেবে বনানী থেকে ইউনাইটেড ইন্টান্যাশনালের মালিক রেজাউল হক বাবুল ও কেরানিগঞ্জ থেকে মাদক পাচারচক্রের সক্রিয় সদস্য মো. মাজেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে কুরিয়ারে বুকিং দেওয়া রুবেলকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

প্রসঙ্গত, গত ৯ সেপ্টেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পোশাকের চালানের আড়ালে কোকেনসদৃশ ১২ কেজি ৩২০ গ্রাম এমফিটামিন আটক করা হয়। নতুন এ মাদকের আনুমানিক মূল্য ২৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আহসানুল জব্বার।

সূত্র : রাইজিংবিডি
এন এইচ, ১৪ অক্টোবর

Back to top button