চট্টগ্রাম

উপমন্ত্রী নওফেলকে দিয়ে চট্টগ্রামে করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণ শুরু

চট্টগ্রাম, ০৭ ফেব্রুয়ারি – শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের ভ্যাকসিন গ্রহণের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে করোনা ভ্যাকসিন কার্যক্রম।

রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল কেন্দ্রে ভ্যাকসিন নেন উপমন্ত্রী নওফেল।

এরপর চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর, চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বী, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বিদ্যুৎ বড়ুয়া ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন। করোনা পরবর্তী জটিলতা পর্যবেক্ষণের জন্য তাদের বুথের ভেতরে রাখা হয়েছে।

ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কোনো জটিলতা অনুভব করছেন কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপমন্ত্রী নওফেল বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া বা কোনো সেনসেশন বা নেগেটিভ কোনোকিছু অনুভব করছি না। যে কোনো ধরনের ওষুধেরই কিন্তু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। সুতরাং এটা নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা যার আজ ভ্যাকসিন নিয়েছি, আমরা এটা নিয়ে নেগেটিভ কিছু অনুভব করছি না।’

তিনি বলেন, আপাতত অগ্রাধিকার তালিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিবন্ধন করা হচ্ছে। একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠী, যাদের মধ্যে জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যম ব্যক্তি, স্বাস্থ্যখাতের লোকজন যারা সবচেয়ে বেশি মানুষের কাছে যান, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে সবাই পাবেন এবং আশা করি সবাই ভ্যাকসিন নেবেন।

আরও পড়ুন : মিয়ানমার সীমান্তরক্ষীর সাথে বিজিবির সম্পর্ক স্বাভাবিক রয়েছে’

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ূন কবীর বলেন, আল্লাহর রহমতে আমরা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূরের কথা, সামান্যতম কোনো অসুবিধাও অনুভব করছি না। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর আমরা আধাঘণ্টা অপেক্ষা করেছি। যেকোনো ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কিন্তু সাধারণ একটু জ্বর, মাথাব্যাথা হতেই পারে। কিন্তু এ ধরনের কিছুই হচ্ছে না। সুতরাং এটা আরও বেশি নিরাপদ। এরপরও ভ্যাকসিনেশন পরবর্তী জটিলতা পর্যবেক্ষণ এবং তারও পরবর্তী সকল ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।’

রোববার নগরীতে চমেক হাসপাতাল ও সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়া জেলার ১৪ উপজেলায়ও করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলার সকল উপজেলায় আমরা একসঙ্গে কার্যক্রম শুরু করেছি। আজ শুধুমাত্র চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় সাড়ে তিন হাজারের বেশি রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। নগরে আমাদের ১৫টি কেন্দ্র আছে। প্রত্যেকটিতে ৬টি করে বুথ আছে। এখন ৫৫ বছরের যারা আছেন তারা রেজিস্ট্রেশন করতে পারছেন। পর্যায়ক্রমে সকলের কাছে পৌঁছানো হবে, তবে কেবলমাত্র ১৮ বছরের নিচে এবং গর্ভবতী নারী ছাড়া।’

উল্লেখ্য, সারাদেশেই আজ জনসাধারণ পর্যায়ে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। রাজধানী ঢাকার ৫০টি হাসপাতালসহ সারাদেশের এক হাজার পাঁচটি হাসপাতালে করোনাভাইরাসের এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে সারাদেশে ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য কাজ করবে দুই হাজার চারশ টিম। তবে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে সাত হাজার ৩৪৪টি টিম। ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি চলবে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত।

এর আগে, গত ২৭ জানুয়ারি প্রথম করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ওই দিন ২৬ জন ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন।

পরদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ৫৪১ জনকে ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়।

সূত্র : সারাবাংলা
এন এইচ, ০৭ ফেব্রুয়ারি

Back to top button