জামায়াত নেতার ‘কলিজা ছিঁড়ে ফেলার’ হুমকি দেওয়ায় বিএনপি নেতাকে শোকজ
কুড়িগ্রাম, ০১ মে – কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় জামায়াত নেতাকে প্রকাশ্যে হুমকি এবং জামায়াত সম্পর্কে অশালীন ও অবমাননাকর মন্তব্য করায় দলীয় শৃঙ্খলার অভিযোগে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনিছুর রহমানকে দল থেকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তিনি জামায়াতের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ শ্রমিককল্যাণ ফেডারেশন রাজারহাট শাখার বায়তুলমাল সম্পাদক রুবেল মিয়াকে ‘কলিজা টানি ছিঁড়ি ফেলব’ বলে হুমকি দেন।
গতকাল বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ৫২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ওই ভিডিওতে রাজারহাট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনিছুর রহমানকে উত্তেজনাপূর্ণ কথাবার্তা বলতে শোনা যায়। সেখানে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘কলিজা টানি ছিঁড়ি ফেলব, একবারে টানি ছিঁড়ি ফেলব তোমার, চেনো তুমি, এ চেনো! খুব পাওয়ার দেখাও, একবারে নিশ্চিহ্ন করে দেব তোমাক, চেনো বিএনপিকে।’
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১ মে) কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপি থেকে আনিছুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশ প্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নোটিশের জবাব দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
অভিযুক্ত আনিছুর রহমান রাজারহাট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক। আর রুবেল মিয়া জামায়াতের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ শ্রমিককল্যাণ ফেডারেশন রাজারহাট শাখার বায়তুলমাল সম্পাদক।
কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ স্বাক্ষরিত ওই কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়- ‘সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে আপনি প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান, অসংলগ্ন ও উত্তেজনাপূর্ণ ভাষায় বক্তব্য প্রদান করছেন এবং একটি রাজনৈতিক দল সম্পর্কে অশালীন ও অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। ভিডিওতে ব্যবহৃত ভাষা এবং বক্তব্য সামগ্রিকভাবে দলীয় শৃঙ্খলা ও রাজনৈতিক সহনশীলতার পরিপন্থি।’
এ কারণে আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা পত্র প্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য বলা হলো।
বাংলাদেশ শ্রমিককল্যাণ ফেডারেশন রাজারহাট শাখার বায়তুলমাল সম্পাদক রুবেল মিয়া বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার চান্দামারী দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের কমিটি নিয়ে অভিভাবক সমাবেশে বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি পদ নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে বিকেলে থানামোড়ে আমায় ডেকে নিয়ে আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন আমাকে চড়থাপ্পড় মারেন, লাঞ্ছিত ও গালিগালাজ করেন। এ বিষয়ে এখনো মামলা করিনি। তবে দলের (জামায়াতে ইসলামী) ঊর্ধ্বতন নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে মামলা করব।
জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ বলেন, অভিযুক্ত আনিছুর রহমানের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। তিনি ব্যাখ্যা দিলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নোটিশ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনিছুর রহমান বলেন, দল আমার কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে, আমি ব্যাখ্যা দেব।
সূত্র: ঢাকা পোস্ট
এনএন/ ০১ মে ২০২৫