যূক্তরাষ্ট্র

বাইডেন প্রশাসনে ৪ বাংলাদেশি, প্রবাসীদের মাঝে আনন্দ-উচ্ছ্বাস

ওয়াশিংটন, ৩১ জানুয়ারি – যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত সপ্তাহে দায়িত্ব নেওয়ার পর পুরোদমে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। গুছিয়ে এনেছেন তার প্রশাসনের কাঠামোও। সেখানে জায়গা পেয়েছেন কৃষ্ণাঙ্গ, ভারতীয়, ল্যাটিনসহ নানা দেশ ও জাতিসত্তার অসংখ্য মানুষ। পেন্টাগনের প্রধান হয়েছেন একজন কৃষ্ণাঙ্গ, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি চিফ করা হয়েছে একজন ল্যাটিনকে, কেবিনেট সেক্রেটারি হয়েছেন একজন নেটিভ আমেরিকান। এছাড়া ফিলিস্তিনি, পাকিস্তানি, শ্রীলঙ্কান এবং বাংলাদেশিরাও আছেন বাইডেনের প্রশাসনে; যা বাইডেনের ভাষায় ‘লুকস লাইক আমেরিকা’র প্রতিফলন।

আমেরিকার নবগঠিত প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ৪ দায়িত্ব পেয়েছেন ৪ বাঙালি। হোয়াইট হাউজের ডেপুটি চিফ অব স্টাফের সিনিয়র অ্যাডভাইজার পদে আছেন জাইন সিদ্দিক, আমেরিকার কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন পল্লী উন্নয়ন সচিবালয়ের আন্ডার সেক্রেটারির চিফ অব স্টাফ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ফারাহ আহমেদ এবং বাইডেনের ট্রানজিশন টিমের আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন আরেক বাংলাদেশি-আমেরিকান রোমানা আহমেদ। এছাড়া হোয়াইট হাউজের এক্সিকিউটিভ অফিসের ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেট বিভাগে ইনফরমেশন অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্সের সিনিয়র কাউন্সিলর পদে যোগ দিয়েছেন কাজী সাবিল আহমদ।

আরও পড়ুন : কানাডায় নিখোঁজ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মরদেহ মিলল নদীতে

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান জাইন সিদ্দিক হোয়াইট হাউজের ডেপুটি চিফ অব স্টাফের সিনিয়র অ্যাডভাইজার হয়েছেন। তিনি প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি ও ইয়েল ল’ স্কুল থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। নিউইয়র্কে বেড়ে ওঠা এই তরুণের কর্মজীবন শুরু হয় ইউএস সুপ্রিম কোর্টের জজ ইলেনা ক্যাগন ও ইউএস কোর্ট অব আপিলের জজ ডেভিড ট্যাটেলের সঙ্গে কাজের মধ্য দিয়ে। খ্যাতনামা ল’ ফার্ম ওরিক হেরিংটন অ্যান্ড সাটসলিফ এলএলপির সহযোগী হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন। বাইডেন-কমালা ট্র্যানজিশন টিমে ডমেস্টিক অ্যান্ড ইকোনমিক বিভাগের চিফ অব স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায়ই হোয়াইট হাউজের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ পান জাইন। তার বাবা ডা. মামুন ও মা ডা. হেলেন দুজনই নিউ ইয়র্কে কর্মরত। তাদের দেশের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইলে।

রোমানা আহমেদ যোগ দিয়েছেন বাইডেনের ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল ইনফরমেশনের রিভিউ প্যানেলের সদস্য হিসেবে। তিনি বাইডেনের ট্রানজিশন টিমের আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দলেও কাজ করেছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়েও হোয়াইট হাউজে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে রোমানার। তবে ট্রাম্প প্রশাসন শপথ নেওয়ার আট দিনের মাথায় প্রেসিডেন্টের মুসলিম নিষিদ্ধকরণের প্রতিবাদে হোয়াইট হাউজ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন তিনি। ১৯৭৮ সালে মা-বাবার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান রোমানা। বাবা ব্যাংক অব আমেরিকায় কর্মরত অবস্থায় ১৯৯৫ সালে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। আর মা নিজের একটি ডে কেয়ার সেন্টার পরিচালনা করেন। রোমানা জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। মায়ের সঙ্গেই তিনি ওয়াশিংটনের অদূরে ম্যারিল্যান্ডে বসবাস করছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে আন্ডার সেক্রেটারির চিফ অব স্টাফ পদে নিয়োগ পেয়েছেন নরসিংদীর মেয়ে ফারাহ আহমেদ। কর্নেল ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যাচেলর এবং নিউজার্সির প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স করা ফারাহ ইউএসডিএতেও কাজ করেছেন। বাবা ড. মাতলুব আহমেদ ও মা ড. ফেরদৌস আহমেদ দুজনেই যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর হিসেবে কর্মরত। ফারাহ আহমেদের নানা ড. আবদুল বাতেন খান বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।

সর্বশেষ হোয়াইট হাউজের এক্সিকিউটিভ অফিসের ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেট বিভাগে ইনফরমেশন অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্সের সিনিয়র কাউন্সিলর পদে যোগ দিয়েছেন ৩৮ বছর বয়সী কাজী সাবিল আহমদ। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জন্মগ্রহণকারী সাবিল ব্রুকলিন ল’ স্কুলের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ছাড়াও ‘ডেমজ’ নামক একটি থিংকট্যাংকের প্রেসিডেন্ট।

এন এইচ, ৩১ জানুয়ারি

Back to top button