মৌলভীবাজারে রেস্তোরাঁয় ঢুকে বিএনপি নেতাদের ওপর হামলা, ভাঙচুর
মৌলভীবাজার, ২৮ জানুয়ারি – মৌলভীবাজার পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী অলিউর রহমানের পক্ষে নির্বাচনী গণসংযোগ শেষে দলীয় নেতারা হোটেলে বসে চা খাওয়ার সময় তাদের ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় শহরের শাহ মোস্তফা সড়কে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও হামলাকারীরা তার আগেই হোটেলে ঢুকে বিএনপি নেতাদেরকে লাঞ্ছিত করে ব্যাপক ভাঙচুর করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। মৌলভীবাজার পৌর নির্বাচনের মাত্র দুদিন আগে এমন ঘটনা ঘটায় শহরে বর্তমানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ঘটনাস্থলের পাশেই বিএনপি নেত্রী সাবেক সংসদ সদস্য খালেদা রব্বানীর বাসভবন। সেখানেও হামলার উদ্দেশ্যে হামলাকারীরা বাসার গেট টপকিয়ে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে।
সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকাল থেকে জেলা বিএনপির সভাপতি নাসের রহমান দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগে অংশ নেন। দুপুর আড়াইটার দিকে শহরের সুলতানপুর এলাকায় গণসংযোগ শেষে নাসের রহমান চলে যান। এরপর বেলা ৩টার দিকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ভিপি মিজানুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মতিন বক্স, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ, জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন উজ্জল ও স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক জিএম মুক্তাদির রাজুসহ বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের শতাধিক নেতাকর্মী গণসংযোগ শেষে শাহ মোস্তফা সড়কে অবস্থিত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চুর মালিকানাধীন ইসমাইল হোটেলে অবস্থান করছিলেন।
আরও পড়ুন: মাদকসেবী ছেলের অত্যাচারে হাসপাতাল থেকে পিতা-মাতার পলায়ন
সেখানে তারা নির্বাচন-কেন্দ্রিক দলীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একে অন্যের সঙ্গে কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে নৌকার সমর্থকরা শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে এসে হোটেলে অবস্থানরত বিএনপি নেতাদের ওপর লাঠিসোটা দিয়ে অতর্কিত হামলা ও রেস্তোরাঁয় ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ সময় বিএনপি নেতারা হামলা থেকে বাঁচতে দৌড়ে পালিয়ে যান।
হামলার ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আক্তার হোসেন। এ সময় তাকে হামলাকারীদের নিবৃত করতে দেখা যায়। তিনি বলেন, নৌকা এবং ধানের শীষের সমর্থকদের মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে। তবে কি কারণে ঘটনার সূত্রপাত তা জানতে চেষ্টা করছি, পরবর্তীতে ঘটনার প্রকৃত কারণ জানাতে পারবো।
ঘটনাস্থলে কথা হয় ব্যাপক ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত ইসমাইল হোটেলের কর্মচারী জাকির হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, কিছু বুঝে ওঠার আগেই হঠাৎ হামলার ঘটনায় হতভম্ভ হয়ে যাই। কোনোরকম প্রাণ বাঁচাতে হোটেলের পিছন দিকে পালিয়ে যাই। কি কারণে হামলা সে বিষয়ে হোটেল কর্মচারী জাকির কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান জানান, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে ৮-১০ জনকে আহত করেছে।
বিষয়টি নিয়ে নাসের রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই ঘটনা মৌলভীবাজারের রাজনৈতিক ইতিহাসে কখনো ঘটেনি।
এদিকে বুধবার রাতে নেতাদের ওপর হামলার বিষয়ে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে জেলা বিএনপির জরুরি বৈঠক ডাকেন নাসের রহমান। সভায় এ বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করা হয় বলে বিএনপি সূত্রে জানা যায়।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, মৌলভীবাজারের মানুষ খুব শান্তিপ্রিয়। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের মধ্যে মাঝে মধ্যে উত্তেজনা থাকেই। আজকের ঘটনা খুব বড় না হলেও সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে এগুলো যাতে কোনো প্রভাব না ফেলে পুলিশ সে ব্যাপারে কাজ করছে।
সূত্র : জাগো নিউজ
এন এইচ, ২৮ জানুয়ারি