টলিউড

নিজের ধর্মকে আঘাত করতে চাননি অভিনেত্রী সায়নী

মনিরুল ইসলাম

কলকাতা, ১৭ জানুয়ারি- তথাগত রায় ও সায়নী ঘোষের টুইটযুদ্ধ এবার আইনি মোড় নিল। হিন্দুধর্মের ভাবাবেগে আঘাত করার দায়ে টলি অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলেন প্রবীণ এই রাজনীতিক। তথাগত রায় তার টুইটার প্রোফাইলে অভিযোগপত্রের একটি ছবি পোস্ট করেছেন।

জানা গেছে, ২০১৫ সালে অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের টুইটার হ্যান্ডল থেকে একটি গ্রাফিক শেয়ার হয়েছিল। একটি শিবলিঙ্গের ছবি। তাতে কনডম পরাচ্ছে এক মহিলা। গ্রাফিক থেকে বোঝা যাচ্ছে, মহিলাকে এইডস সচেতনতার বিজ্ঞাপনের ম্যাসকট ‘বুলাদি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গ্রাফিকের ভেতরে লেখা, ‘বুলাদির শিবরাত্রি’। পোস্টের ক্যাপশনে ছিল, ‘এর থেকে বেশি কার্যকরী হতে পারেন না ঈশ্বর’।

বিজেপি নেতা তথাগত রায়ের অভিযোগ, হিন্দু ধর্মের পবিত্রতাকে নষ্ট করছেন সায়নী। শনিবার (১৬ জানুয়ারি) কলকাতার রবীন্দ্র সরোবর থানায় সায়নী ঘোষের বিরুদ্ধে এই অভিযোগে মামলা করেছেন প্রবীণ বিজেপি নেতা।

তবে, অভিযোগটি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন সায়নী ঘোষ। নিজের টুইটার প্রোফাইল থেকে টুইট করে জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে তার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়েছিল। অ্যাকাউন্ট উদ্ধার করার পর তিনি এই ছবিটি সরিয়ে ফেলেছিলেন। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কখনোই কারোর ধর্মকে তিনি আঘাত করতে চাননি।

তার ভাষায়, ‘আমি আগেই বলেছি যে ২০১৫ সালের টুইটটির বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম। যেই মুহূর্তে সেটিকে আমার নজরে আনা হয়, আমি সেটার তীব্র নিন্দা করে সবাইকে জানিয়ে ডিলিট করি। তবে আজকের এই বিষয়টাকে কেন্দ্র করে যে বিদ্বেষের সম্মুখীন আমাকে হতে হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।’

কিন্তু তার কথায় বিশ্বাস রাখেননি নেটাগরিকরাও। তথাগত রায়ের পোস্টের নীচে একাধিক টুইটার ব্যবহারকারী বলেছেন, ‘আইনি পথ বেছে নিয়ে ভাল করে‌ছেন স্যার।’ কেউ হুমকি দিয়েছেন, ‘বাঙালি হিন্দুরা ঘুমিয়ে নেই। তারা যোগ্য জবাব দেবে।’ কেউ কেউ সায়নীর পক্ষেও দাঁড়িয়েছেন।

অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ জানান, ‘আইনি প্রক্রিয়া চলবে নিজের মতো। একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করব আমি। তবে তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না। মানুষ সব বুঝতে পারছে। তারাই বিচার করবে।’

মামলার অভিযোগে তথাগত রায় বলেন, ‘আমি শিবের ভক্ত। ১৯৯৬ সালে শিবের পুজো দেওয়ার জন্য পায়ে হেঁটে কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রা করেছিলাম। অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের এই ছবিটি দেখে আমার ধর্মীয় ভাবাবেগ আহত হয়েছে। আপনারা এই বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।’

আরও পড়ুন :  মিথিলার পোস্ট করা ভিডিওতে নতুন ভূমিকায় সৃজিত

মামলার ছবি শেয়ার করে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘সায়নী ঘোষ, আপনার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই কলকাতা পুলিশের কাছে মামলা করা হয়েছে। তার মধ্যে গুয়াহাটি থেকে একজন ব্যক্তি আমাকে জানিয়েছেন, তার ভাবাবেগও আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তিনিও মামলা করবেন। আশা করি, আসাম পুলিশ এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিবে’।

শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল থেকেই টুইটারে বাকযুদ্ধ শুরু হয়েছিল তথাগত রায় ও সায়নী ঘোষের মধ্যে। তার আগের দিন একটি বাংলা চ্যানেলে অতিথি বক্তা হিসেব উপস্থিত হয়েছিলেন সায়নী। সেখানে তিনি বলেছিলেন, যে ভাবে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগানটিকে রণধ্বনিতে পরিণত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত ভুল। উপরন্তু, এটি বাঙালি সংস্কৃতির মধ্যেও পড়ে না। ঈশ্বরের নাম ভালবেসে বলা উচিত। এর পরেই টুইটারে উত্তেজিত হয়ে পড়েন দুই পক্ষ।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

আর/০৮:১৪/১৭ জানুয়ারি

Back to top button