তৃণমূলে ফিরলেন শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ সিরাজ
কলকাতা, ১৭ জানুয়ারি- বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে তত বাড়ছে দড়ি টানাটানি! ঘর গোছাতে ময়দানে নেমে পড়েছে সমস্ত রাজনৈতিক দলই। এই অবস্থায় বঙ্গ বিজেপিকে বড় ধাক্কা শাসকদল তৃণমূলের। হেভিওয়েট সিরাজ খাঁকে ফের দলে ফেরাল তৃণমূল।
আজ রবিবার ভবনে এসে ফের শাসকদলে যোগ দেন সিরাজ। তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
ফের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর সিরাজ বলেন, উন্নয়নমূলক কাজ করতে গেলেও বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে আমায়। কাজ করতে দেওয়া হয়নি। তৃণমূল যেভাবে মানুষের জন্য কাজ করছে আমি সেইভাবে মানুষের কাজ করতে চাই। আমার ভুল আমি বুঝতে পেরেছি। তৃণমূল গরীব মানুষের জন্য ভাবে। আমি সেই গরীব মানুষের জন্য় কাজ করতে চাই।’
শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ একজন নেতা হিসাবেই পরিচিত সিরাজ খাঁ। দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য তৈরি হয়েছিল। অধিকারীর খাসতালুক মেদিনীপুরে বেশ প্রভাবশালী এই নেতা। শুভেন্দু অধিকারীর দলবদলের আগে গত বছর ২৫ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র উপস্থিতিতে কোলাঘাটে বিরাট জনসভা করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন সিরাজ।
শুধু শুভেন্দু নন, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রাজনীতিতে অধিকারী পরিবারের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলেই পরিচিত ছিলেন তিনি। অধিকারীদের সৌজন্যেই জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ হন। কিন্তু তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে শুভেন্দুর দূরত্ব তৈরি হলে সিরাজ বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন। একনিষ্ঠ শুভেন্দু অনুগামী হয়েই ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে নন্দকুমার থেকে জেলা পরিষদ আসনে প্রার্থী হন। সেই আসনে জিতে জেলা পরিষদে খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ হন।
কিন্তু শুভেন্দুর সঙ্গে দলের বিরোধের কারণেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু দড়ি টানাটানির খেলায় মাস্টারস্ট্রোক শাসকদল তৃণমূলের! সেই শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ সিরাজকেই ছিনিয়ে নিল তৃণমূল। এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘ভুলবশত কৈলাস বিজয়বর্গীয়র হাত ধরে বিজেপিতে সামিল হয়েছিলেন সিরাজ।
২০১৬ সালে নন্দকুমারে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। পরে তৃণমূলে যোগ দেন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কর্মাধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করবেন।’’বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে শুভেন্দুকে আক্রমণ করেছেন সিরাজ।
আরও পড়ুন : ‘কালীঘাটে কি ভ্যাকসিনের কারখানা হয়েছে’, মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ দিলীপে
তিনি বলেছেন, ‘‘শুভেন্দু কাজে বাধা দেন। উনি ‘আমি’, ‘আমি’ করেন। আর ‘আমিত্বে’ ভোগেন। ‘আমরা’ হলে কাজ করতে দেন না। সৌমেন মহাপাত্রর মতো নেতাকে তমলুক থেকে সরে যেতে হয়েছিল ভাল কাজ করায়। ২০১১ ও ২০১৬ সালে শুভেন্দু এবং শিশির অধিকারী নন্দকুমারের টিকিট দেওয়ার কথা বললেও দেননি। আমার প্রতিবাদ ওঁদের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদ জানিয়ে ২০১৬ সালে নির্দল প্রার্থী হয়েছিলাম।’’
সঙ্গে সংযোজন, ‘‘বিজেপিতে ভুল করে গিয়েছিলাম। ওটা বড় লোকের দল, তৃণমূল গরিবের দল। তাই বুঝতে পেরে ফিরে এলাম।’’
উল্লেখ্য সোমবার ১৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা। তার আগে অধিকারী পরিবার তথা বিজেপিকে ধাক্কা দেওয়ার লক্ষ্যেই সিরাজকে দলে ফেরানো হল বলে জানানো হয়েছে!
সূত্র: কলকাতা২৪x৭
আর/০৮:১৪/১৭ জানুয়ারি