ইসলাম

আসুন জেনে নেই, ইসলাম কীভাবে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে!

মাওলানা মিরাজ রহমান

একজন মানুষ জন্মের পর থেকেই যে অধিকারের মালিক হয়, সেটা হলো মানবাধিকার। মানবাধিকার মানবজাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ের মধ্যে অন্যতম। রাসুল [সা.] বলেছেন, প্রত্যেক ব্যক্তিকে সৃষ্টি করা হয়েছে স্বভাবের ওপর। সে স্বভাবের মধ্যে রয়েছে স্বাধীনতা। বিভিন্ন প্রদেশে পাঠানো গভর্নরদের বিচার সভায় একজন গভর্নরকে লক্ষ্য করে হজরত ওমর [রা.] বলেছিলেন, আল্লাহ তো প্রত্যেক মানুষকে স্বাধীন করে সৃষ্টি করেছিলেন এবং প্রত্যেক মা তাঁর সন্তানকে স্বাধীনভাবে জন্ম দিয়েছেন, কে তোমাদের গোলাম করল। বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য হজরত ওমরের [রা.] এই একটি মাত্র বাণীর বাস্তাবায়নই যথেষ্ট। সাহাব আজমাইনরা নবিজির [সা.] কাছ থেকে মানবাধিকার রক্ষার আদর্শ শিক্ষা লাভ করেছিলেন।

আরও পড়ুন: অবৈধ উপার্জন ইসলামে নিষিদ্ধ

নবিজির মিশন ছিল মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার মিশন। সমাজের সব মানুষের সঠিক অধিকার নিশ্চিত করার আন্দোলন নিয়েই আগমন ঘটেছিল তার। মানবতার নবি ছিল তার উপাধি। প্রকৃত অর্থে মানবতার নবি ছিলেন তিনি। এমন মানবতাকামী মানুষের আগমন পৃথিবীতে আর হয়নি এবং হবেও না। কেবল হজরত ওমর কিংবা হজরত আলী এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নবি হজরত মুহাম্মদ [সা.]-এর জীবনই নয়, ইসলাম ধর্মই মানবাধিকারের ধর্ম। মানবতার ধর্ম। যেহেতু ইসলাম মূলত একটি নৈতিক শক্তি, সেজন্য তার একটি নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। একজন মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত- এমন কোনো স্তর বা এমন কোনো দিক-বিষয় নেই যেখানে ইসলাম অধিকারের কথা বলেনি। আলাদা আলাদাভাবে শ্রেণীভুক্ত মানুষের হক বর্ণনার ক্ষেত্রে ইসলামই একমাত্র ধর্ম।

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং মানবতার পক্ষে কাজ করা অসংখ্য উদাহরণ, অগণিত আদর্শ প্রতিষ্ঠিত রয়েছে ইসলামে। ইসলামই একমাত্র ধর্ম যে ধর্মে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত বাণী উচ্চারিত হয়েছে। আজ সমাজের বিভিন্ন স্তরে, বিভিন্ন পর্যায়ে নানাভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে মানবাধিকার। মানুষ হারাচ্ছে তার ন্যায্য অধিকার। বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ। পাশাপাশি বিভিন্ন আন্দোলন গড়ে উঠছে মানবাধিকারের কথা নিয়ে কিন্তু হচ্ছেটা কী? প্রকৃত অর্থেই কি প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে মানবাধিকার? মানুষ কি ফিরে পাচ্ছে ন্যায্য অধিকার? সফলতার অংশ এক্ষেত্রে কম। কারণ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সার্থক পদ্ধতি হচ্ছে ইসলাম। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলামের আদর্শ ও পদ্ধতি অনুসারে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এন এইচ, ১২ অক্টোবর

Back to top button