জাতীয়

দলের কোন প্রয়োজনে খোকনকে পাওয়া যায়নি: মেয়র তাপস

ঢাকা, ১২ জানুয়ারি- সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন সম্পর্কে বর্তমান মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, আমি আসলে ব্যক্তিগতভাবে কাউকে আক্রমণ করতে চাই না। তবে এটা সত্য, উনার (সাঈদ খোকনের) রাজনৈতিক জীবনে দলীয় সংগঠনের প্রয়োজনে কোন সময় উনাকে পাওয়া যায়নি, জাতির ক্রান্তিলগ্নেও উনাকে পাওয়া যায়নি।

মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) নগর ভবনের মেয়র হানিফ অডিটোরিয়ামে সাকরাইন উৎসব উপলক্ষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।

মেয়র তাপস বলেন, আমি অবাক হয়েছি তিনি একটি সভা করলেন, সেই সভায় যে বক্তব্য দিয়েছে সেটা পুরোপুরি বোঝা গেছে আমাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করার জন্য সেই বক্তব্য। বক্তব্যের কারণ ছিল আমাকে কিভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা যায়, মানুষের কাছে ছোট করা যায় এবং আমাকে কিভাবে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করা যায়। সেটাই ছিল উদ্দেশ্য।

মধুমতি ব্যাংকে টাকা হস্তান্তরের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উনি মধুমতি ব্যাংকে টাকা হস্তান্তর বিষয়ে যেটা বলেছেন এটা খুবই বিভ্রান্তিকর বক্তব্য। মধুমতি ব্যাংক ২০১৩ সালে স্থাপিত চতুর্থ প্রজন্মের একটি ব্যাংক। মধুমতি ব্যাংক গত সাত বছর যাবত অত্যন্ত সুনামের সাথে পরিচালিত একটি ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য সকল সংস্থার কাছে একটি সমাদ্রিত ব্যাংক। বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে সকল সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে থাকে। আমি দায়িত্বভার গ্রহণ করার আগেও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাথে মধুমতি ব্যাংকের ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল। তখনো আমানত হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অর্থ মধুমতি ব্যাংকে ছিল, এখনো আছে। শুধু আমানত না সেবামূলক যে ব্যবস্থাগুলো আছে যেমন হোল্ডিং ট্যাক্স, অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যমে টাকা আদায় করা এগুলো অন্যান্য বেসরকারি ব্যাংক বা সরকারি ব্যাংক যেভাবে পরিচালনা করে থাকে মধুমতি ব্যাংকেও তাই করেছে। সুতরাং মধুমতি ব্যাংকে আমি একজন শেয়ারহোল্ডার হিসেবে বা পরিচালক পদে সেখানে কোন অযাচিত বা দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে কিছু করা হয়েছে এরকম না, কথাটি সত্যি না। আর সেটা মোটেই সাংঘর্ষিক না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মনীতি প্রতিপালন করে সরকারি বিধিমালা পরিপালন করে যেভাবে আমানত নিয়ে থাকে মধুমতি ব্যাংকও তাই করেছে। এমন কোনো কিছু কেউ দেখাতে পারবে না, যেখানে ব্যত্যয় করে আইন বহির্ভূতভাবে অনৈতিকভাবে কোন কিছু করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা পালন করেই আমানত রাখা হয়েছে।

মেয়র আরও বলেন, আগে নীতিমালা ছিল সরকারি সকল অর্থের ৭৫ ভাগ সরকারি ব্যাংকে এবং ২৫ ভাগ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার। এটা এখন আর একটু উন্মুক্ত করে দিয়েছে। এখন ৫০ ভাগ সরকারি ব্যাংকে এবং ৫০ ভাগ বেসরকারি ব্যাংকে রাখা যায়। সকল বেসরকারি ব্যাংকই এসকল অর্থ আমানত হিসেবে রাখে। আমানত হিসেবে একটি সুনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রাখা হয় এবং সেই সময় পার হলে সেই অর্থ আবার সেই সংস্থা বা সেই প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসা হয়।

আরও পড়ুন : সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে ২ মামলার আবেদনের আদেশ ১৯ জানুয়ারি

মেয়র বলেন, আমরা যখন দায়িত্বভার গ্রহণ করেছি তখন কিন্তু ঘাটতি ছিল। প্রায় আড়াইশো কোটি টাকার মতো ঘাটতি নিয়ে আমরা যাত্রা শুরু করি। আজকে কিন্তু ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আমানত রাখার মত অবস্থায় গিয়েছে। গত ছয় মাসে ৩৩৫ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করেছি। সুতরাং আমরা এই পর্যায়ে এসেছি যে আমার হাত রাখার মত অবস্থায় গিয়েছে। উনি যদি মন্তব্যটা আগে করতেন তাহলে এক রকম। যখন আমরা অভিযান পরিচালনা করলাম, মামলা হলো তখন তিনি সেটাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য আমার ওপর ব্যক্তিগত আক্রোশে তিনি এ বক্তব্য দিয়েছেন। আক্রোশে করা কোন মন্তব্যের কোন জবাব দিতে চাইনি। আমাদের অভিযান অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে। অভিযান কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়। এ ব্যাপারে আর কেউ প্রশ্ন করবেন না আর কোন প্রশ্নের দরকার নেই, আর এ ব্যাপারে আমি কোনো উত্তর দেবো না।

তিনি বলেন, আমাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে অভিযান চলছে, চলবে।

সূত্র: দেশ রুপান্তর

আর/০৮:১৪/১২ জানুয়ারি

Back to top button