ইসলামের দৃষ্টিতে সুখী পরিবারের রূপরেখা
পরিবার সামাজিক জীবন ব্যবস্থার প্রথম অবকাঠামো। কয়েকজন মানুষকে নিয়ে গঠিত হয় পরিবার। আমরা পরিবার বলতে সাধারণত মা-বাবা, ভাই-বোনসহ বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনকে নিয়ে গঠিত একটি কাঠামোকে বুঝি। যে কাঠামোর মাঝে একজন অধিপতি বা কর্তা থাকেন এবং থাকেন বিভিন্ন পর্যায়ভুক্ত সহযোগীরা। হজরত আদম [আ.] এবং বিবি হাওয়া [আ.]-এর মাধ্যমেই পৃথিবীতে পরিবার তথা পারিবারিক জীবনের সূচনা ঘটেছে। তারা দুজন স্বামী-স্ত্রী হিসেবে পরিবারের সূচনা করেন। পরিবার বা পারিবারিক জীবনের মূলমন্ত্র এবং এর মৌলিকত্ব-প্রক্রিয়া জানাতে গিয়ে আল্লাহ মহান পবিত্র কোরানে ইরশাদ করেছেন, আমি প্রত্যেক কিছুর দুজোড়া সৃষ্টি করেছি যাতে তোমরা মনোযোগ দাও [কোরান, ৫১:৪৯]
ইসলাম স্বীকৃত পন্থা হলো বিবাহ করার মাধ্যমে একটি নতুন পরিবারের সৃষ্টি হয়। বিবাহ পদ্ধতি অবলম্বন করার মাধ্যমে একজন নারী এবং একজন পুরুষ একটি পরিবার তৈরি করেন। বিবাহ নারী-পুরুষের মধ্যে যেমন পরিবার সৃষ্টিতে অবদান রাখে; তেমনি দাম্পত্য জীবনে পরস্পরের মধ্যে প্রেম-ভালোবাসা অনুরাগ সৃষ্টি করে এবং মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন ও শান্তি সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ করে। পারিবারিক জীবনে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের সম্পূরক। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরানে ইরশাদ করেছেন, তারা [স্ত্রীরা] তোমাদের পোশাক এবং তোমরা] তাদের পোশাক। [কোরান, ২:১৮৭]
আরও পড়ুন: আল্লাহ মহানের সান্নিধ্য লাভ করার সহজ উপায়
সুস্থ ও সুখী সামাজিক জীবনের জন্য বিবাহ একটি প্রয়োজনীয় পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন। পবিত্র কোরানে বিবাহ ও পারিবারিক জীবনকে পারস্পরিক সহমর্মিতা, অন্তরের অনাবিল সুখ ও শান্তির উৎস হিসেবে ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। পরিবারে স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের অধিকার ও দায়িত্ব রয়েছে। পরিবারের জন্য তারা পরস্পর সম্পূরক। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, তারা [স্ত্রীগণ] তোমাদের পোশাক এবং তোমরা [স্বামীগণ] তাদের পোশাক। [কোরান, ২:১৮৭]
এ আয়াতাংশের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য হলো এ যে, পরিবারে নারী ও পুরুষের সম্পর্ক শরীর ও পোশাকের মতো। মানুষের শরীরের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বস্তু হচ্ছে তার পোশাক, এ দৃষ্টান্তটি স্বামী-স্ত্রীর নৈকট্যের পারিবারিক স্বরূপ। এ আয়াত দ্বারা পরস্পর পরস্পরের অধিকারের বিষয়টিও স্পষ্ট হয়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুখী পরিবারের সদস্য হওয়ার এবং আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করার তওফিক দান করুন। আমিন।
এন এইচ, ১২ অক্টোবর