জাতীয়

বছরের শেষে তুমুল আলোচনায় কানাডার ‘বেগম পাড়া’

ঢাকা, ৩১ ডিসেম্বর- বিদায়ী বছর যাবতীয় ব্যস্ততা করোনাভাইরাসকেন্দ্রিক থাকলেও বছর শেষে এসে দেশে তুমুল আলোচনার জন্ম দেয় কানাডায় বাংলাদেশিদের ‘বেগম পাড়া’। দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হওয়া বহু সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ তাদের স্ত্রী-সন্তানদের পাঠিয়ে দিয়েছেন কানাডায়। তাদের সেই আবাসকেই বলা হচ্ছে ‘বেগম পাড়া’।

বিদেশে অর্থপাচার করে ‘সেকেন্ড হোম’ বা ‘বেগম পাড়া’ গড়ে তোলার আলোচনা বহুদিন ধরেই রয়েছে সংবাদমাধ্যমে। এ নিয়ে অনেক বেসরকারি সংস্থা ও সুধীজনও কথা বলছিলেন দীর্ঘদিন ধরে।

এর মধ্যে গত ১৮ নভেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন কানাডার ‘বেগম পাড়া’ প্রসঙ্গে বলেন, ‘কানাডায় খবর নিয়েছি, প্রাথমিকভাবে কিছু সত্যতা পেয়েছি। মনে করছিলাম রাজনীতিবিদদের সংখ্যা বেশি হবে। কিন্তু দেখা গেল রাজনীতিবিদ চারজন। সরকারি কর্মচারীর সংখ্যাই বেশি। এছাড়া কিছু ব্যবসায়ীও আছেন। বিদেশে যদি কেউ বৈধভাবে টাকা নেয়, তাহলে কোনো আপত্তি নেই। তবে অবৈধভাবে পাচার করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এরপর আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসে কানাডার ‘বেগম পাড়া’ । এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে সরকারের কাছে ২৮ জনের তালিকা চায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গত ২৩ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের বাইরে অর্থপাচারে জড়িত ব্যক্তিদের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং অন্যান্য তদন্ত সংস্থা কাজ করছে।’

তারপর বিদেশে অর্থপাচারকারীদের যাবতীয় তথ্য চান হাইকোর্ট। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টে দুদক, অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) অর্থপাচারের বিষয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করে। এসময় শতাধিক ব্যক্তির নামে প্রায় দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা পাচারের তথ্য দেয় দুদক। তবে এতে সন্তুষ্ট হননি আদালত। কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে যারা অবৈধ গাড়ি-বাড়ি তৈরি করেছেন তাদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন হাইকোর্ট।

বিনিয়োগ ভিসায় দেশের যেসব উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদের স্ত্রী-সন্তানরা কানাডার টরেন্টো, মন্ট্রিয়ল, অটোয়া শহরে অভিবাসী হয়েছেন তাদেরই আবাসস্থলকে ‘বেগম পাড়া’ বলে চিহ্নিত করা হয়।

প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভাষ্যে, স্বামীরা দেশ থেকে অর্থের জোগান দেন আর স্ত্রীরা সন্তানদের নিয়ে সেই টাকায় কানাডায় থাকেন। সন্তানদের লেখাপড়া করান। এসব এলাকায় যেসব বাংলাদেশি বাড়ি বা ফ্ল্যাট কিনেছেন তারা প্রত্যেকেই অবৈধভাবে অর্থপাচার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এসব এলাকায় ওই স্বামীরা স্থায়ীভাবে থাকেন না, বেড়াতে যান। এজন্য এসব এলাকাকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ‘বেগম পাড়া’ বলে ডাকেন।

সূত্র: জাগো নিউজ
আডি/ ৩১ ডিসেম্বর

Back to top button