বড় ভাইয়ের স্ত্রীর সুদের টাকা নিয়ে দুই ভাইয়ে মারামারি, ছোট ভাই খুন
চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ২৯ সেপ্টেম্বর – চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় দেবর সাদিকুল ইসলামের (৪০) নিকট থেকে বড়ভাইয়ের স্ত্রীর সুদে টাকা ধার নেয়াকে কেন্দ্র করে দুই ভাইয়ের মারামারিতে বড়ভাই শফিকুল ইসলামের (৫৫) হাসুয়ার কোপে ছোটভাই সাদিকুল ইসলাম নিহত হয়েছেন। সাদিকুল পেশায় মাইক্রোবাস চালক ছিলেন।
স্থানীয়,হাসপাতাল ও পরিবার সূত্র এবং পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার (২৮সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের শ্রীরামপুর মধ্যপাড়া গ্রামে নিজেদের বসতবাড়িতে ঘটনাটি ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে ডান উরু, তলপেট সহ দেহের বিভিন্ন স্থানে হাসুয়ার কোপে আহত হন সাদিকুল।
তাকে উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালে আনার পর প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফরহাদ আলী সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার দিকে পালিয়ে যাবার সময় রাত ৯টার দিকে সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের গুনীর মোড় এলাকা থেকে পুলিশ বড়ভাই শফিকুলকে গ্রেপ্তার করে। তিনি ডান কানে আঘাত পেয়েছিলেন। তাকে জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
তবে তার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ফেরদৌসি বেগম (৩৫) পলাতক রয়েছেন। হত্যায় ব্যবহৃত হাসুয়াটি জব্দ করেছে পুলিশ। নিহত ও গ্রেপ্তার দুই ভাই ওই গ্রামের আফসার আলীর ছেলে। দুই ভাই পরিবার নিয়ে একই বাড়িতে বসবাস করলেও সাদিকুলের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী প্রায় ১০০ গজ দূরে অন্য একটি বাড়িতে থাকতেন।
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, শফিকুলের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ফেরদৌসি দেবর সাদিকুল ইসলামের নিকট ৭৫ হাজার টাকা ধার নেন। যা লাভ সহ ৯৫ হাজার টাকা হয়। এই টাকা নিয়ে দ্বন্দে দুই ভাইয়ের মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময় মূলত উরুতে হাসুয়ার কোপে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সাদিকুল মারা যান। ঘটনার পূর্ণ তদন্ত শুরু হয়েছে।
মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার বড়ভাই শফিকুলকে হাজতে নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওসি।
দুই ভাইয়ের চাচাতো ভাই ও প্রতিবেশী তুষার আলী (২৫) বলেন, দুই ভাইয়ের মধ্যে পারিবারিক কলহ ছিল। এরই জেরে ঘটনাটি ঘটে। নিহতের স্ত্রী, এক ছেলে (১৬) ও এক মেয়ে (৮) রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, পিতা-মাতা, স্ত্রী ও সন্তানসহ দুই ভাই এক বাড়িতে থাকলেও আগের স্বামীর পক্ষের দুই সন্তান নিয়ে শফিকুলের দ্বিতীয় স্ত্রী ফেরদৌসি পাশে অন্য একটি বাড়িতে থাকতেন। তবে তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রী পুরো পরিবারের সাথে থাকেন। ফেরদৌসির নিকট সাদিকুল ১ লক্ষ টাকা পেত বলে জানা গেছে। এ টাকা নিয়ে বৃহস্পতিবার দুই ভাইয়ের মারামারি হয়। শফিকুল বেকার ছিলেন। তাঁর আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না বলেও জানান ইউপি সদস্য।
সূত্র: কালের কণ্ঠ
এম ইউ/২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩