১৫ ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা উন্নতির নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের
ঢাকা, ২৮ সেপ্টেম্বর – দেশের ১৫টি ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার উন্নতির নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ব্যাংকগুলোর পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়কদের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এ কঠোর বার্তা দেন।
বৈঠকে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, সুশাসনের অভাবে ভুয়া ঋণ, ইচ্ছাকৃত খেলাপি, অর্থপাচার এবং অনিয়মে জড়িত হয়ে পড়েন পরিচালকরা। ব্যাংকগুলোতে সুশাসন না ফেরাতে পারলে গ্রাহকদের আস্থা কমে যাবে। আস্থা কমলে মানুষ আমানত রাখা নিয়ে দ্বিধায় পড়বে।
বর্তমানে আটটি ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষক আছে। এগুলো হলো- সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক।
এছাড়া সাতটি ব্যাংকে সমন্বয়ক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো- ন্যাশনাল ব্যাংক, এবি ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক।
মূলত ঋণ নিয়ে অনিয়ম ও কেলেঙ্কারি শনাক্তে ব্যাংকগুলোকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়ক নিয়োগ দিয়েছে।
বৈঠকের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, দেশের ১৫ বাণিজ্যিক ব্যাংকের পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়কের সঙ্গে অনুষ্ঠিত তৃতীয় বৈঠকে গভর্নর কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। তারমধ্যে এমওইউ বাস্তবায়ন, ব্যাংকে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং দুর্বলতারোধে আগাম ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোর ওপর নজরদারি বৃদ্ধি এবং ঋণ বিতরণ ও খেলাপি আদায়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
এদিকে পর্যবেক্ষক নিয়োগের পরও এসব ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার অবনতি অব্যাহত আছে। যেমন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষক থাকা সত্ত্বেও জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে।
২০১৫ সালের নভেম্বরে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৭ সালের শেষে ব্যাংকটির মন্দ ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা। এরপর চলতি বছরের মার্চ শেষে তা বেড়ে হয় ১৪ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা। চলতি বছরের মার্চ শেষে যা ব্যাংকিং খাতের মোট খেলাপি ঋণের প্রায় ১১ দশমিক ৪ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকগুলোতে সুশাসনের অবনতি মোকাবিলায় পর্যবেক্ষক ও সমন্বয়কদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে, অন্যথায় পরিস্থিতির উন্নতি হবে না।
পর্যবেক্ষক নিয়োগের এই রীতি ১৯৯৪ সালে শুরু হয়েছিল। তখন ওরিয়েন্টাল ব্যাংকে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিল এবং তাদের সুশাসনের বিষয়টি সমাধানে একজন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। পরে ওরিয়েন্টাল ব্যাংকের নাম পরিবর্তন করে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক করা হয়েছিল।
অন্যদিকে আবদুর রউফ তালুকদার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে যোগদানের পর চলতি বছর থেকে সমন্বয়ক নিয়োগ দেওয়া শুরু হয়।
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩