দিলীপ-রাহুলদের মতো আদিনেতায় আস্থা নেই বঙ্গ বিজেপির! ২৪-এ ক্যামব্যাকের লক্ষ্যে নতুনের জয়গান
কলকাতা, ২৭ সেপ্টেম্বর – বঙ্গ বিজেপিতে আদি-নব্য দ্বন্দ্ব চিরকালের। সম্প্রতি আদিরা যে বিজেপিতে কোণঠাসা তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একুশের নির্বাচন ও নির্বাচনোত্তর পর্ব থেকেই আদিরা মুখ ফিরিয়ে রেখেছেন। পুরনোদের সক্রিয় করতে উদ্যোগ নিলেও তা আদতে বাস্তবায়িত হয়নি। পুরনো নেতারা সক্রিয় হননি বিজেপিতে।
তাহলে কি ২০২৪-এর মুখেও বিজেপির আদি নেতারা দল থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকবেন। এখন আর বঙ্গ বিজেপিকে দিলীপ ঘোষ ও রাহুল সিনহাদের টিমের সক্রিয় সদস্যদের দেখা যায় না সেভাবে। সায়ন্তন বসু, রীতেশ তিওয়ারি, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়রা এখন ব্রাত্য। এখন দলের নতুনদেরই রমরমা।
একুশের নির্বাচনের পরে বিজেপিতে নয়া মুখ আনা হয়েছিল। দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে আনা হয়েছিল তরুণ-তুর্কি নেতা সুকান্ত মজুমদারকে। আর তৃণমূল তেকে আসা শুভেন্দু অধিকারী তো ছিলেনই। সুকান্ত-শুভেন্দুদের জমনায় অনেকটাই কোণঠাসা দিলীপ ঘোষ ও রাহুল সিনহারা।
তাঁদের হাতে একটা সময়ে দলের ব্যাটন ছিল। এখন তাঁরা সেভাবে কলকে পাননি বিজেপিতে। তাঁদের অনুগামীরাও সরে গিয়েছেন দলের সামনের সারি থেকে। তার প্রভাবও পড়েছে ভোটব্যাঙ্কে। একুশে নির্বাচনের পরে বাংলায় ১০-১০টি ভোট হয়েছে, কোনও ভোটেই মুখ ফেরানো বিজেপি নেতা-কর্মীদের দেখা যায়নি সেভাবে। দিলীপ ঘোষ ও রাহুল সিনহারা দলে থাকলেও তাঁদের ভূমিকা গৌণ হয়েছে। ফলে লোকসভা নির্বাচন ২০২৪-এর আগে বিজেপির সঙ্কট বাড়ছে। বছর ঘুরলেই বেজে যাবে ভোটের দামামা। তার আগে বিজেপিতে এই ‘গৃহযুদ্ধ’ই বুমেরাং হতে পারে। গেরুয়া শিবিরকে আদি-নব্য সংঘাতের মাসউন গুণতে হতে পারে।
সম্প্রতি বিজেপির সদর দফতরে সংস্কারের জন্য দিলীপ ঘোষ ও রাহুল সিনহার ঘর ছেড়ে দিতে হয়েছে। তার ফলে ভারতীয় হিন্দু মহাসভার নাম করে যে পোস্টার পড়েছে, সেখানে বিজেপিকে বাঙালি বিরোধী তকমা দেওয়াই হয়নি, বিজেপির গৃহযুদ্ধ সামনে এসে পড়ায় সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে তারা।
পোস্টারে লেখা হয়েছে, দিলীপ ঘোষ ও রাহুল সিনহা বাঙালি বলেই তাদের বরাদ্দ ঘর ছেড়ে দিতে হয়েছে। পোস্টার পড়েছে-‘বিজেপি বাংলা চায়, বাঙালিদের নয়’। বাঙালিরা অবহেলিত বঙ্গ বিজেপিতে, এমন আশঙ্কার কথাও ফলাও করে লেখা হয়েছে পোস্টারে।
আর এর মধ্যে যে প্রশ্নটা সবথেকে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে, তা হল-বিজেপিতে দিলীপ ঘোষ বা রাহুল সিনহারা ব্রাত্য। সে কথা উল্লেখ করে লেখা হয়েছে-সুকান্ত মজুমদারের মান রাজ্য সভাপতি হিসেবে ততটা উন্নত নয়, যতটা ছিল দিলীপ ঘোষের। এখানে উল্লেখ্য দিলীপ ঘোষ বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি হিসেবে সবথেকে বেশি সফল।
তাঁর আমলেই বিজেপি ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে বাংলায় ১৮টি আসন পেয়েছে। যা কখনইও তিনের বেশি ছিল না। আর ২০২১-এর বিধানসভায় ২০০ আসন না জিতলেও ৭৭টি আসন নিয়ে প্রথমবার বাংলার বিধানসভার বিরোধী আসনে বসেছে। এহেন রাজ্য সভাপতিকে সরিয়ে দিয়ে অন্যকে সুযোগ দেওয়া আদি বিজেপি ভালো ভাবে নেয়নি। এবার তার খেসারতও দিতে হতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের মত।
সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা
আইএ/ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩