শিখ হত্যা তদন্ত: সহযোগিতায় ভারতকে আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
ওয়াশিংটন, ২৪ সেপ্টেম্বর – খালিস্তানপন্থি শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার ঘটনা নিয়ে ভারত ও কানাডার মধ্যে উত্তেজনা নতুন মোড় নিয়েছে। গত ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত শিল্পোন্নত ও ধনী দেশগুলোর জোট জি২০-এর শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে দিল্লিতে যান কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সে সময় উড়োজাহাজে ত্রুটির কারণে সফরসঙ্গীদের নিয়ে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত ২৪ ঘণ্টা তাঁকে ভারতে কাটাতে হয়। এ ঘটনা উড়োজাহাজের ‘কারিগরি ত্রুটি’ নাকি ‘নাশকতা’– এমন প্রশ্ন উঠেছে।
গতকাল শনিবার এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে কানাডার ন্যাশনাল পোস্ট অনলাইন। প্রতিবেদনে বলা হয়, সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কানাডার প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিল ব্লেয়ারকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি এর সরাসরি উত্তর এড়িয়ে গেছেন। ব্লেয়ার বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। এ নিয়ে এখনও উদ্বেগ রয়ে গেছে।’ পরে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন বিল ব্লেয়ারের প্রেস সেক্রেটারি ড্যানিয়েল মিনডেন। তিনি বলেন, কানাডার পক্ষে এটাকে নাশকতা বলে বিশ্বাস করার ‘কোনো কারণ নেই’। খুব সম্ভবত উড়োজাহাজটিতে ‘যান্ত্রিক ত্রুটি’ ঘটেছিল।
ট্রুডোকে বহনকারী উড়োজাহাজে এমন একসময় ‘নাশকতার’ সন্দেহ করা হচ্ছে, যখন তলানিতে ঠেকেছে কানাডা ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক। কানাডার মাটিতে নিজ্জারকে হত্যার জেরে দুই দেশের মধ্যে এ দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। গত সোমবার ট্রুডো জানান, তাঁর কাছে ‘বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ’ আছে যে, এ হত্যার পেছনে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা জড়িত। ভারত বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
দিল্লিতে আটকা পড়া অবস্থায় নিজেদের উড়োজাহাজে ট্রুডোকে দেশে পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল ভারত সরকার। কানাডা তাতে রাজি হয়নি। পরে দেশ থেকে প্রকৌশলী পাঠিয়ে উড়োজাহাজ ঠিক করার পরই ট্রুডো তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে কানাডায় ফেরেন। এনডিটিভি জানায়, চলমান কূটনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে জাস্টিন ট্রুডোর নতুন একটি দাবি। গতকাল শনিবার ট্রুডো জানান, পার্লামেন্টে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশের কয়েক সপ্তাহ আগেই নিজ্জার হত্যার ‘বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ’ ভারতকে জানিয়েছিলেন তিনি।
এদিন খালিস্তানপন্থি আরেক নেতা গুরপাওয়ান্ত সিং পান্নুর ভারতের পাঞ্জাবে থাকা জমিজিরাতসহ সম্পদ জব্দ করেছে দেশটির জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ। রয়টার্স জানায়, নিজ্জার হত্যার তদন্তে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে বলে স্পষ্ট করেছে। শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, ‘ট্রুডো যে অভিযোগ তুলেছেন, তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। কানাডার সঙ্গে তদন্তে ভারতের কাজ করাটা জরুরি। আমরা জবাদিহিতা দেখতে চাই।’ এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের প্রতি এ ধরনের আহ্বান জানালেও এবারই প্রথম দেশটির শীর্ষ কূটনীতিক এ নিয়ে কথা বললেন।
সূত্র: সমকাল
আইএ/ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩