নরসিংদী

ছাত্রীকে ২০০ বার কান ধরে ওঠবস করানোর নির্দেশ, ৬১ বারের মাথায় অচেতন

নরসিংদী, ১৯ সেপ্টেম্বর – নরসিংদীর শিবপুরে অনুপস্থিতির জন্য ষষ্ঠ শ্রেণির এক অসুস্থ ছাত্রীকে ২০০ বার কান ধরে উঠবস করার নির্দেশ দেন শিক্ষক। শিক্ষকের কথা মতে ৬১ বার কান ধরে উঠবস করার পর অচেতন হয়ে পড়েন ছাত্রী। পরে সহপাঠীরা তাকে মাথায় পানি দিলে জ্ঞান ফিরে তার।

রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার কামরাব উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এ ব্যাপারে ছাত্রীর মামা মো. মহসিন মিয়া শিবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে কামরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জামান ও কম্পিউটার অপারেটর আসিফুল ইসলামের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কামরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী অসুস্থতার কারণে ৩ দিন স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন। রবিবার জ্বর কিছুটা কমলেও পুরোপুরি সুস্থ না হয়েই সকালে সে স্কুলে আসে। ওইদিন প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জামানের নির্দেশে বিদ্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর আসিফুল ইসলাম প্রথম ক্লাস নেন। তিনি হাজিরা নেয়ার সময় দেখেন ওই ছাত্রী তিন দিন ধরে অনুপস্থিত। জ্বরের কারণে বিদ্যালয়ে আসতে পারেনি বলে জানান। কিন্তু অনুপস্থিত থাকার কারণে তাকে ২০০ বার কান ধরে উঠবস করার নির্দেশ দেন শিক্ষক। সঙ্গে ১০ টাকাও চাঁদা দাবি করেন। সে ভয়ে কান ধরে উঠবস করা শুরু করেন ওই ছাত্রী। ৬০ বার উঠবস করে সে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থতার কথা আবার জানালে কম্পিউটার অপারেটর আসিফুল ধমক দিয়ে আরও ৫ বার, মোট ২০৫ বার উঠবস করার জন্য বলেন। তখন সে ৬১ বার উঠবস করে অচেতন হয়ে পড়ে যায়। পরবর্তীতে তার সহপাঠীরা মাথায় পানি দিলে জ্ঞান ফিরে। তারপর সে বাড়ি চলে আসে।

ওই ছাত্রীর মামা মহসিন মিয়া বলেন, ‘আমার ভাগনি অসুস্থ শরীর নিয়ে বিদ্যালয়ে যায়। কিন্তু তার কথা না শোনেই উঠবস করার নির্দেশ দেন শিক্ষক। আর উঠবস করার সময় সে অচেতন হয়ে যায়। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের কাছে দুদিন ধরে অভিযোগ জানিয়েও প্রতিকার পাইনি। তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জামান বলেন, অসুস্থ বলার পরও ওই শিক্ষার্থীকে কানে ধরে উঠবস করার নির্দেশ দেওয়া আসিফুল ইসলামের ঠিক হয়নি। অভিযোগ পাওয়ার পরই আমি শাস্তি হিসেবে তাকে ক্লাস নেওয়া থেকে বিরত রেখেছি। বলেছি ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে আসতে। যতদূর জানি তিনি গতকাল সন্ধ্যার দিকে দুঃখ প্রকাশ করেও এসেছেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন বলেন, অসুস্থ ছাত্রীকে ২০০ বার কানে ধরে উঠবস করানোর একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্র: দেশ রূপান্তর
আইএ/ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

Back to top button