অক্টোবরে মোংলা-খুলনা রুটে চলবে ট্রেন
খুলনা, ১০ সেপ্টেম্বর – দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে উন্নয়নের ডানায় যুক্ত হতে যাচ্ছে আরও একটি পালক। নানা চড়াই-উতরাই শেষে আগামী অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে চালু হতে যাচ্ছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নৌবন্দর মোংলার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ।
অক্টোবরের শেষদিকে এ রেলপথ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া নতুন এই রেল রুটটি গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে আন্তর্জাতিক রেল রুট হিসেবে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় মোংলা-খুলনা রেললাইন পরিদর্শনে এসে মোংলা-খুলনা রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান এসব কথা বলেন।
এদিন সরেজমিনে দেখা যায়, মোংলা-খুলনা রেলপথ নির্মাণকাজ এখন একেবারেই শেষের পথে। আগামী অক্টোবরের শেষে খুলনা-মোংলা রেলপথ (ফুলতলা রেলস্টেশন থেকে মোংলা বন্দরের দিগরাজ) দিয়ে রেল চলাচল শুরুর পরিকল্পনা নিয়েই এগুচ্ছে কাজ। রেলপথের ৯৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি মাত্র দুই শতাংশ রেলপথ ও কিছু ফিনিশিং কাজ চলমান রয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই এসব কাজ সম্পন্ন হবে। এ প্রকল্পে রেল চলাচল শুরু হলে মোংলা বন্দরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান বলেন, ট্রানজিট সুবিধার আওতায় মোংলা বন্দর থেকে ভারত, নেপাল ও ভুটানের পণ্য পরিবহনে সাশ্রয় ও সহজ করতে খুলনার ফুলতলা রেলস্টেশন থেকে মোংলা বন্দর জেটি পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১০ সালে। শুরুতে প্রকল্পটি ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা করতে পারেনি ঠিকাদার। তিনি আরও বলেন, ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় মোংলা-খুলনা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রথম দফায় প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় প্রথম সংশোধনীতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮০১ টাকা।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। তবে দ্বিতীয় দফা সংশোধনের পর সর্বশেষ ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। সেই সঙ্গে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লারসেন অ্যান্ড টুব্রো রূপসা নদীর ওপর রেলসেতুর নির্মাণকাজ করেছে। বাকি কাজ করেছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনাল। প্রকল্পটির কাজ তিনটি ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে রয়েছে রূপসা নদীর ওপর রেলসেতু নির্মাণ, মূল রেললাইন স্থাপন এবং টেলিকমিউনিকেশন ও সিগন্যালিং স্থাপন। শুরু থেকেই প্রকল্পটি নানা ধরনের বাধার মুখে পড়ে। তিন বছর মেয়াদের কাজটির জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দিতে সময় লাগে দুই বছর। আর এই ধীরগতির কারণে তিন বছর মেয়াদের প্রকল্পটি ১ হাজার ৭২১ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকায়।
দুই দফায় প্রকল্প সংশোধনের কারণে এই ব্যয় বেড়েছে ২ হাজার ৫৩৯ কোটি টাকা। তবে তৃতীয় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও ব্যয় বাড়েনি বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩