জাতীয়

ইসিকে সহায়তায় আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র

ঢাকা, ০৬ সেপ্টেম্বর – আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের প্রস্তুতি কেমন এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ঢাকায় মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র নবম নিরাপত্তা সংলাপ শেষে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিস মোমেনের কাছে এসব বিষয়ে জানতে চান সফররত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনৈতিক-সামরিক বিষয়ক ব্যুরোর আঞ্চলিক নিরাপত্তা সম্পর্কিত উপসহকারী সেক্রেটারি মিরা রেজনিক। সংলাপে ঢাকার পক্ষ থেকে ওয়াশিংটনের কাছে র‍্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার নিয়ে জানতে চাওয়া হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা-ওয়াশিংটন নবম নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

সংলাপে ঢাকার পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা অনুবিভাগের মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলম। ওয়াশিংটনের নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা সফররত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের রাজনৈতিক-সামরিক বিষয়ক ব্যুরোর আঞ্চলিক নিরাপত্তা সম্পর্কিত উপসহকারী সেক্রেটারি মিরা রেজনিক। বৈঠক শেষে সফররত মার্কিন উপসহকারী সেক্রেটারি মঙ্গলবার বিকেলে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। বৈঠক সম্পর্কে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে জানতে চাইলে তারা কোনো মন্তব্য করেনি।

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র জানতে চেয়েছে, আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরা বলেছি যে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সরকার বদ্ধপরিকর। নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা বাড়াতে সহযোগিতার প্রয়োজন হলে তারা তা দিতে রাজি আছে বলে জানিযেছে। আমাদের মানবাধাকিার পরিস্থিতির বিষয় জানতে চেয়েছে। এই ইস্যূতে আমরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাধ্যবাধকতাগুলো পূরণ করছি। এবারের সংলাপে সরাসরি জিসোমিয়া-আকসা চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়নি। প্রতিরক্ষা সংলাপে এগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। তবে আমরা বলেছি, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে একই ধরনের চুক্তি নিয়ে কাজ আছে। আপনারা জানেন যে, কৌশলগত সংলাপে জাপানও আমাদের কনসিডার করছে, তাদের অফিসিয়াল সিকিউরিটি অ্যাসিস্ট্যান্সে আমাদের তারা ক্যান্ডিডেট কান্ট্রি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। সুতরাং বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করছি। আগামীতে তাদের সঙ্গেও সেভাবেই আলোচনা হবে বলে আমরা আশা রাখি।

এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, র‍্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, প্রতিটি মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে যে অভিযোগ আসে, যে প্রতিবেদন আসে, প্রতিটিকেই আমরা খুব গুরুত্ব দেই। আমরা বাহিনীর সঙ্গে আলাপ করে সেগুলোর উত্তর বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে দেই। আমরা আমাদের দেশে কোনো ইম্যুনিটির সুযোগ রাখি না। আমাদের প্রতিটি বাহিনীর এসওপি আছে। একটা গুলি খরচ করলেও জবাবদিহি করতে হয়। যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনায় সবসময় সরকার যে ইনভলব থাকে, তা তো নয়। আমরা কিছুদিন আগে দেখেছি যে, গাজীপুরে একজন শ্রমিকনেতা মারা গেলেন, সেখানে তো সরকারের কিছু করার নেই, তবে শেষ পর্যন্ত আমাদের তো জবাবদিহির বিষয় থাকে। আমাদের ১৭০ মিলিয়ন জনসংখ্যার একটি দেশ, সেখানে তো এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে আমাদের বাহিনীর কেউ কিছু করলে এসওপি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। আমরা র‍্যাবের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে লিখিতভাবে জবাব দিয়েছি। তাদের প্রক্রিয়ার মধ্যে সেটি আছে। এ নিয়ে আমরা সজাগ আছি, এখানে দায়মুক্তির কোনো সুযোগ নেই।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার রাতে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ঢাকা-ওয়াশিংটন নবম নিরাপত্তা সংলাপে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল, আগামী নির্বাচন, নিরাপত্তা সহযোগিতা, সামরিক ব্যবসা ও সহযোগিতা, সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা মোকাবিলা, আন্তর্জাতিক অপরাধ এবং সীমান্ত সংলগ্ন আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যূ নিয়ে আলাপ হয়েছে। সিভিল এবং মিলিটারি ইস্যূতে দুইপক্ষ সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছে। সংলাপে জলবায়ু পরিবর্তন, জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়েও আলাপ হয়েছে। যে কোনো সন্ত্রাসের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে এবং সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা মোকাবিলায় বাংলাদেশ সবসময়েই সহযোগিতা করে যাবে।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

Back to top button