ড. ইউনূস ইস্যুতে এবার পাল্টা বিবৃতি দিলো ঢাবি শিক্ষকদের নীলদল
ঢাকা, ০৩ সেপ্টেম্বর – নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইস্যুতে ১৬০ বিদেশির খোলা চিঠির বিষয়ে পাল্টা বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীলদল। তারা বলছেন, বিদেশিদের বিবৃতিতে বাংলাদেশে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ওপর আক্রমণ চলছে—বলে যে দাবি করা হয়েছে তা অমূলক ও ভিত্তিহীন।
রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) নীলদলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আমজাদ আলী ও অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
বিদেশিদের খোলা চিঠিকে ‘আন্তর্জাতিক আইন, রীতিনীতি ও শিষ্টাচার বিবর্জিত এবং একটি রাষ্ট্রের স্বাধীন বিচারব্যবস্থা ও সার্বভৌমত্বকে অসম্মান প্রদর্শনের শামিল’ উল্লেখ করে নীলদলের বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা এবং সার্বভৌমত্বের ওপর এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। জাতিসংঘের সর্বজনীন মানবাধিকারের ঘোষণা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ঘোষণা, ফরাসি বিপ্লবের প্রেক্ষাপট, ব্রিটিশ বিল অব রাইটস, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সংবিধান প্রণয়নসহ পৃথিবীর সব ঐতিহাসিক পরিবর্তনের মৌলিক দর্শন হলো নাগরিকদের আইনি সমতা নিশ্চিত করা। বিবৃতিদাতারাও নিজ নিজ দেশের আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও নীতিনিষ্ঠ নাগরিক হিসেবে পরিচিত। ফলে এ ধরনের পক্ষপাতমূলতক বক্তব্যের মাধ্যমে নিজেদের নীতি ও আদর্শকেই তারা অস্বীকার করেছেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা বিচারাধীন উল্লেখ করে নীলদল দাবি করে, তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদে ৬০ বছরে অবসরে যাওয়ার আইন অমান্য করে ৭০ বছর বয়সেও উক্ত পদ ছাড়তে সম্মত ছিলেন না। এ সংক্রান্ত মামলায় তিনি বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আইনি লড়াইয়ে হেরে যাওয়ার পরে গ্রামীণ ব্যাংকের পদ ফিরে পেতে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রভাবশালী দেশে লবিং করেছেন। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকি, দাতা তহবিলের অর্থ বেআইনিভাবে হস্তান্তর, শ্রম আইন লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা ধরনের অভিযোগ আছে। অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা কর ফাঁকির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে এবং তিনি আদালতের রায় মেনে নিয়ে ধার্যকৃত কর পরিশোধ করেছেন।
ড. ইউনূসের পক্ষে বিবৃতিদাতা সম্মানীত ব্যক্তিরা বাংলাদেশের আইনকানুন ও রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবেন এবং আইনগত ও সাংবিধানিক বিধিবিধান অনুধাবন করবেন বলে নীলদল আশাবাদ ব্যক্ত করে।
বিবৃতিতে ‘অযাচিত ও অনভিপ্রেত চিঠি’ দিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের বিচারিক ও রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকতে সবাইকে আহ্বান জানায় সংগঠনটি।
বিবৃতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নীলদলের ৮৬৬ জন শিক্ষকের নাম-পদবি উল্লেখ করা হয়েছে।
সূত্র: আরটিভি নিউজ
আইএ/ ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩