ঢাকা, ২৫ ডিসেম্বর- দেশের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে সেরা জালিয়াতি করেছে বেস্ট হোল্ডিংস (লা মেরিডিয়ান হোটেল)। সম্প্রতি নিষিদ্ধ হওয়া দুটি অডিট ফার্ম দিয়ে নিরীক্ষা এবং অ্যাসেট পুনর্মূল্যায়নের মাধ্যমে একটি হোটেলের ৭ হাজার ৭২০ কোটি টাকার সম্পদ দেখানো হয়।
এক্ষেত্রে শুধু ১০ তলা একটি ভবনের দাম দেখানো হয়েছে ৩৭৫৭ কোটি টাকা। এতে প্রতিটি রুমের খরচ পড়েছে ১২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। বিদেশি মুদ্রায় যা ১৪ লাখ ৫৪ হাজার ডলার। এক বছরে লা মেরিডিয়ানের পরিশোধিত মূলধন বাড়ানো হয়েছে ১শ’ গুণের বেশি।
আর এই ভুয়া আর্থিক রিপোর্টের কারণে এই কোম্পানির আইপিও (প্রাথমিক শেয়ার) আবেদন বাতিল করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এছাড়া স্টক এক্সচেঞ্জের মূল্যায়নেই কোম্পানিকে নন-কমপ্লায়েন্স বলা হয়েছে।
এরপরও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সরকারি দেখিয়ে সরাসরি তালিকাভুক্তির সব আয়োজন চূড়ান্ত করেছিল। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের চুক্তি ছাড়াই সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবিকে এই প্রক্রিয়ার ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে দেখানো হয়েছে।
তবে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে আইসিবি। তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রীর কাছ থেকে চিঠি এনে বিএসইসি, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং স্টক এক্সচেঞ্জে দেয়া হয়েছে। তবে সরকারের উচ্চ মহলের নির্দেশে শেষ পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
এরপর অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আরেকটি চিঠি দিয়ে মন্ত্রীর আগের চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়। সম্প্রতি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে এই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের ব্যাপারে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
বর্তমানে এই কোম্পানির বিদেশে টাকা পাচারের বিষয়টি তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সবকিছু মিলে বাজার থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা তুলে নেয়ার ডিজাইন করা হয়েছিল।
এর সঙ্গে জড়িত রয়েছেন, ১৯৯৬ ও ২০১০ সালে দুই দফায়ই শেয়ারবাজারে কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রভাবশালী সদস্যের নেতৃত্বে একটি মহল। আর ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে রয়েছে রেস পোর্টফোলিও অ্যান্ড ইস্যু ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড।
আর এই মুহূর্তে এটি এখন শেয়ারবাজারের সবচেয়ে বড় আলোচিত বিষয়। অর্থনীতিবিদরা বলছে, এ ধরনের জালিয়াতির বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
না হলে এরা বিনিয়োগকারীদের সর্বস্বান্ত করে সরকারকে আবারও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলবে। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বিএসইসি বলছে, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।
জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, এটি সরাসরি তালিকাভুক্তির জন্য স্টক এক্সচেঞ্জে আবেদন করেছে। নতুন রিপোর্টটি এখনও বিএসইসিতে আসেনি।
এলে আমরা খতিয়ে দেখব। তিনি বলেন, অডিট কোম্পানি অতিরিক্ত মূল্যায়ন করলে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, কোম্পানিটিতে অনেক অনিয়ম রয়েছে।
এর মধ্যে অন্যতম হল, অতিমূল্যায়ন। সম্পদ অনেক বেশি দেখানো হয়েছে। তিনি বলেন, এই কোম্পানিতে সরকারি ব্যাংকের অনেক বেশি বিনিয়োগ রয়েছে। আর সরকারি ব্যাংকের টাকা জনগণের।
তবে অর্থ মন্ত্রণালয় এই বিনিয়োগের ব্যাখ্যা চেয়েছে। কিন্তু ব্যাখ্যা শেষ কথা নয়। এজন্য অবশ্যই উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। তদন্তে যারা দোষী সাব্যস্ত হবে, তাদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।
শেয়ারবাজারে কারসাজির এই ডিজাইন দুই বছর আগেই করে লা মেরিডিয়ান। এরপর প্রক্রিয়া শুরু করে। এক্ষেত্রে সরকারি ব্যাংকের কাছ থেকে প্রথমে ঋণ নেয়। পরে বিভিন্নভাবে বোর্ডকে ম্যানেজ করে তা প্লেসমেন্ট শেয়ারে রূপান্তর করা হয়।
চারটি ব্যাংক থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা নেয় প্রতিষ্ঠানটি। এক্ষেত্রে অস্বাভাবিক ১০ টাকার শেয়ারে ৫৫ টাকা প্রিমিয়ামসহ ৬৫ টাকায় ব্যাংকগুলোর কাছে বিক্রি করা হয়। বিষয়টি নিয়ে ওই সময়ই প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুগান্তর।
স্টক এক্সচেঞ্জে দেয়া প্রসপেক্টাসের তথ্য অনুসারে কোম্পানিটির চেয়ারম্যান হিসাবে রয়েছেন হাসান আহমেদ ভুঁইয়া এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন আহমেদ ভুঁইয়া।
বর্তমানে আমিন আহমেদ ভুঁইয়ার বিদেশে অর্থ পাচারের বিষয়টি তদন্ত করছে দুনীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রতিষ্ঠানটির অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার ৫শ’ কোটি, পরিশোধিত মূলধন ৮৭০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
প্রতিটি শেয়ারের সম্পদ মূল্য দেখানো হয়েছে ৬৬ দশমিক ৬৮ টাকা। ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে রয়েছে রেস পোর্টফোলিও অ্যান্ড ইস্যু ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড।
অডিটর হিসেবে রয়েছে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হওয়া আর্টিসান চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস। ভুয়া অডিটের জন্য এর আগেও আর্টিসানকে সতর্ক করেছিল বিএসইসি।
এছাড়া মূল্যায়ন প্রতিষ্ঠানও সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নিষিদ্ধ হওয়া মাহফেল হক অ্যান্ড কোং। কোম্পানিটি ৪ কোটি ৩৫ লাখ ৪৮ হাজার ৭৮টি শেয়ার, বাজারে ছাড়তে চায়। এই প্রক্রিয়ায় ৬৫ টাকা দরে প্রাথমিকভাবে ২৮৩ কোটি ৬ লাখ টাকা নেয়ার প্রস্তাব করেছে।
এদিকে অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে, কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন। এক বছরে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১শ’ গুণ বেড়েছে। চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ৮৭ কোটি ৯ লাখ ৬২ হাজার।
আর পরিশোধিত মূলধন দাঁড়িয়েছে ৮৭০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল মাত্র ৮ কোটি ৮৩ লাখ।
পাঁচ বছর আগে পরিশোধিত মূলধন ছিল মাত্র ১ কোটি টাকা। কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের মূল্য প্রস্তাব করা হয়েছে ৬৫ টাকা। এ হিসাবে কোম্পানির সবগুলো শেয়ারের মোট মূল্য দাঁড়ায় ৫ হাজার ৬৬১ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
কোম্পানির সম্পদ বাড়ানোর ক্ষেত্রে নজিরবিহীন জালিয়াতির তথ্য পাওয়া গেছে। চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত কোম্পানির মোট সম্পদ দেখানো হয়েছে ৭ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। ৫ বছর আগে যা ছিল ৩ হাজার ৪১৫ কোটি টাকা।
এ হিসাবে ৫ বছরে সম্পদ বেড়েছে ১২৬ শতাংশ। কোম্পানির মোট সম্পদের মধ্যে হোটেলটির ভবনের দাম দেখানো হয়েছে ৩ হাজার ৭৫৭ কোটি টাকা। ৯৫ শতাংশ বা ৩ বিঘা জমির ওপর ১০ তলা এই ভবনটিতে ৩০৪টি রুম রয়েছে।
এক্ষেত্রে প্রতিটি রুমের দাম পড়েছে ১২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এ হিসাবে প্রতিটি রুমের খরচ ১৪ লাখ ৫৪ হাজার ডলার।
কিন্তু বিশ্ববিখ্যাত ওয়েবসাইট ফিক্সার ডটকমের তথ্য অনুসারে ইউরোপে ফাইভ স্টার হোটেলের প্রতিটি রুমের নির্মাণ ব্যয় ৬ লাখ ৪ হাজার ২শ’ ডলার, ভারতে ৩ লাখ ১৮ হাজার ২শ’ ডলার।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আরেক ওয়েবসাইট কোরা ডটকমের তথ্য অনুসারে ম্যারিয়টসের প্রতিটি রুমের নির্মাণ ব্যয় সর্বোচ্চ ৩ লাখ ডলার। হিলটন ফ্রান্সিসের ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার।
অন্যদিকে লা মেরিডিয়ানের পাশেই ৪ বিঘা জমির ওপর ১৪ তলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক বিল্ডিং করেছে ডিএসই। এই বিল্ডিংয়ের মূল্য ধরা হয়েছে ৬শ’ কোটি টাকা।
অর্থাৎ আয়তনে ছোট, উচ্চতায় কম এবং তুলনামূলক নিুমানের নির্মাণ কাঠামো হওয়ার পরও লা মেরিডিয়ানের দাম ডিএসইর চেয়ে সাড়ে ৬ গুণ বেশি।
এছাড়াও বসুন্ধরা এলাকায় ১ দশমিক ৪৯ একর জমির ওপর নির্মিত লা মেরিডিয়ানের প্রকল্পের মূল্য দেখানো হয়েছে ২৮৪ কোটি টাকা, ভালুকায় ২৩ একর জমির ওপর প্রজেক্টের মূল্য ৫৫০ কোটি, মুসলিম লাক্সারী কালেকশন প্রকল্পের মূল্য ৫১ কোটি, কর্পোরেট অফিসের মূল্য ১০৪ কোটি, ২৭ একর জমির ওপর ভালুকায় দ্বিতীয় প্রকল্পের মূল্য ৯৮৩ কোটি, নোয়াখালী সুবর্ণচরে ১২৪ একর জমির প্রকল্পের মূল্য ৩৮১ কোটি, দিয়াবাড়ী উত্তরা প্রকল্পের মূল্য ৪২৪ কোটি, বিরুলিয়া প্রকল্পের মূল্য ৩২১ কোটি এবং ভালুকায় আরেকটি প্রকল্পের মূল্য দেখানো হয়েছে ২০৬ কোটি টাকা।
শেয়ারবাজারে বেসরকারি কোনো কোম্পানি সরাসরি তালিকাভুক্তির অনুমোদন নেই। এই কারণে বেসরকারি কোম্পানিকে সরকারি দেখিয়ে তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে একটি মহল।
এক্ষেত্রে সরকারি ব্যাংকগুলোর কাছে ২৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ প্লেসমেন্ট শেয়ার রয়েছে। এই শেয়ারকে সরকারের মালিকানা হিসাবে দেখিয়ে, প্রতিষ্ঠানটিকে সরকারি কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়েছে।
এক্ষেত্রে বেস্ট হোল্ডিংয়ের মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তাদের ৫২ দশমিক ০১ শতাংশ এবং প্রাইভেট প্লেসমেন্ট ৪৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মধ্যেও আবার সরকারি ব্যাংকগুলোর ২৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ। স্টক এক্সচেঞ্জে দেয়া কোম্পানির প্রসপেক্টাস অনুসারে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন আহমেদ ভুঁইয়ার কাছে ২৪ কোটি ৩৩ লাখ শেয়ার রয়েছে।
শতকরা হিসাবে যা প্রায় ২৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এছাড়া ক্যাপিটাল বনানী লিমিটেড ১৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং বেস্ট সার্ভিস লিমিটেডের ৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
এছাড়া যাদের নামে শেয়ার এবং প্লেসমেন্ট শেয়ার রয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম এসপিভি ফান্ড ২ কোটি ৪৫ লাখ ৬৭ হাজার ১৫০টি শেয়ার।
যা ওই প্রতিষ্ঠানের মোট শেয়ারের ২ দশমিক ৮২ শতাংশ। উম্মে কুলসুম ২ কোটি ৪৫ লাখ, মাল্টি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড সার্ভিস ২ কোটি ৫১ লাখ ৩৬ হাজার ৪৩৫।
কোম্পানির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ ২ কোটি ৩১ লাখ ১টি, আফ্রা বেগম ১ কোটি ৯২ লাখ শেয়ার নিয়েছেন। ফাস্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড ১ কোটি ৭২ লাখ ২৩ হাজার ৩৭৪, আফ্রা আনজুম (ইউবিও) ১ কোটি ১০ লাখ, টেকনো ক্যানভাস লিমিটেড ৭৬ লাখ ৯২ হাজার ৪শ’ শেয়ার নেন।
হাসান আহমেদ ৭০ লাখ, উম্মে কুলসুম ৫৮ লাখ ৫০ হাজার, মোহাম্মাদুল মোশাও ৫৩ লাখ ৮৪ হাজার ৬১৬, মোহাম্মদ ওবায়দুল হক ৫৩ লাখ ৮৪ হাজার ৬১৬ নিয়েছেন।
সাদমান হাসান খান ৫২ লাখ ৩০ হাজার ৭৭০, পপুলার লাইফ ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড ৩৩ লাখ ৮৫ হাজার ৭৯২, পিএইচপি ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ৩০ লাখ ৯১ হাজার ৩৭৫ আছে। রিপা আক্তার ২৩ লাখ ৭ হাজার ৬৯৩, গুলশানা আরা মিয়া ১৫ লাখ ৩৮ হাজার ৪৬২, কাজী শাহ আলমের ১০ লাখ শেয়ার আছে। নিয়াজ আবরার খান ৯ লাখ ২৩ হাজার ৭৭, স্টেলা পাওয়ার লিমিটেড ৭ লাখ ৬৯ হাজার ২৩১, ফারাবী এনএ রহমান ৫ লাখ শেয়ার।
ফুয়াদ এনএ রহমান ৫ লাখ, লায়লা রহমান ৩ লাখ ৭ হাজার ৭শ, সৈয়দ ইকবাল হোসেন ৩ লাখ, মোহাম্মদ আরফাদুর রহমান ২ লাখ শেয়ার নিয়েছেন। মো. শফিকুর রহমান ১ লাখ ৫৪ হাজার, এসএম খুরশিদ-উল-আলম ১ লাখ, মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ১ লাখ নিয়েছেন।
মো. শামসুল আলম ১ লাখ, সুজানা সামরিন ১ লাখ, ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজির ১ লাখ, তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজির ১ লাখ, তাসরিন মুজিব ১ লাখ এবং আফরোজা খান ১ লাখ প্লেসমেন্ট শেয়ার নিয়েছেন।
ব্যাংকগুলোর কেনা অনুসারে প্রতিটি শেয়ারের দাম ৬৫ টাকা হিসাবে ১ লাখ শেয়ারের বাজারমূল্য ৬৫ লাখ টাকা। এছাড়া ৮টি ব্যাংকের মিউচুয়াল ফান্ড এক কোটি ৫১ লাখ প্লেসমেন্ট শেয়ার নিয়েছে।
জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, কোম্পানিটির সরাসরি তালিকাভুক্তি বিএসইসি আটকে দিয়েছে।
এটি ইতিবাচক। তিনি বলেন, করোনার কারণে এমনিতেই হোটেল ব্যবসা ভালো নয়। মানুষ ঘর থেকে বের হয় না। আন্তর্জাতিকভাবে ভ্রমণ মোটামুটি নিষিদ্ধ।
এ অবস্থায় এ ধরনের একটি হোটেল শেয়ারবাজারে নিয়ে আসার যৌক্তিকতা কী আছে তা বিবেচনায় নেয়া উচিত। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপারে সতর্কভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এক্ষেত্রে নিরীক্ষা প্রতিবেদন সঠিক না হলে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
এ বিষয় নিয়ে কথা বলতে লা মেরিডিয়ানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন আহমেদ ভুঁইয়ার সঙ্গে তার মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কোম্পানির এক কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার রাতে বলেন, এখন তিনি মোবাইল বন্ধ রেখেছেন। কোনো মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলছেন না।
কোম্পানির পক্ষ থেকেও কোনো কথা বলা হচ্ছে না। তবে আপনার রিপোটের্র বিষয়টি তাকে জানানো হবে। দেখা যাক কিছু বলে কিনা। কিন্তু এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো সাড়া মেলেনি।
সূত্রঃ যুগান্তর
আডি/ ২৫ ডিসেম্বর