জাতীয়

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নথি জালিয়াতির মামলা এবার তদন্ত করবে দুদক

ঢাকা, ২৪ ডিসেম্বর- প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নথি বের করে জালিয়াতির মাধ্যমে তার (প্রধানমন্ত্রীর) সিদ্ধান্ত বদলে দেয়ার অভিযোগে করা মামলাটির তদন্তভার দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) দিয়েছেন আদালত।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা তরিকুল ইসলাম মমিনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় চার্জশিট দাখিল করেছিল পুলিশ। কিন্তু মামলার অপরাধের সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা ও ধারা দুদকের তফসিলভুক্ত হওয়ায় আদালত তদন্তের জন্য দুদককে নির্দেশ দেন।

বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুদকের সাধারণ নিবন্ধন শাখা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সাধারণ নিবন্ধন শাখা থেকে জানা যায়, এজাহারে উল্লিখিত আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টিক জাল বা টেম্পারিং করা এবং এটা খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করার অপরাধে আসামিদের বিরুদ্ধে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলা করা হয়। এরপর তেজগাঁও থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। কিন্তু মামলার অপরাধ এবং ধারা দুর্নীতি দমন কমিশনের তফসিলভুক্ত হওয়ার পরও তা ভুলবশত থানা পুলিশ তদন্ত করে।

গত ১৩ অক্টোবর বিষয়টি আদালতের গোচরীভূত হওয়ার পর দুদকের বিধিমালা ২০০৭ এর ৪ ধারা বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। সর্বশেষ গত ৬ ডিসেম্বর আদেশে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত থেকে দুদকের জিআর শাখায় মামলাটির নথি পাঠানো হয়।

আদেশে বলা হয়, এ মামলার অপরাধের সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা রয়েছে এবং মামলার ধারা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর তফসিলভুক্ত ও দুদক কর্তৃক তদন্তযোগ্য।

গত ৮ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ মামলাটি দুদককে তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী বছরের ৪ জানুয়ারি মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।

গত ৫ মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মোহাম্মদ রফিকুল আলম বাদী হয়ে ফাতেমাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা করেন।

এরপর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি (বহিষ্কৃত) তরিকুল ইসলাম মমিনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তেজগাঁও থানা পুলিশের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন।

চার্জশিটভুক্ত ছয় আসামিরা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি (বহিষ্কৃত) তরিকুল ইসলাম মমিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মচারী ফাতেমা খাতুন, নাজিম উদ্দীন, রুবেল, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফরহাদ হোসেন ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আব্দুস সালাম আজাদ।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ পদে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এনামুল হক, বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফ এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নাম প্রস্তাব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নথি পাঠানো হয়।

আরও পড়ুন : ঢাকার সীমান্তে হবে চারটি আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল

এই নথি প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করার পর তিনি অধ্যাপক ড. এনামুল হকের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন। পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নথিটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর প্রস্তুতি পর্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমার কাছে এলে তিনি এম আবদুস সালাম আজাদ অনুমোদন পাননি বলে ফোনে তরিকুলকে জানিয়ে দেন।

এরপরই তরিকুলের পরিকল্পনা অনুযায়ী নথিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কৌশলে বের করে ফরহাদ নামে একজনের হাতে তুলে দেন ফাতেমা। এই নথি হস্তান্তরের আগে ফাতেমা ১০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে গ্রহণ করেন এবং হস্তান্তরের পরে দ্বিতীয় দফায় ১০ হাজার টাকা তার ছেলের বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নেন।

সূত্রঃ জাগো নিউজ
আডি/ ২৪ ডিসেম্বর

Back to top button