জঙ্গি আস্তানা: গরু বেচে পরিবারসহ বাড়ি ছাড়েন সাতক্ষীরার শরিফুল
সাতক্ষীরা, ১৩ আগস্ট – মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থেকে পুলিশের সিটিটিসি ইউনিটের অভিযানে জঙ্গি সন্দেহে আটক ১০ জনের মধ্যে তিনজনই সাতক্ষীরা জেলার বাসিন্দা। তারা সপরিবারে ২৫ জুলাই বাড়ি ছাড়েন।
শনিবার (১২ আগস্ট) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সিটিটিসি-এর প্রধান মো. আসাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জঙ্গি সন্দেহে আটক সাতক্ষীরার তিনজন হলেন- জেলার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ নলতা গ্রামের শরিফুল মোড়ল (৪০), তার স্ত্রী আমেনা বেগম (৪০) ও মেয়ে হাবিবা বিনতে শরিফুল (২০)।
শরিফুল মোড়ল একই এলাকার মৃত ওমর আলীর ছেলে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, শরিফুল বেশ কিছুদিন আগেও সাইকেল মিস্ত্রী হিসেবে কাজ করতেন। হঠাৎ করেই তিনি স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে বাড়ি থেকে চলে যান। এর আগে তিনি তার পালিত একটি গরু ও বাছুর স্থানীয় এক প্রতিবেশীর কাছে বিক্রি করেন।
এ ব্যাপারে শরিফুল মোড়লের মা বৃদ্ধা ছবিরন বিবি জানান, তার তিন ছেলে-মেয়ে। এদের মধ্যে শরিফুল সবার ছোট। কয়েকদিন ধরে সে নিখোঁজ রয়েছে। ছেলে কোথায় গেছে তা তিনি জানেন না। ধার দেনা থাকায় দুটি গরু বিক্রি করতে হয়েছে তার।
প্রতিবেশী আব্দুল খালেক বলেন, গত ২৪ জুলাই সোমবার শরিফুল তার কাছে বেশ ভালো দামে একটি বাছুরসহ গাভী বিক্রি করে। এই টাকা তার জরুরি কাজে লাগবে বলে জানায়। পরদিন ২৫ জুলাই মঙ্গলবার শরিফুল তার স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে বাড়ি থেকে চলে যায়। এসময় সে সিরাজগঞ্জে যাচ্ছে বলে তাকে অবগত করে।
শরিফুলের স্বজন মো. মোস্তাফিজুর রহমান তিতু জানান, দক্ষিণ নলতা গ্রামে তালা-পাইকগাছা সড়কের ধারে সাইকেল মেরামতের কাজ করতেন শরিফুল। সেখানে তার একটি সাইকেল ও রিকশাভ্যান সারাইয়ের দোকানও আছে।
তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমরা পরিবারটির বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (১১ আগস্ট) রাত ৮টা থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থানার কর্মধার এলাকায় পূর্ব টাট্টিউলী গ্রামের সীমান্তবর্তী একটি দুর্গম পাহাড়ে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে অভিযান চালায় সিটিটিসি। এতে নেতৃত্ব দেন সহকারী পুলিশ কমিশনার সফিক। এসময় সেখান থেকে চারজন পুরুষ ও ছয়জন নারীসহ মোট ১০ জনকে জঙ্গি সন্দেহে আটক করা হয়। এদের সঙ্গে তিনটি শিশুকেও উদ্ধার করা হয়েছে।
সিটিটিসি জানায়, আটকরা সবাই ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলা’ নাম এক নতুন জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। প্রায় একমাস আগে ওই এলাকায় জঙ্গি সংগঠনটি জমি কিনে বসবাস করতে শুরু করে। সেখান থেকে গহীন জঙ্গলে গিয়ে জঙ্গিদের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। তাদের কাছ থেকে আড়াই কেজি বিস্ফোরক, ৫০টি ডেটোনেটর ও অস্ত্রসহ বেশকিছু জিহাদি বই জব্দ করা হয়েছে। অভিযানটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন হিল সাইড’।
সূত্র: বাংলানিউজ
আইএ/ ১৩ আগস্ট ২০২৩