মিডিয়া

নাদিমের মাথা ইট দিয়ে থেঁতলে দেন চেয়ারম্যানপুত্র ফয়সাল

জামালপুর, ১৬ জুন – নিহত সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করেন ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ আলম বাবুর ছেলে ফয়সাল। শুক্রবার (১৬ জুন) এমনই অভিযোগ করেছেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সাংবাদিক মুজাহিদ বাবু।

একই অভিযোগ করেছেন নিহত সাংবাদিক নাদিমের ছেলে আব্দুল্লাহ ও মেয়ে জান্নাত।
প্রতক্ষ্যদর্শী সহকর্মী আল মুজাহিদ বাবু বলেন, বকশীগঞ্জ কলেজের পাশে অফিস থেকে কাজ শেষে রাত ১০টার দিকে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম আমি আর গোলাম রাব্বানী নাদিম। পথে পাথাটিয়ায় পৌঁছালে অতর্কিত সামনে থেকে আঘাত করে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেওয়া হয় নাদিমকে। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ১০-১২ জন সড়ক থেকে তাকে মারধর করতে করতে টেনে-হিঁচড়ে এক অন্ধকার গলিতে নিয়ে যান। সেখানে এলোপাতাড়ি আঘাত করা হয় তাকে।

তখন মুজাহিদ তাদের আটকাতে গেলে তাকেও হত্যার হুমকি দেন অস্ত্রধারীরা। মুজাহিদ বলেন, লুঙ্গি পরা একটি ছেলে এক পর্যায়ে মারধর করে আমাকে। চেয়ারম্যানের লোকজন চাচ্ছিল সিসিটিভির আওতার বাইরে নাদিমকে নিয়ে যেতে। যে গলিতে নাদিমকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো সেখানে ছোট একটি ইটের দেওয়াল ছিল। ইটের দেওয়ালের পেছনে চেয়ারম্যান মাহমুদ আলম বাবু দাঁড়িয়েছিলেন। আর তার ছেলে ফয়সাল সেই ইটের দেয়াল লাথি দিয়ে ভেঙে একটি ইট হাতে নেন এবং সেই ইট দিয়ে নাদিমের মাথায় আঘাত করেন।

এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে এরকম ছয়জনকে আটক করা হয়েছে।

আটকদের মধ্যে চেয়ারম্যান বাবু কিংবা তার ছেলে ফয়সাল আছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, তাদের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়নি। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আর এখনও মামলা হয়নি, মামলা হলে আসামিদের আটকের প্রশ্ন আসবে।

বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আজিজুর রহমান বলেন, সাংবাদিক নাদিমের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। ঘটনার পর যখন তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়, তখন আমি হাসপাতালে ছিলাম না। আমাদের জরুরি বিভাগের ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, তিনি (নাদিম) অচেতন ছিলেন। পরে সকালে গিয়ে তার অবস্থা সিরিয়াস দেখে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিক্যালে রেফার করি। এ সময় তার কপালে ক্ষত ছিল।

বুধবার (১৪ জুন) রাতে বাড়ি ফেরার পথে বকশীগঞ্জের পাথাটিয়ায় পৌঁছালে অস্ত্রধারী ১০ থেকে ১২ জন দুর্বৃত্ত নাদিমকে পিটিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

এরপর রাত ১২টায় সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে তিনি মারা যান।

সূত্র: বাংলানিউজ
এম ইউ/১৬ জুন ২০২৩

Back to top button