ভারতে খুচরা মূল্যস্ফীতি আরও কমে বাংলাদেশের অর্ধেকে দাঁড়িয়েছে
নয়াদিল্লি, ১৪ জুন – রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও মূল্যস্ফীতি বেড়েছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম কমে আসায় দেশটিতে আবারও কমতে শুরু করেছে মূল্যস্ফীতি। তারই ধারাবাহিকতায় গত মে মাসে মূল্যস্ফীতির হার কমে দুই বছরে সর্বনিম্ন হয়েছে। সেই সঙ্গে গত মাসে ভারতের শিল্পোৎপাদনও বেড়েছে, অর্থাৎ উৎপাদন খাত চাঙ্গা হয়েছে।
ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মে মাসের বার্ষিক হিসাবে ভোক্তা মূল্যসূচক বা সিপিআইয়ে ভারতের খুচরা মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৪.৩ শতাংশ, এপ্রিলে যা ছিল ৪.৭ শতাংশ। ভারতের ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্যাল অফিস (এনএসও) জানিয়েছে, মে মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ২.৯ শতাংশ, আগের মাসে যা ছিল ৩.৮ শতাংশ। মে মাসে ভারতের গ্রামাঞ্চলের খুচরা মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৪.২ শতাংশ, শহরাঞ্চলের ক্ষেত্রে যা ৪.৩ শতাংশ। এ নিয়ে টানা চার মাস ভারতে খুচরা মূল্যস্ফীতির হার কমল, যদিও তা রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) নির্ধারিত সহনশীল সীমার উচ্চতম হারের চেয়ে সামান্য বেশি।
ভারতে টানা কয়েক মাস ধরে মূল্যস্ফীতির হার কমলেও বাংলাদেশে অবশ্য তা বাড়ছে। গত মে মাসে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতির হার ভারতের খুচরা মূল্যস্ফীতির হারের দ্বিগুণেরও বেশি। মে মাসে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৯৮ শতাংশ, যা গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
মে মাসে ভারতে অনেক পণ্যেরই দাম কমেছে, বিশেষ করে টমেটোর।
সেই সঙ্গে পরিশোধিত তেল, আটা, গম, এলপিজি ও কেরোসিনের দাম কমেছে। যে ১০টি পণ্যের দাম কমেছে তার মধ্যে ৯টি পণ্যই খাদ্য ও তেলসংক্রান্ত, আরেকটি যোগাযোগ ও যাতায়াতসংশ্লিষ্ট।
সম্প্রতি ঘোষিত ভারতের মুদ্রানীতিতে আরবিআই নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রেখেছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস মূল্যস্ফীতির হার হ্রাসের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছিলেন। তবে তার পরও তিনি সতর্কতা হিসেবে বলেছিলেন, মূল্যস্ফীতির দিকে সব সময় নজর রাখতে হবে।
এ ছাড়া আবহাওয়ার দিকেও নজর রাখতে হবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। আবহাওয়ার চক্রে এ বছর এল নিনোর সময়, অর্থাৎ খরা হতে পারে। সে কারণে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর দিকে বিশেষ নজর রাখা দরকার বলে তাঁরা মনে করেন। তবে মূল্যস্ফীতির হার আরো সহনীয় হলে চলতি বছরের আগস্টে আরবিআই নীতি সুদহার কমাতেও পারে। ভারতের অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, সময়মতো শস্য বিতরণ খুবই জরুরি। বিতরণ ঠিকঠাক হচ্ছে কি না, তা দেখেই বোঝা যায়, ভবিষ্যতে মূল্যস্ফীতির গতি কোন দিকে যাবে। তবে ভারতে রবিশস্য বাজারে আসতে শুরু করেছে, সে কারণে দানাদার খাদ্য ও ডালের দাম আগামী দুই-তিন মাসে কমতে পারে।
সূত্র: কালের কন্ঠ
আইএ/ ১৪ জুন ২০২৩