ঢালিউড

নায়িকা সুজাতাকে জমিসহ বাড়ি দিলো জেলা প্রশাসন

ঢাকা, ১৩ জুন – কিংবদন্তি চলচ্চিত্র অভিনেত্রী সুজাতা আজিমের পাশে দাঁড়িয়েছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। ওয়ারী মৌজায় দখলমুক্ত হওয়া জমি তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হলো।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) দুপুরে জমিসহ একটি বাড়ির চাবি সুজাতাকে বুঝিয়ে দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. শিবলী সাদিক, জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সুজাতার পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, গুণী এই অভিনেত্রী আজ অনেকটা অসহায়। বনশ্রীর একটি ভাড়া বাসায় অসচ্ছলতার সঙ্গে দিনযাপন করছিলেন। বিষয়টি ঢাকার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের নজরে এলে, তিনি অভিনেত্রী সুজাতা আজিমের আবাসনের জন্য একটি উপযুক্ত বাড়ি খুঁজে বের করার নির্দেশনা দেন। তার নির্দেশনার আলোকে ওয়ারীর লালচান মকিম লেনের (বাসা নং ৪৩, ৪৩/২, ৪৩/৩) উক্ত সম্পত্তি অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে উদ্ধার করে ঢাকা জেলা প্রশাসক। এরপর তাকে বাড়িটি হস্তান্তর করা হয়।

এ সময় অভিনেত্রী সুজাতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ঢাকা জেলা প্রশাসনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

বাড়ির চাবি হস্তান্তরকালে ঢাকার জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান বলেন, গুণী ব‌্যক্তি যারা আর্থিকভাবে অসচ্ছল, তাদের আবাসনের জন্য ঢাকা জেলা প্রশাসন কাজ করছে। অন্যান্য সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও জনকল্যাণমুখী সংগঠনসমূহের জন্য উদ্ধারকৃত খাস জমি বা অর্পিত সম্পত্তি পরবর্তীতে বরাদ্দ দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ১৯৬৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘রূপবান’ চলচ্চিত্রে মাত্র বারো বছর বয়সী নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি পান সুজাতার। তখন তার নাম ছিল তন্দ্রা মজুমদার। পরিচালক সালাহউদ্দিন এই তন্দ্রা মজুমদারের নাম রাখেন সুজাতা। আজও যিনি ‘রূপবান’ হয়েই আছেন দর্শকের হৃদয়ে। তবে চলচ্চিত্র তার অভিষেক ঘটে ১৯৬৩ সালে সালাউদ্দিন পরিচালিত ‘ধারাপাত’র মাধ্যমে।

১৯৭৮ সাল পর্যন্ত অসংখ্য হিট চলচ্চিত্রের নায়িকা সুজাতা। মাঝে এক যুগেরও বেশি সময় দূরে ছিলেন বড় পর্দা থেকে। তবে ফের প্রাণের টানে ফিরেও আসেন অভিনয়ে। নায়িকা হিসেবে সুজাতার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- ‘রূপবান’, ‘ডাক বাবু’, ‘জরিনা সুন্দরী’, ‘অপরাজেয়’, ‘আগুন নিয়ে খেলা’, ‘কাঞ্চনমালা’, ‘আলিবাবা’, ‘বেঈমান’, ‘অনেক প্রেম অনেক জ্বালা’, ‘প্রতিনিধি’ ইত্যাদি।

১৯৭৭ সালে সুজাতা নায়িকা হিসেবে সর্বশেষ রহিম নেওয়াজ পরিচালিত ‘রাতের কলি’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৮৮ সালে ‘অর্পণ’ সিনেমা পরিচালনা করে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন সুজাতা। ছোট পর্দায়ও অভিনয় করতে দেখা যায় তাকে।

চলচ্চিত্রশিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য ৪২তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কারে ভূষিত করা হয় সুজাতাকে। এ ছাড়া শিল্পকলার চলচ্চিত্র শাখায় অবদানের জন্য ২০২১ সালে তাকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।

এম ইউ/১৩ জুন ২০২৩

Back to top button