কার্যালয় তালাবদ্ধ, বারান্দায় অফিস করলেন নবাগত অধ্যক্ষ
জামালপুর, ১২ জুন – বারান্দায় বসে অফিস করলেন ইসলামপুর সরকারী কলেজের নবাগত অধ্যক্ষ ড.ছদরুদ্দীন আহমদ। অধ্যক্ষের অফিস কক্ষে তালা লাগানো থাকায় অনুষ্ঠানিকভাবে যোগদানও করতে পারেননি তিনি। অধ্যক্ষের কক্ষে তালা লাগিয়ে চাবি নিয়ে পালিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ (উপাধ্যক্ষ) ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
জানা গেছে, গত ৬ জুন সরকারি এক প্রজ্ঞাপনে শিক্ষা ক্যাডারের ১৪তম বিসিএস এর নিয়োগ প্রাপ্ত সরকারি মুজিব কলেজের অধ্যক্ষ ড. ছদরুদ্দীন আহমদকে সরকারি ইসলামপুর কলেজে যোগদানের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। গত ৮ জুন বৃহস্পতিবার যথা সময়ে অধ্যক্ষ ড. ছদরুদ্দীন আহমদ সরকারি ইসলামপুর কলেজে আসলে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন শিক্ষক কর্মচারীরা। তবে ওই অনুষ্ঠানে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ (উপাধ্যক্ষ) ফরিদ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন না বলে জানা গেছে।
রোববার (১১ জুন) অধ্যক্ষ ড. ছদরুদ্দীন আহমদ কলেজে আসলে অধ্যক্ষের কক্ষ বন্ধ থাকায় বারান্দায় বসে অফিসিয়াল কাজ পরিচালনা করেন তিনি। এসময় অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ উভয়ের অফিস কক্ষ তালাবদ্ধ ছিলো।
সরেজমিনে দেখা যায়, অধ্যক্ষ বারান্দায় বসে অফিসিয়ালি কাজ পরিচালনা করছেন। আর শিক্ষক-কর্মচারীরা বিভিন্ন স্থানে ঝটলাবেঁধে দাঁড়িয়ে আছেন।
জানা যায়, যমুনা- ব্রহ্মপুত্র ভাঙন কবলিত ইসলামপুরের মানুষের সন্তানদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে এলাকার কতিপয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গ ১৯৭০ সালে ইসলামপুর ডিগ্রী কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ঐতিহ্যবাহী এ কলেজেটিকে ৮ ই আগস্ট ২০১৮ সালে সরকারি করণ করা হয়। বর্তমানে কলেজে অনার্সের ১২টি বিভাগ, মাস্টার্সের ৪ টি বিভাগসহ ডিগ্রী, এইচএসসি, কারিগরি এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাড়ে ৮ হাজার শিক্ষার্থী ও ১২৮ জন শিক্ষক ৫৭জন কর্মচারী রয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, প্রায় বিশ বছর যাবৎ ঐতিহ্যবাহী কলেজটি চলছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে। এর আগে সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর সুলতান সালাউদ্দিন আহমেদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে তিনি আদালতের নির্দেশে একাধিক বার কলেজে যোগদান করতে এসে বার বার বাঁধা প্রাপ্ত হন। এলাকাবাসীর অভিযোগ সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী নবাগত অধ্যক্ষ ড. ছদরুদ্দীন আহমদের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটছে।
ওই কলেজে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব রাজা জানান, আমার এক আত্মীয় অসুস্থ থাকায় আমি কর্মস্থলের বাহিরে আছি।
এ ব্যাপারে নবাগত অধ্যক্ষ ড. ছদরুদ্দিন আহমদ বলেন, সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী অধ্যক্ষ হিসাবে কলেজে যোগদান করেছি। আজ আমি অফিস করতে এসে দেখি অধ্যক্ষের কক্ষের তালা ঝুলছে। স্টাফদের নিকট জানতে পারলাম তালার চাবি না কি হারিয়েছে। তাই আমি বাধ্য হয়েই বারান্দায় বসে অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের উত্তরে নবাগত অধ্যক্ষ আরও জানান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকায় এবং প্রশাসন ছাড়া অফিস কক্ষের তালা ভেঙে আমি অফিস করতে পারি না।
সরকারি ইসলামপুরের কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সরকারি ভাবে অধ্যক্ষ যোগাদানের অফিসিয়ালি কোন চিঠি পায়নি। অধ্যক্ষের অফিসকক্ষ বন্ধের বিষয়ে তিনি জানান, আমি যেহেতু কর্মস্থলে নেই সেক্ষেত্রে অফিস কক্ষ বন্ধই থাকবে।
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ১২ জুন ২০২৩