খাটের নীচে মরদেহ রেখেই বাবা ও ৪ মেয়ের ছয়দিন বসবাস
নরসিংদী, ১১ জুন – এক নারীর মৃত্যুর পর ছয়দিন ধরে খাটের নিচে মরদেহ রেখে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিলেন তার স্বামী ও ৪ মেয়ে। পরে লাশের দুর্গন্ধ বের হলে পাড়া-প্রতিবেশি পুলিশে খবর দেয়। এমন ঘটনা ঘটেছে নরসিংদীর মনোহরদী পৌর এলাকায়।
জানা গেছে, ওই ব্যক্তির নাম মোক্তার উদ্দীন তালুকদার। তিনি সাবেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার ৪ মেয়ে মৃত মায়ের লাশ খাটের নীচে রেখে ৬ দিন বাড়িতে বসবাস করছিলেন। পরে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ পাড়া-প্রতিবেশি পুলিশে ফোন করলে মায়ের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এসময় বাবাসহ ৪ মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ থানায় নিয়ে গেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, মনোহরদী পৌর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার নিজেদের বাড়িতে বসবাস করতেন মোক্তার উদ্দীন তালুকদার (৬৮), তার স্ত্রী নাজমা ও ৪ মেয়ে। গত সোমবার ভোরে ওই নারী মারা যান। নাজমা মৃত্যুর আগে তার পরিবারের সবাইকে বলে যান, তার মৃত্যুর ৩/৪ দিন পর তিনি পুনরুজ্জীবিত হবেন। এক পীরের কথায় বিশ্বাস করে পরিবারটি তার লাশ বসত-ঘরের খাটের নীচে রেখে দিন কাটাচ্ছিলেন। এ ঘটনা প্রতিবেশি ও আত্মীয়-স্বজনদের কেউ আঁচ করতে পারেননি।
পুলিশ শনিবার মধ্যরাতে বাড়িতে হানা দিয়ে দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে খাটের নীচ থেকে নাজমার (৫৬) লাশ উদ্ধার করে। এ সময় বাবা অর্জুনচর গ্রামের মোক্তার উদ্দীন তালুকদার ও তার ৪ মেয়ে ঘরের ভেতরই অবস্থান করছিলেন। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের সবাইকে থানায় নিয়ে গেছে। বিষয়টির রহস্য উদঘাটনে পুলিশি তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
মনোহরদী থানার ওসি ফরিদ উদ্দীন জানান, পরিবারটি এক পীরের মুরীদ বলে জানিয়েছে। তারা প্রতিদিন ভোর ৩টা থেকে ৫-৬টা পর্যন্ত জিকির করতেন। জিকিররত অবস্থায় নাজমার মৃত্যু ঘটে বলে তারা পুলিশকে জানিয়েছে। পোস্টমর্টেমের জন্য লাশ নরসিংদী পাঠনো হয়েছে। পোস্টমর্টেম ও পরবর্তী তদন্তে বিস্তারিত জানা যেতে পারে।
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
এম ইউ/১১ জুন ২০২৩