দক্ষিণ এশিয়া

২০ মামলায় হাজিরা দিয়ে বিশ্বরেকর্ড ভাঙলেন ইমরান খান

ইসলামাবাদ, ০৯ জুন – পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেট অধিনায়ক ইমরান খান তার বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে অসংখ্য রেকর্ড গড়েছেন। আর এখন দেশটির সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী আরেকটি ‘বিশ্ব রেকর্ড’ ভাঙলেন বলে মনে হচ্ছে। টুইটারে ইমরান খান বলেছেন, তিনি প্রায় ১৫০টি মামলার মুখোমুখি। প্রত্যেকটিতে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। খবর: খালিজ টাইমস

 

খুনের একটি মামলায় বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকে তিনি জামিন পান। তার আইনজীবী বলেন, পরবর্তী ১৪ দিনের জন্য এই অভিযোগে তাকে ফের গ্রেপ্তার করা যাবে না। এই জামিন পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১১টায় ইমরান খান টুইটারে একটি টুইট করেছেন। সেখানে তার বিরুদ্ধে গাদা গাদা নতুন মামলা নিয়ে অনুভূতি প্রকাশ করেন।

তিনি লেখেন, ‘আজ আমি বিশ্ব রেকর্ড ভেঙেছি, তবে তা ক্রিকেটে নয়। ২০টি মামলায় হাজিরা দিয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছি। হত্যা থেকে সন্ত্রাস, রাষ্ট্রদ্রোহ পর্যন্ত মামলা করা হয়েছে আসার বিরুদ্ধে।’

তিনি লেখেন, ‘আশ্চর্যজনকভাবে যখন আমি এনএবি কারাগারে বন্দি ছিলাম, তখনও আমার বিরুদ্ধে আরও ৯টি ফৌজদারি মামলা করা হয়েছিল।’

দীর্ঘ টুইটে তিনি লেখেন, ‘সর্বদা আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি- আমার বিরুদ্ধে অভিযুক্ত ১৫০টি মামলার একটিরও আদালতের শুনানি যাতে মিস না করি তা নিশ্চিত করার জন্য আমি পদে পদে ছুটে চলেছি।’

তিনি আরও লেখেন, ‘এই স্তরের নিপীড়ন কেবল এই সরকারকে সম্পূর্ণভাবে নিন্দিত করেনি, বরং এটা এখন স্পষ্ট যে, এই ফ্যাসিবাদ আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ তারা পিটিআইয়ের কাছে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয় পেয়েছে।’

ইমরান খান লেখেন, ‘বিরোধীদের দমন করার জন্য যেভাবে আইনের অপব্যবহার- এটি দুর্ভাগ্যবশত আমাদের আইনি ব্যবস্থার উপরও একটি ভয়ানক অভিযোগ। মুক্ত ও গণতান্ত্রিক সমাজে একজন নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের এমন লঙ্ঘন অকল্পনীয়।’

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ৯ মে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার অনুসারীদের দ্বারা সহিংস বিক্ষোভের অভিযোগে তিন দিন আটকে রাখা হয়। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন ফৌজদারি মামলায় জামিনে মুক্ত।

তার আইনজীবী গোহর খান বলেন, হত্যা মামলায় জামিন পেতে, নতুন গ্রেপ্তার এড়াতে এবং আরও ডজনেরও বেশি মামলায় জামিনের আবেদন করতে ইমরান খানকে লাহোরের বাড়ি থেকে রাজধানীতে যেতে হচ্ছে।

আরেক আইনজীবী নাঈম হায়দার বলেন, অন্য সব মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন যেগুলোর জন্য তিনি আবেদন করেছিলেন।

৭০ বছর বয়সী সাবেক এ ক্রিকেট তারকা ২০১৮ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তিনি গত বছর অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে দেশটির শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির পর থেকে সামরিক বাহিনী দেশটির সরাসরি শাসন করেছে অথবা বেসামরিক সরকারগুলোকে তত্ত্বাবধান করেছে। সেখানে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব প্রায়ই আদালত পর্যন্ত গড়ায়।

দুর্নীতির অভিযোগে ইমরান খানকে গত মাসে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন। গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে তাঁর সমর্থকদের বিক্ষোভ পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। সামরিক স্থাপনা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে ২২ কোটি মানুষের দেশ পারমাণবিক ক্ষমতাধর পাকিস্তানের স্থিতিশীলতা নিয়ে নতুন উদ্বেগ তৈরি হয়। কারণ দেশটি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়েছে।

ইমরান খানকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার পর থেকে তার বিরুদ্ধে নতুন নতুন মামলা দেওয়া হচ্ছে। বুধবার, একজন আইনজীবীকে হত্যার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের বিচার চেয়ে তার নাম উল্লেখ করে পুলিশ।

সূত্র: সমকাল
আইএ/ ০৯ জুন ২০২৩

Back to top button