ইসলাম

কোরবানির পশুর দুধ পান জায়েজ কি না?

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলার সর্বাধিক প্রিয় আমল হলো কোরবানি। আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তার কৃপা লাভে সামর্থ্যবান মুসলিমরা পশু উৎসর্গ করে থাকেন। আর অন্যসব আমল ও ইবাদতের মতো এগুলোও আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশিত। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হিজরতের পর প্রতিবছর কোরবানি করেছেন।

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, কোরবানির ঈদের দিন মানুষের সব নেক আমলের মধ্যে সর্বাধিক প্রিয় আমল হলো কোরবানি করা। কেয়ামতের ময়দানে জবেহকৃত জন্তু তার শিং, লোম, খুরসহ এসে হাজির হবে। নিশ্চয়ই কোরবানির রক্ত জমিনে পড়ার আগেই আল্লাহ তাআলার কাছে তা কবুল হয়ে যায়। অতএব, তোমরা খুশি মনে আনন্দচিত্তে কোরবানি করো। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১২৬)

কোরবানিতে গুনাহ মাফ

কোরবানি করলে অতীতের সগিরা গুনাহ মাফ হয়। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ফাতিমা (রা.)-কে বলেন, তুমি তোমার কোরবানির জন্তু জবেহর স্থানে উপস্থিত থাকো। কোরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তোমার অতীতের সব গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করবেন।

ফাতিমা (রা.) বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! এই গুনাহ ক্ষমা হওয়ার বিষয়টি আমাদের জন্য বিশেষত, নাকি সব মুসলমানের জন্য? নবীজি বললেন, আমাদের ও সব মুসলমানের গুনাহ ক্ষমা করা হবে। (মুস্তাদরাক হাকিম, হাদিস: ৭৬৩৩)

কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা মূলত মানুষের তাকওয়া-পরহেজগারি পরীক্ষা করেন। বর্ণিত হয়েছে, (মনে রেখো, কোরবানির পশুর) গোশত অথবা রক্ত আল্লাহর কাছে কখনোই পৌঁছায় না; বরং তার কাছে কেবলমাত্র তোমাদের পরহেজগারিই পৌঁছায়। (সূরা হজ, আয়াত: ৩৭)

মহান আল্লাহ তাআলা আরো ইরশাদ করেছেন, (হে রাসূল!) আপনি বলুন- আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন, আমার মরণ (অর্থাৎ আমার সবকিছু) আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের জন্য উৎসর্গিত। (সূরা: আনআম, আয়াত: ১৬২)

কোরবানির পশুর দুধ পান

কোরবানির পশু কেনার পর বা নির্দিষ্ট করার পর তা থেকে উপকৃত হওয়া জায়েজ নেই। যেমন হালচাষ করা, আরোহন করা, পশম কাটা ইত্যাদি। সুতরাং কোরবানির পশু দ্বারা এসব করা যাবে না। যদি করা হয়, তবে পশমের মূল্য, হালচাষের মূল্য ইত্যাদি সদকা করে দিতে হবে। (মুসনাদে আহমদ: ২/১৪৬; নায়লুল আওতার: ৩/১৭২; ইলাউস সুনান: ১৭/২৭৭; কাজিখান: ৩/৩৫৪; আলমগিরি: ৫/৩০০)

কোরবানির পশুর দুধ পান করা যাবে না। যদি জবাইয়ের সময় আসন্ন হয় আর দুধ দোহন না করলে পশুর কষ্ট হবে না বলে মনে হয় তাহলে দোহন করবে না। প্রয়োজনে ওলানে ঠাণ্ডা পানি ছিটিয়ে দেবে বা পশুকে কষ্ট না দিয়ে যেকোনও পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে। এতে দুধের চাপ কমে যাবে।

তবে কেউ যদি দুধ দোহন করে ফেলে তাহলে তা সদকা করে দিতে হবে। নিজে পান করে থাকলে মূল্য সদকা করে দেবে। (মুসনাদে আহমদ: ২/১৪৬, ইলাউস সুনান: ১৭/২৭৭, রদ্দুল মুখতার: ৬/৩২৯, কাজিখান: ৩/৩৫৪, আলমগিরি: ৫/৩০১)

আইএ

Back to top button