ত্রিপক্ষীয় প্ল্যাটফর্মের কথা বললেন জাপানি রাষ্ট্রদূত
ঢাকা, ০৩ জুন – দীর্ঘ প্রক্রিয়া ও জটিলতার সুরাহা হলে অনেক নতুন জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি।
তিনি বলেন, অনেক নতুন কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। কিন্তু সেজন্য কিছু দীর্ঘ প্রক্রিয়া ও জটিলতার সুরাহা করতে হবে। কিছু ভুল-বোঝাবুঝি ও যোগাযোগ বিভ্রাট রয়েছে। কিন্তু কিছু মৌলিক বিষয়ও রয়েছে, যা অস্বীকার করা যাবে না। এক্ষেত্রে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়নে দু’পক্ষকেই অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
শনিবার (৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে দ্য কসমস ডায়ালগ অ্যাম্বাসাডরসের অংশ হিসেবে ‘জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্ক: ভবিষ্যতের পূর্বাভাস’ শিরোনামের এক সিম্পোজিয়ামে তিনি এ কথা জানান।
কৌশলগত অংশীদারত্বের অংশ হিসেবে আগামী ৫০ বছরে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে জোর দিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, নিরাপত্তা সহযোগিতা ও দু’দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে যোগাযোগের ওপরেই বেশি আলোকপাত করা হবে। ত্রিপক্ষীয় প্ল্যাটফর্ম একটি নতুন ইস্যু। তবে কারও কারও অনিচ্ছা থাকতে পারে। ভারত-জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যকার সহযোগিতা নিয়ে ভিন্নমত থাকতে পারে। কিন্তু আমরা আলোচনা করতে প্রস্তুত রয়েছি। আমরা আরও অনেক বেশি মতামত ও আইডিয়ার কথা শুনতে চাই। আমি বলতে পারি, আলোচনা সবে শুরু হয়েছে।
সহযোগিতা বাড়াতে ও বৈচিত্র্য আনতে জাপান, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা যাচাই করে দেখার বিষয়ে জোর দেন রাষ্ট্রদূত।
বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারত্বের অংশ হিসেবে সহযোগিতার তিনটি খাত শনাক্ত করে ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, এ অঞ্চল এবং এর বাইরে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য এ সহযোগিতা বাড়াতে হবে। পারস্পরিক স্বার্থ সুরক্ষা, আঞ্চলিক সমৃদ্ধি ও জনগণের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও গভীর করতে হবে।
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি কেবল বাংলাদেশের জন্যই না, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ। তাদের (রোহিঙ্গা) মর্যাদাপূর্ণভাবে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই হচ্ছে চূড়ান্ত সমাধান। বাস্তুচ্যুত এসব মানুষকে যে দেশ আশ্রয় দিয়েছে, সেই দেশ ও শরণার্থীদের সহায়তা করছে জাপান। এ পরিস্থিতি আরও দীর্ঘায়িত হলে তাতে আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা বাড়বে। পাশাপাশি তারা বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে থাকবে।
কসমস ফাউন্ডেশন আয়োজিত সংলাপ সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বক্তব্য রাখেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান। তিনি বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনার টোকিও সফরকালে জাপান-বাংলাদেশের সম্পর্ক ‘সমন্বিত’ থেকে ‘কৌশলগত’ পর্যায়ে চলে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরের আগে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আউটলুক ডকুমেন্ট প্রকাশ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যাতে সবার সমৃদ্ধি অর্জনে অবাধ, মুক্ত, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কথা বলা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজিএস) আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশে জাপানআন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমাহাইদ, কলাম লেখক মঞ্জুরুল হক, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতেবাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার তারিক এ করিম।
সূত্র: জাগো নিউজ
আইএ/ ০৩ জুন ২০২৩