কুড়িগ্রাম

একমাত্র কমিউনিটি ক্লিনিকও বিলীন হলো ব্রহ্মপুত্রে

কুড়িগ্রাম, ৩১ মে – কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার দুর্গম এলাকার বাসিন্দাদের একমাত্র চিকিৎসাকেন্দ্র ছিল চর ভগপতিপুর সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিক। তবে সেটি এখন কেবলই স্মৃতি। মঙ্গলবার (৩০ মে) সন্ধ্যায় কমিউনিটি ক্লিনিকটি ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হয়ে গেছে।

এর আগে ওই এলাকার একটি স্কুলও ভাঙনের শিকার হয়। এছাড়াও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে একটি মসজিদ ও একটি আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দাদের। ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন ব্রহ্মপুত্র নদসহ অন্যন্য নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৬টি নদ-নদী বেষ্টিত কুড়িগ্রাম জেলা। এখানে গত মাস খানেক আগ থেকে বিভিন্ন নদ নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমার নদ-নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভাঙনের কবলে পড়ে ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকার শত শত বিঘা আবাদি জমি ও বসতবাড়ি। বিশেষ করে চর ভগপতিপুর এলাকায় গত দুই সপ্তাহে প্রায় ৪০টি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে।

যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর ভগপতিপুর এলাকার নজরুল ইসলাম ও মতিয়ার রহমান বলেন, পানি বৃদ্ধির কারণে বেশ কিছুদিন ভাঙন শুরু হয়েছে। অনেকের বাড়ি ঘর নদীতে চলে গেছে। একমাত্র ক্লিনিক ছিল তাও নদীতে গেছে। আর এখানে ক্লিনিক হবে কি না আল্লাহ পাক জানেন। ভাঙন দেখে খুবই কষ্ট লাগছে ভাই। কিন্তু করার কিছুই নেই।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুল গফুর বলেন, ইউনিয়নটি ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত। বেশিরভাগ এলাকাই চর। যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারেই বিচ্ছিন্ন। চর ভগপতিপুর এলাকার একমাত্র কমিউনিটি ক্লিনিক ছিল সেটিও নদীতে বিলীন হয়েছে। প্রায় ৩৬টির মত বসতবাড়ি, একটি স্কুল ভাঙনের শিকার হয়েছে। মসজিদ ও আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা সড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে। এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগের গাফিলতির কারণে ক্লিনিকটি নিলামে বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। ক্লিনিকটি বিক্রি করলে সরকারের তো লাভ হতো। তবে সেটি করেনি স্বাস্থ্য বিভাগ।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, অনেক চেষ্টা করেও ক্লিনিকটি রক্ষা করা গেল না। পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসকে বলে প্রায় ৪ হাজার জিও ব্যাগ সেখানে ফেলা হয়েছে। এতদিন নিয়ন্ত্রণও ছিল, হঠাৎ করে ভেঙে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডও অনেক চেষ্টা করেছে। তাও ক্লিনিকটি রক্ষা করা যায়নি। কোন উপায় ছিল না আসলে আমরা চেষ্টা করেই গেছি।

সরকারি অফিস নিলামের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন থাকা অবস্থায় ক্লিনিকটি নদীতে বিলীন হয়েছে বলে জানান তিনি।

বিষয়টি জানতে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সূত্র: দেশ রূপান্তর
আইএ/ ৩১ মে ২০২৩

Back to top button