সম্পর্ক

অনেক দম্পতির চেহারা একই রকম লাগে কেন?

কোনো কোনো স্বামী-স্ত্রীকে দেখলে মনে হয়, তারা ভাইবোন। কী করে তাদের দেখতে এক রকম লাগে—এই প্রশ্ন অনেকের মনেই ঘুরপাক খায়। হয়তো আপনাদের আশপাশে খুঁজলেও এমন এক-দুটি দম্পতি পাওয়া যাবে, যাদের দেখলেই সবাই মজা করে বলে ওঠে, ‘সত্যি করে বলো তো, তোমরা কি আসলেই স্বামী-স্ত্রী, নাকি যমজ ভাইবোন!’

এর কারণ কী? স্বামী-স্ত্রী কিংবা প্রেমিক-প্রেমিকা, তাদের মধ্যে এত সাদৃশ্য কেন থাকবে? বিষয়টি কি স্বাভাবিক? মনোবিজ্ঞানীদের গবেষণায় উঠে এসেছে এর বেশ কিছু কারণ। কী সেই কারণগুলো, জেনে নিন।

নিজের সঙ্গে মিল রয়েছে এমন সঙ্গী বাছাই
আমরা স্বভাবত এমন সঙ্গী মনের অজান্তেই বেছে নিই, যারা দেখতে খানিকটা আমাদের মতোই। তাদের আচার-আচরণ, অভ্যাস আমাদের সঙ্গে মিলে যায় বলেই আমরা তাদের প্রতি আকৃষ্ট হই। ফলে নিজেদের অজান্তেই আমাদের সঙ্গীর সঙ্গে মিলে যায়।

একই সঙ্গে অনেক বছর বসবাস
একই সঙ্গে অনেক বছর বসবাসের কারণেও দুটো মানুষের মাঝে অবচেতনভাবে কিছু একই রকম অভ্যাস গড়ে ওঠে। তারা একই রকম জীবনযাপন করে, এমনকি একইভাবে সুখ-দুঃখের অনুভূতি প্রকাশ করে। গবেষকরা বলছেন, যেসব দম্পতি প্রধানত সুখী দাম্পত্য জীবন কাটিয়েছেন, শেষ জীবনে এসে তাদের চেহারায় মিলটা খুব বেশি ফুটে উঠেছে।

গবেষকরা বলছেন, যেসব দম্পতি প্রধানত সুখী দাম্পত্য জীবন কাটিয়েছেন, শেষ জীবনে এসে তাদের চেহারায় মিলটা খুব বেশি ফুটে উঠেছে।

একই ধরনের অভ্যাস
দীর্ঘকাল একই সঙ্গে বসবাস করার ফলে অনেক অভ্যাসই সঙ্গীর সঙ্গে বিনিময় হয়ে যায়। যেমন—একই ধরনের খাবার খাওয়া, পোশাক পরা। এসব ব্যাপার শারীরিক ও মানসিকভাবে তাদের ওপর প্রভাব ফেলে। প্রাত্যহিক একই ধরনের অভ্যাসের ফলে বেশিরভাগ বয়স্ক দম্পতিকে একই রকম দেখায়।

নিজের বাবা বা মায়ের সঙ্গে মিল রয়েছে এমন সঙ্গী বাছাই
আমরা অনেক সময় এমন সঙ্গী নিজেদের জীবনে চাই, ঠিক যেমন আমাদের পিতা-মাতারা ছিলেন। একজন পুরুষ হয়তো এমন নারীকে খোঁজেন যার সঙ্গে তার মায়ের মিল রয়েছে বা একজন নারী এমন একজন পুরুষকে বিয়ে করতে চান, যার সঙ্গে তার পিতার কাঠামোগত মিল রয়েছে। এমন সব বৈশিষ্ট্যের সঙ্গী খোঁজার জন্য অনেক সময় আমাদের চেহারার সঙ্গে তাদের চেহারা বা কাঠামো অনেকটাই মিলে যায়।

দীর্ঘকাল একই সঙ্গে বসবাস করার ফলে অনেক অভ্যাসই সঙ্গীর সঙ্গে বিনিময় হয়ে যায়।

সহমর্মিতার প্রভাব
অনেক বছর একসঙ্গে থাকার পর, অনেক হাসি-আনন্দ-বেদনার মধ্যদিয়ে যাওয়া দম্পতিদের মাঝে একই রকম ফেসিয়াল এক্সপ্রেশনের কারণে তাদের চেহারা একই রকম মনে হয়। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, যেসব দম্পতির মধ্যে একে অপরের জন্য মায়া বা সহমর্মিতা বেশি কাজ করে, তারা খুব বেশি খুশি বা দুঃখ প্রকাশ করেন। তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশের ধরন একই হওয়ার কারণে তা তাদের মুখমণ্ডলের পেশিতে প্রভাব ফেলে। ফলে তারা একই রকম দেখতে না হলেও হাসলে বা দুঃখ প্রকাশ করলে তাদের একই রকম দেখায়।

যেসব দম্পতির মধ্যে একে অপরের জন্য মায়া বা সহমর্মিতা বেশি কাজ করে, তারা খুব বেশি খুশি বা দুঃখ প্রকাশ করেন। ফলে তাদের এক রকম দেখায়।

এম ইউ

Back to top button