জাতীয়

দুপুরে সন্তান হত্যার বিচার চেয়ে রাতে চলে গেলেন দুরন্তের মা

ঢাকা, ২৮ মে – জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা দুরন্ত বিপ্লবের রহস্যজনক মৃত্যুর পর তার মা রোকেয়া আক্তার খাতুনও (৭০) মারা গেছেন।

এর আগে শনিবার দুরন্ত বিপ্লবের মৃত্যু নিয়ে ‘জাস্টিস ফর দুরন্ত বিপ্লব’ নামে একটি বই প্রকাশ ও হত্যার বিচারের দাবিতে ডিআরইউতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দুরন্ত বিপ্লবের মা। ছেলে হত্যার বিচার না হওয়ার আক্ষেপ নিয়েই রাত দেড়টার দিকে মারা যান রোকেয়া আক্তার।

ওই দিন রাত পৌনে ২টার দিকে ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুরন্ত বিপ্লবের বোন শাশ্বতী বিপ্লব।

স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, আমাদের মা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন একটু আগে। ছেলে হারানোর শোক আর সহ্য করতে পারেন নাই। ছেলের দেখা পাওয়ার জন্য অধৈর্য হয়ে উঠেছিলেন। এত রাতে কাকে কাকে জানাব? তাই এইখানেই জানালাম। একটা খুনি দেশ! বিশৃঙ্খল আইনশৃঙ্খলা…. আমি ঘেন্না করি।

সকালে আরেক স্ট্যাটাসে তিনি জানান, আম্মার জানাজা আজ রোববার বাদ জোহর জাপান গার্ডের সিটির কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে অনুষ্ঠিত হবে।

শাশ্বতী বিপ্লব বলেন, দূরন্ত বিপ্লব আমার মায়ের বড় সন্তান। তাকে হারিয়ে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছিলেন। পাশাপাশি আমরা মৃত্যুর সঠিক তদন্তের জন্য দুই মাস ধরে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি, কিন্তু কোনো সহায়তা পাচ্ছি না। এই বিষয়টা নিয়েও মা অনেক কষ্ট পেতেন। মানসিক চাপে থাকলেও তিনি সেটা আমাদের কাছে প্রকাশ করতেন না।

চিকিৎসকের বরাত দিয়ে শাশ্বতী আরও বলেন, বারডেম হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জানিয়েছেন মা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

এদিকে দুরন্ত বিপ্লবের মৃত্যু নিয়ে তদন্তের অসংগতি এবং অমীমাংসিত প্রশ্নগুলো সামনে রেখে একটি বই সংকলন করেছেন তার বোন শাশ্বতী বিপ্লব। শনিবার (২৭ মে) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘জাস্টিস ফর দুরন্ত বিপ্লব’ নামে সংকলনটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়।

রোকেয়া আক্তার বলেছিলেন, দুরন্তের বন্ধু-বান্ধব, বড় ভাই, ছোট ভাই সবাই তাকে চেনেন। আমি মা হিসেবে তাকে যতটা চিনেছি, তা বর্ণনাতীত। এটা সত্য, সে পানিতে ডুবে মরেনি।

তিনি আরও বলেছিলেন, দুরন্তকে তার সার্কেলের লোকজন, যাদের সঙ্গে চলাফেরা করত, এদের মধ্যেই কারও স্বার্থে আঘাত লেগেছে, সে কারণে তাকে হত্যা করেছে।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জ থেকে মোহাম্মদপুরে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন দুরন্ত বিপ্লব। দুদিন পর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় জিডি করে তার পরিবার। এরপর ১২ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পাগলা ঘাট এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদী থেকে একটি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে স্বজনরা এটিকে দুরন্ত বিপ্লবের বলে শনাক্ত করেন।

সূত্র: আরটিভি নিউজ
আইএ/ ২৮ মে ২০২৩

Back to top button