দক্ষিণ এশিয়া

‘নৈরাজ্যের দিকে’ পাকিস্তান: আলোচনার পথ খুঁজছেন ইমরান

ইসলামাবাদ, ২৭ মে – পাকিস্তান নৈরাজ্যের দিকে যাচ্ছে জানিয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর চেয়ারম্যান ইমরান খান। এই পরিস্থিতি উত্তরণে শাহবাজ শরিফের সরকারের সঙ্গে দ্রুত আলোচনায় বসতে চান তিনি। দলের ডজনখানেক শীর্ষ নেতার পদত্যাগ এবং আটককৃত সমর্থকদের সামরিক আদালতে বিচার করা হবে, এমন পরিস্থিতিতে যখন তার ওপর চাপ বাড়ছে তখন আলোচনার সুর তুললেন তিনি।

শিরিন মাজারিসহ অনেক নেতা পিটিআই ছাড়ার পর দলীয় প্রধান ইমরান খান দাবি করেছেন, দলের নেতাদের পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। সম্প্রতি তিনি টুইটে লিখেছেন, ‘আমরা পাকিস্তানে জোরপূর্বক বিয়ের কথা জানতাম কিন্তু পিটিআইতে নতুন এক বিষয় আবির্ভূত হয়েছে- জোরপূর্বক বিচ্ছেদ।’

গত ৯ মে ইমরান খানকে গ্রেফতারের পর পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) কর্মী-সমর্থকরা সেনাবাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায়। এই সহিংসতার ঘটনায় দলটির দশ হাজারের বেশি কর্মী-সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে পুলিশের অভিযানে। দলটির গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতা এখন কারাগারে। দুই ডজনের বেশি নেতা চলতি সপ্তাহে দল ছেড়েছেন। আরও অনেকে ইমরানের সঙ্গ ছাড়তে পারেন।

এ নিয়ে বেশ ঝামেলায় এক সময়ের তারকা ক্রিকেটার ও পোস্টার বয় ইমরান খান। কারণ, সহিংসতায় তার আটককৃত সমর্থকদের সামরিক আদালতে বিচার করা হবে বলে জানিয়েছে শরিফ সরকার।

চলমান সংকটের মধ্যে শুক্রবার (২৬মে) ইউটিউবে লাইভে এসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান বলেন, ‘আমি সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে চাই। কারণ বর্তমানে যা চলছে তাতে সমাধান দেখছি না। দেশ নৈরাজ্যের দিকে এগোচ্ছে।’

ইমরান দাবি করেন, ‘চলমান ক্র্যাকডাউনের কারণেই দলের জনপ্রিয়তা বাড়ছে।’

এই সংকট থেকে দেশকে উদ্ধারে শুধু আলোচনা চান বলেও বলে মন্তব্য করেন পিটিআই চেয়ারম্যান।

সব মিলিয়ে পাকিস্তানের পরিস্থিতি একদমই ভালো নেই। কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকট আর রাজনৈতিক অস্থিরতায় আরও বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে দক্ষণ এশিয়ার এই দেশটি।

সহিসংতায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমরানের দলের ডজন খানেক সমর্থককে শিগগিরই বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে। পিটিআইয়ের অনেক সমর্থকের বাসায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ ইমরানের। সব দিক বিবেচনা করে দল ছাড়ার হিড়িক পড়েছে।

ইমরান অভিযোগ করে বলেছেন, ‘তাকে দুর্বল করতে এবং দল ভেঙে দেওয়ার জন্য নেতা-কর্মীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এমনকি তাদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হচ্ছে।’

কিন্তু পিটিআইয়ের সদস্যরা বলেছেন ভিন্ন কথা। স্বেচ্ছায় এবং পরিবারিক সমস্যার কারণ দেখিয়ে দল ছাড়ার কথা জানিয়েছেন কেউ কেউ।

আগামী নভেম্বরে পাকিস্তানে একটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। দেশটির বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, পাকিস্তানে সব জনপ্রিয় নেতাদের মধ্যে একজন ইমরান খান। সপ্তাহের শুরুতে খান বলেছিলেন, ‘আলোচনার জন্য তিনি একটি কমিটি গঠন করবেন।’

কিন্তু আগামী নির্বাচনের আগপর্যন্ত তিনি বাইরে কতদিন থাকতে পারবেন এমন প্রশ্ন সর্বত্র। কারণ তার বিরুদ্ধে রয়েছে শতাধিক মামলা।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
এম ইউ/২৭ মে ২০২৩

Back to top button