সিআইপি সম্মাননা পেলেন ৪৪ ব্যক্তি
ঢাকা, ২২ মে – দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় স্বীকৃতিস্বরূপ বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সিআইপি (শিল্প) ২০২১ সম্মাননা পেয়েছেন ৪৪ ব্যক্তি।
সোমবার (২২ মে) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ছয়টি ক্যাটাগরিতে তাদের এ সম্মাননা দেয় শিল্প মন্ত্রণালয়।
অনুষ্ঠানে তাদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সিআইপি কার্ড তুলে দেন প্রধান অতিথি কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুর হোসেন, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সিআইপি (শিল্প) ২০২১ সম্মাননা পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন-
জাতীয় শিল্প উন্নয়ন পরিষদ (এনসিআইডি) ক্যাটাগরি: এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি কামরান তানভিরুর রহমান, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) সভাপতি রুপালী হক চৌধুরি, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান এবং বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী।
বৃহৎ শিল্প (উৎপাদন): স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা অংশীদার এরিক এস চৌধুরী, বিএসআরএম স্টিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আলী হুসাইন আকবর আলী, প্রাণ ডেইরি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. ইলিয়াস মৃধা, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রয়াত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোবারক আলী, জাবের অ্যান্ড জুবায়ের ফেব্রিক্স লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জাবের, অ্যাডভান্সড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আরিফ দৌলা, পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল মোনেম লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম মাঈনউদ্দিন মোনেম, ফারিহা নিট টেক্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মামুন ভূঁইয়া, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, হ্যামস গার্মেন্টেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. সফিকুর রহমান, বাদশা টেক্সটাইলস লিমিটেডের উদ্যোক্তা পরিচালক কামাল উদ্দিন আহম্মদ, মীর সিরামিক লিমিটেডের পরিচালক মাহরীন নাসির, ডিউরেবল প্লাস্টিক লিমিটেডের পরিচালক উজমা চৌধুরী, রানার অটোমোবাইলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান, উইনার স্টেইনলেস স্টিল মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. সোহেল রানা, তাসনিয়া ফেব্রিক্স লিমিটেডের উদ্যোক্তা পরিচালক আহমেদ আরিফ বিল্লাহ, সোহাগপুর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার, এনভয় টেক্সটাইলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমেদ ও কনফিডেন্স পাওয়ার হোল্ডিংস লিমিটেডের ভাইসচেয়ারম্যান ইমরান করিম।
বৃহৎ শিল্প (সেবা): এসটিএস হোল্ডিংস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দকার মনির উদ্দীন, এসবি টেল এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকারিয়া শাহিদ, দ্য সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান, কনকর্ড রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম কামাল উদ্দিন এবং ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান মনজুরুল ইসলাম।
মাঝারি শিল্প (উৎপাদন): বিশ্বাস পোলট্রি অ্যান্ড ফিশ ফিডস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান, ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান আক্তার জাহান হাসমিন মুক্তাদির, অকো-টেক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সোবহান, জিন্নাত নিটওয়্যারস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার, রোমানিয়া ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির বাবলু, প্রমি এগ্রো ফুডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. এনামুল হাসান খান, মাসকো পিকাসো লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফাহিমা আক্তার, টর্ক ফ্যাশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন, জিন্নাত অ্যাপারেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ এবং মেসার্স সিটাডেল অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহিদুল ইসলাম।
ক্ষুদ্র শিল্প (উৎপাদন): রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেডের পরিচালক চৌধুরী কামরুজ্জামান এবং এরফান অ্যাগ্রো ফুড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহবুব আলম।
মাইক্রো শিল্প: মাসকো ডেইরি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী এম এ সবুর।
সিআইপি কার্ড দিয়ে সিআইপি (শিল্প) সম্মাননা পাওয়া ব্যক্তিরা আগামী এক বছরের জন্য জাতীয় ও সিটি করপোরেশনের অনুষ্ঠানে নাগরিক সংবর্ধনায় দাওয়াত, ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে ভ্রমণের সময় বিমান, রেলপথ, সড়ক ও জলপথে সরকারি যানবাহনে আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার পাবেন। বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহারের সুবিধা পাবেন। স্ত্রী, সন্তান ও নিজের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে বিশেষ সুবিধা পাবেন। এছাড়া সরকারের শিল্পবিষয়ক নীতি-নির্ধারণী কমিটিতে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।
বাংলাদেশ সরকার তথা শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক সিআইপি (শিল্প) সম্মাননা দেওয়ার ফলে এসব উদ্যোক্তা যেমন অনুপ্রাণিত হবেন, তেমনি তাদের সাফল্যে উজ্জীবিত হয়ে দেশে আরও অনেক নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হবে। এটি জ্ঞানভিত্তিক শিল্পায়নের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে।
অনুষ্ঠানে সম্মাননা পাওয়ার পর অনুভূতি ব্যক্ত করে ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) সভাপতি রুপালী হক চৌধুরি বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয় আমাদের শিল্প উদ্যোক্তাদের অভিভাবক। কিন্তু আমরা যখন কাজ করতে যাই, তখন আমাদের ১৯টি আইন মেনে চলতে হয়। এ আইনগুলো মানতে গিয়ে আমাদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করতে হয়। তাই সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাতে চাই, শিল্পকে আরও গতিশীল করতে অবকাঠামোগত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে আইনি কাঠামোকেও সমৃদ্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী বলেন, যে কোনো পেশায় সম্মাননা পেলে ভালো লাগে। আজ শিল্প মন্ত্রণালয় আমাদের সম্মানিত করেছে। এটি আমাদের জন্য একটি সৌভাগ্য। এ সৌভাগ্য আমাদের গড়ে দিয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি যদি আমাদের স্বাধীনতা এনে না দিতেন, তাহলে শিল্প উদ্যোক্তা হওয়া আমাদের জন্য অসম্ভব হতো। বঙ্গবন্ধু তার স্বপ্ন পূরণ করে যেতে পারেননি, কিন্তু তার কন্যা এখন সেটি পূরণ করছেন। যে কারণে আমরা আজ বড় বড় ব্যবসা করার স্বপ্ন দেখি। পাশাপাশি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, উদ্যোক্তারা সৃজনশীন, মেধাবী ও সফল হন। তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও শিল্প কারখানা গড়ে তুলে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ ও গতিশীল করছেন। আমাদের অর্থনীতির চাকাকে গতিশীল করে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয় সব সময় আপনাদের (উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী) পাশে আছে। বর্তমান সরকারও শিল্পবান্ধব। আমরা সেভাবেই আপনাদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করছি। এটি একটি টিম ওয়ার্ক। কাজেই সমন্বিতভাবে আমাদের কাজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আজ যারা সিআইপি (শিল্প) সম্মাননা পেয়েছেন, তাদের প্রত্যেকে দেশের উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছেন। এ জন্যই আজ আমাদের দেশ এত সমৃদ্ধ। আমরা আজ উন্নয়নের রোল মডেল। এ পাওনা আমাদের সম্মিলিত। ব্যবসায়ীরা এতে বিশাল অবদান রেখেছেন।
সূত্র: বাংলানিউজ
আইএ/ ২২ মে ২০২৩