সিলেট

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হতে পারেন আরিফুল হক চৌধুরী

মুকিত রহমানী

সিলেট, ২২ মে – সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় তাঁকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান করা হতে পারে। দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে ত্যাগের নজির রাখার পুরস্কার হিসেবে এ পদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে বলে গত এক মাস ধরেই আলোচনা চলছে নগরীতে। আরিফুল হকের সাম্প্রতিক যুক্তরাজ্য সফরকালে বিষয়টি সামনে চলে আসে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাঁকে এ প্রস্তাব দিয়েছেন বলে কেউ কেউ দাবি করছেন। আরিফুল শনিবার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণার পর আবারও বিষয়টি নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে।

সিলেট বিএনপির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা এ ব্যাপারে সরাসরি মুখ না খুললেও আকারে-ইঙ্গিতে এমন বার্তাই দিচ্ছেন। তবে আরিফুল হক চৌধুরী বলছেন, নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে। কোনো পদ-পদবির লোভে তিনি এ কাজ করেননি।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, রাজনীতি করলে পদ-পদবি মিলবে, এটা স্বাভাবিক। হয়তো আরিফুল হক কেন্দ্রীয় সদস্য থেকে পদোন্নতি পাবেন। তবে নির্বাচনের সঙ্গে ভাইস চেয়ারম্যান হওয়া কিংবা পদোন্নতির কোনো সম্পর্ক নেই। দল চাইলে যে কাউকে পদ দিতে পারে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আরিফুল হক তপশিল ঘোষণার পরপরই যুক্তরাজ্যে গিয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করেন। সেই থেকে তাঁর সিদ্ধান্ত জানতে নগরবাসী উন্মুখ ছিলেন। তেমনি প্রতীক্ষায় ছিলেন অন্য মেয়র প্রার্থীরাও। দেশে ফিরে তিনি সিটির ৪২টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের মতামত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এ সময় তাঁকে নাগরিকরা নির্বাচন করার জন্যও চাপ দেন। শনিবার তিনি নগরবাসীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, জনগণ বলেছেন যে, তাঁদের যেন এতিম করা না হয়।

শনিবার নগরীর সাবরেজিস্টারি মাঠে নাগরিক সভায় কাউকে বক্তব্যের সুযোগ দেননি তিনি। দলীয় নেতাকর্মীসহ কয়েক হাজার মানুষ মাঠে উপস্থিত হন। তাঁরা মনে করেছিলেন, আরিফুল তাঁদের মতামতের গুরুত্ব দেবেন।

সভায় উপস্থিত নগরীর শামীমাবাদ এলাকার বাসিন্দা জুয়েল আহমদ বলেন, আমরা চেয়েছিলাম আরিফুল হক ভোটে লড়াইয়ের ঘোষণা দেবেন। কালীবাড়ি এলাকার আরেক বাসিন্দা আহমদ শাহীন বলেন, আরিফুল হক নেই, নির্বাচনও নেই। তিনি থাকলে নির্বাচন জমে উঠত। একজন কাজের মানুষ হিসেবে আমরা তাঁকে আবার চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের হতাশ করেছেন।

আরিফুল হকের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা নিয়ে গতকাল রোববারও নগরীর পাড়া-মহল্লা ও চায়ের দোকানে জোর আলোচনা হয়। কেউ বলেছেন দলের কারণে, আবার কেউ বলেছেন নানা ধরনের চাপ ও ভয়ের কারণে নির্বাচন করছেন না তিনি। শনিবার আবেগঘন বক্তৃতায় আরিফ নিজে কেঁদে ফেলেন, লোকজনকেও কাঁদান।

ভোট ডাকাতির পরিকল্পনা, প্রহসনের নির্বাচন চূড়ান্ত করা, পুলিশ প্রশাসনের হয়রানি, নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারসহ বিভিন্ন অভিযোগ করে তিনি নির্বাচন না করার ঘোষণা দেন। উপস্থিত লোকদেরও ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার আহ্বান জানান।

মহানগর বিএনপির সদ্য সাবেক সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, আরিফুল হক নির্বাচন করছেন না দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে। নির্বাচন করলে তিনি জয়ী হতেন। কিন্তু দল তো নির্বাচনে যাচ্ছে না। দলের ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ার বিষয়টি এখানে জড়িত নয়।

আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনে ভোট হবে। গতকাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলনসহ ১১ জন মেয়র পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

সূত্র: সমকাল
আইএ/ ২২ মে ২০২৩

Back to top button