অপরাধ

ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল বাড়াচ্ছে উদ্বেগ

ধর্ষণের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী ব্যাপক জনমত গড়ে উঠলেও থামছে না এ জঘন্য অপরাধ। শ্লীলতাহানি, যৌন-নির্যাতন, প্রেমের ফাঁদে ফেলে বা বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনা এবং ধর্ষণের শিকার নারীর ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেয়ার খবর এখন হরহামেশা শোনা যায়। আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় এ ধরনের অপরাধের ভয়াবহ বিস্তার নিয়ে আতঙ্কিত অভিভাবকরা। এই অপরাধের লাগাম টানতে কী করা উচিত, তা নিয়েই ভাবছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিশেষজ্ঞ ও আইনবিদরা বলছেন, ধর্ষণের বিষয়ে অভিযোগ দায়ের, সঠিক তদন্ত, অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করা, সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি, সরকারের সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, বাহিনীতে নারী নির্যাতন সংক্রান্ত আইনগুলোর ওপর নিয়মিত প্রশিক্ষণ এবং তাদের মধ্যে নারীর প্রতি সংবেদনশীলতা তৈরির মাধ্যমে এ ধরনের অপরাধ রুখে দেয়া যাবে।

তারা মনে করেন, নৈতিক শিক্ষাদানে পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টি করা, ডিজিটাল মাধ্যমে থাকা অশালীন ভিডিও সরানো, তরুণদের মোবাইল-ইন্টারনেট আসক্তি থেকে ফিরিয়ে খেলাধুলা ও মানবিক কাজে যুক্ত করে এসব অপরাধ নির্মূল করা যেতে পারে।

নোয়াখালীতে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ
সম্প্রতি শ্লীলতাহানি, যৌন-নির্যাতন বা ধর্ষণের যেসব ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ৩৫ বছর বয়সী এক নারীর বাড়িতে ঢুকে তাকে বিবস্ত্র করে যৌন-নির্যাতন এবং ভিডিও ধারণ করে অনলাইনে ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনা। ২ সেপ্টেম্বর রাতের ওই ঘটনার ভিডিও এক মাস পর ৪ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে এই ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে নয়জনের নাম উল্লেখ করে বেগমগঞ্জ থানায় মামলা করেন। সেই মামলার প্রধান আসামিসহ অন্যদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে।

নোয়াখালীতে এক নারীকে বিবস্ত্র করে পাশবিক নির্যাতনের ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল হলে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে

বন্ধুর স্ত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও পর্ন সাইটে বিক্রি
অক্টোবরের মাঝামাঝিতে গাজীপুরের আরেক ঘটনা চাঞ্চল্য ছড়ায়। বন্ধুর স্ত্রীকে ধর্ষণ করে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে নয় মাস ধরে তিন বন্ধু মিলে ভুক্তভোগীকে কয়েক দফায় ধর্ষণ করেন। সেই ভিডিও আবার কয়েকটি পর্ন সাইটে বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনাটি ঘটে কাপাসিয়ায়। পরে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ তিনজনের নামে মামলা করেন। আসামিদের ধরে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে।

প্রবাসীর স্ত্রীর বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে চাঁদা দাবি
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে প্রবাসীর স্ত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন মঞ্জুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। গত ২১ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (মির্জাপুর) আমলী আদালতে মঞ্জুর রহমানকে আসামি করে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। পরে ৮ অক্টোবর নিরাপত্তাহীনতায় ওই নারী স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে চলে যেতে বাধ্য হন। গত ২ ডিসেম্বর বখাটে যুবক মঞ্জুর রহমানকে (২৬) গ্রেফতার করে ৩ ডিসেম্বর কারাগারে পাঠানো হয়।

এছাড়া ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ও তা মোবাইলে ভিডিও ধারণের অভিযোগে গত ২৮ নভেম্বর হারুন শেখ (৩০) নামের এক বখাটে গ্রেফতার হয়। গাইবান্ধায় ইউনিয়ন পরিষদে প্রত্যয়ন নিতে আসা এক গৃহবধূকে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গত ২৪ নভেম্বর গ্রেফতার করা হয় সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বাদলকে (৪৮)। সিরাজগঞ্জে প্রথমবার ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে সেই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে এক মাস ধরে এক স্কুলছাত্রীকে তিন যুবকের ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়। ২ ডিসেম্বর এ মামলার এক আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এ অপরাধ কেন ঠেকানো যাচ্ছে না?
দেশে এভাবে একের পর এক ধর্ষণ, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ও যৌন নিপীড়নের ঘটনার প্রতিবাদে তুমুল আন্দোলনের মুখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করা হয়েছে। আগে কেবল সংঘবদ্ধ ধর্ষণ বা ধর্ষণের পর হত্যার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড থাকলেও সরকার নারী ও শিশু নির্যাতন আইন, ২০০০ এর কয়েকটি ধারা সংশোধন করে, যেখানে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড রাখা হয়। গত ১৪ অক্টোবর এ সংশোধিত আইন অধ্যাদেশ আকারে জারি করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এমন কঠোর আইন হওয়ার পরও পাশবিকতা-বর্বরতা কেন থামছে না। বরং ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ভিডিও ধারণ করে ভয়-ভীতি দেখিয়ে পাশবিকতা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি লাগামহীন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।

ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবিতে এ বছরের মাঝামাঝিতে উত্তাল হয় রাজপথ
কেন পাশবিকতা এমন পর্যায়ে পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি হলো—এই প্রশ্নের উত্তরই খুঁজছেন বিশ্লেষকরা। আইনবিদরা বলছেন, দেশে নারী ও শিশু ধর্ষণের বহু ঘটনা ঘটছে, কিন্তু তার বিচার এবং শাস্তি হচ্ছে খুবই কম। ধর্ষণের বেশিরভাগ ঘটনাই ধামাচাপা পড়ে যায়। এছাড়া ধর্ষণের বিচার পেতেও নারীকে পদে পদে হয়রানি আর অবমাননার শিকার হতে হয়। ধর্ষণের শিকার নারীকে বার বার ঘটনার বিবরণ দেয়া এবং নানা প্রশ্নের মুখে বিব্রত হতে হয়। সবচেয়ে বড় বিষয়, অপরাধীদের সিংহভাগেরই ক্ষমতা-যোগ থাকতে। অর্থাৎ তারা ক্ষমতার বলয়ে থাকেন বলে অন্যান্য নানা সুবিধা ভোগ করার পাশাপাশি মনে করেন, এ ধরনের অপরাধ করেও পার পেয়ে যাবেন। অপরাধীদের এই মানসিকতাকে গুঁড়িয়ে দিতে আইনের শাসন জরুরি।

আইনবিদদের পরামর্শ
সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ প্রসঙ্গে আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, গোটা রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা এবং আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনতে হবে। সবাইকে সচেতন হতে হবে। সমাজের সবাইকে এক হয়ে এ ধরনের হীন কাজের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। সমাজের সবাই সচেতন হলেই এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে। পাশাপাশি দোষীরা যেন শাস্তি পায় সে দিকটাও নিশ্চিত করতে হবে। ভুক্তভোগী নয়, বরং আসামিদেরই যেন প্রমাণ করতে হয়, তারা নির্দোষ—এমন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

এছাড়া নৈতিক ও প্রকৃত মানবিক ও ধর্মীয় শিক্ষা জোরদার করার পাশাপাশি এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারলে এই অপরাধ কমানো সম্ভব হবে।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফৌজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, ‘ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা ও বিচার হবে। আবার যদি ভিডিও ধারণ ও ব্ল্যাকমেইল করে তাহলে সেটি নতুন যে আইনটি হয়েছে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের ধারায় এবং ব্ল্যাকমেইলিং পেনাল কোডের সংজ্ঞায় পড়বে। মামলাটিতে দুটি ভিন্ন আইন চলে আসবে। ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির জন্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, পেনাল কোড এবং সাইবার ক্রাইমের প্রভিশনগুলো আসবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যেটা করতে পারেন, অভিযোগটাকে সঠিকভাবে নিবন্ধন করা। অর্থাৎ এফআইআরের একটি নম্বর পড়বে এবং সেখানে কয়টা অফেন্স (অপরাধ), সে অফেন্সগুলো এক এক ধারায় বণ্টন করতে হবে। সবগুলো যদি নারী ও শিশুর মধ্যে ফেলে দেন তাহলে কিন্তু আসবে না। ওই যেটা ভিডিও ধারণ করলো, ব্ল্যাকমেইল করলো সেটা স্পেসিফিকভাবে হতে হবে।’

ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে লাগাতার ধর্ষণের ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে
এই আইনজীবী বলেন, ‘মামলাটি এমনভাবে করতে হবে যেন পরে এই মামলা ফেরত না আসে। জনগণের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন বসে আলোচনা করে ভিকটিমের অভিযোগটি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আইনের ধারায় প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়া জনগণকে সচেতন করার জন্যে স্থানীয় প্রশাসন এবং অন্যান্য সকলেই কাজ করতে হবে। দৈনিক ও জাতীয় পত্রিকাসহ সকল গণমাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্রচারণা চালাতে হবে। সরকার ও বেসরকারি সংস্থা যদি সভা-সেমিনার করে প্রচারণা চালায় তাহলে আমার মনে হয় এসব সমস্যার অনেকটাই সমাধান করা সম্ভব হবে।’

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘ইদানীং যেটা ঘটছে যে, তুমি আমার সাথে সম্পর্ক না করলে আমি এটা ফেসবুকে দিয়ে দেবো। এতে অনেক মেয়ের আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে। সমাজিক-পারিবারিক যে বন্ধন এবং পারিবারিক যে নিয়ন্ত্রণটা আগের সমাজে ছিল। পরিবারের সদস্যরা কে কোথায় কিভাবে যাচ্ছে, তাদের ওপরে নজরদারি করা, সমাজের সবার ওপরে দৃষ্টি রাখা, এর মধ্যে কেউ খারাপ করলে তার অভিভাবককে বলে দেয়া, শাসন করা। এই জায়গাগুলোতে অনেক দুর্বলতা দেখা দিয়েছে। এখন ছেলেমেয়েরাও যে যার খুশি মতো চলে, অভিভাবকরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না, আবার নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে সেখানেও বিপদ হয়।’

সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, ‘এ সমস্ত কারণেই অল্প বয়সী ছেলেমেয়েরা এ সমস্ত ঘটনাগুলোর মধ্যে জড়িয়ে যায়। আবার যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়া আছে, একজনের সঙ্গে আরেকজনের ফেসবুকে পরিচয়, রিলেশন হয়ে গেলো, ফেসবুকে কথা-বার্তার পর বললো আসো, দেখা করি। দেখা করলো, তারপরে হয়তো তার সাথে একটা শারীরিক সম্পর্ক গড়লো, তখন সেই ঘটনার একটা ভিডিও ধারণ করে রাখলো, কারণ ভিডিও তো এখন ইজি। এসব করার পরে যখন সেটা সে অস্বীকার করছে। এরপর সেটি ফেসবুক ছেড়ে দেবো। এখানে এই যে থ্রেটটা শুরু করলো। থ্রেট আসার পর নিয়ম হলো যে, প্রথমেই সংশ্লিষ্ট পক্ষকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের জানাতে হবে, তাহলে কিন্তু বিষয়টি ফেসবুক পর্যন্ত গড়ায় না। তাই ঘটনার ভিকটিম যারা হতে যাচ্ছে তারা যদি ইমিডিয়েটলি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানায় এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীরও দায়িত্ব হলো ইমিডিয়েটলি ব্যবস্থা গ্রহণ করা। মামলা করা আর যদি ডিজিটাল মাধ্যমে কোনো কিছু পোস্ট করে যদি ছড়িয়ে দিয়ে থাকে সেটি নিয়ন্ত্রণে আনার ব্যবস্থা করা।’

এসব বিকৃত মানসিকতা ও উদ্ভূত ঘটনা রোধের বিষয়ে মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘এসব প্রবণতা বাড়ার অন্যতম কারণ ডিজিটাল মাধ্যম। এ জায়গাটায় একটা কাজ করা যেতে পারে, আমাদের ডিজিটাল ইউজটা নিয়ন্ত্রণ করা। এই জায়গায় যদি সরকার একটা নীতিমালা করতে পারে, শিক্ষার্থীদের বিষয়ে এবং রাত ১১টার পরে সুনির্দিষ্টভাবে ম্যাচিউরিটি ছাড়া কোনো ভিডিও কনটেন্ট দেখতে পারবে না। অথবা এসব কনটেন্ট খোলার জন্য একটা বয়স (১৬ বা ১৮ বছর ছাড়া) নির্ধারণ করে দেয়া যে, এসব দেখা যাবে না। সবচেয়ে বেশি হলো জনপ্রশাসন ও ফ্যামিলি লেভেল, স্কুল ও প্রশাসন সকল ক্ষেত্রে ডিজিটাল ইউজ সঠিকভাবে না হয়ে কী কী ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি আমরা, সেটার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা হলে হয়তো কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো।’

আরেক আইনজীবী কুমার দেবুল দে বলেন, ‘ডিজিটাল যুগ তো, গণমাধ্যম ও প্রচারমাধ্যম উন্নত হওয়ার ফলে নারী নির্যাতনসহ অন্যান্য অপরাধ বেড়ে গেছে। এখন দেখবেন শুধু নারী ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন তা না, ধর্ষণের সাথে সাথে আরেকটা অপরাধ হচ্ছে বিষয়টাকে ভিডিও করা হচ্ছে। সেটা আরেকটা অপরাধ হচ্ছে। তার সঙ্গে আরও একটা যোগ হচ্ছে ধর্ষণের ভিডিওটা নিজের কাছে রাখছে না, সেটি প্রচার করছে অথবা প্রচার করার হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করছে বা চেষ্টা করছে।’

আরও পড়ুন : মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনালে বিএনপির বিচার হওয়া উচিত : কাদের

এই আইনজীবী বলেন, ‘ধর্ষণের সঙ্গে মিলিয়ে আরও পাঁচ থেকে ছয়টি অপরাধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন কথা হচ্ছে, ধর্ষণ একটা আলাদা অপরাধ, ভিডিও ধারণ ও ছবি তোলা আলাদা অপরাধ, প্রচার করার হুমকি দিয়ে কোনো সুযোগ সুবিধা আদায় করাও আরেকটা অপরাধ। সব মিলিয়ে এটার কনসিকোয়েন্সি অনেক অপরাধের। একটা আইনে এদের শাস্তির আওতায় আনা যাবে না। দেখা গেলো ধর্ষণ করার সময়ে হয়তো ভিডিও করছে সঙ্গে সঙ্গেই। প্রচার করার হুমকি দিল ১০ দিন পর, তারপর হুমকি দিয়ে টাকার লেনদেন হলো। প্রচার করলো আরও পরে। প্রতিটা আলাদা আলাদা। মূল্যবোধের অভাবে এসব অপরাধ বাড়ছে।’

‘এই অপরাধগুলো কখনোই আইন করে বন্ধ করা যাবে না। এখানে পারিবারিক শিক্ষা, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থার ভূমিকা থাকা দরকার। তাই এসব বিকৃত মানসিকতার অপরাধ দমনে সমন্বিত চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে’—বলেন কুমার দেবুল দে।

সূত্রঃ জাগো নিউজ
আডি/ ১৩ ডিসেম্বর

Back to top button