রাজশাহী

রাজশাহী কলেজে পরিত্যক্ত নালায় উঠছে ‘ইতিহাস-ঐতিহ্যে’র ম্যুরাল

রাজশাহী, ১৩ ডিসেম্বর- রাজশাহী কলেজ ক্যাম্পাসের কলাভবনের পশ্চিমাঞ্চল পরিত্যক্তই ছিল এত দিন। ঝোপ-জঙ্গলে পূর্ণ নালা গিয়ে ঠেকেছে কলেজ মসজিদের পশ্চিম দিয়ে পাশের প্রধান সড়কে। এতদিন জায়গাটি অরক্ষিত ছিল। সেটি আর আগের অবস্থায় থাকছে না।

কলাভবন সংলগ্ন নালার ওপর গড়ে তোলা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ম্যুরাল। আর মসজিদের পশ্চিমাংশে গড়ে উঠছে ফুলবাগান। কলা ভবনের সামনের দিকটায় গড়ে তোলা হয়েছে শিক্ষার্থীদের বসার উপযোগী করে। কলেজের অন্যান্য চত্বরের মতোই শিক্ষার্থীদের আড্ডাস্থল হয়ে উঠবে এ এলাকাটি।

কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনা মহামারী কেটে গেলেই খুলবে কলেজ। তখন শিক্ষার্থীরা পাবে এক নতুন ক্যাম্পাস। ছোট ছোট বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে সাজানো হয়েছে পুরো ক্যাম্পাস। শ্রেণিকক্ষ থেকে আঙিনা- কোনো কিছুই বাদ পড়েনি। সুন্দর পরিবেশে বিদ্যাচর্চা নিশ্চিত করতে এই চেষ্টা কর্তৃপক্ষের।

কলেজ ক্যাম্পাসজুড়ে সারি সারি লাল দালান। একেকটি ভবন দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে। বৃহৎবঙ্গের প্রাচীন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু ১৮৭৩ সালে।

দীর্ঘ পথপরিক্রমায় অনেক সোনার সন্তান জন্ম দিয়েছে রাজশাহী কলেজ। ব্রিটিশবাংলা থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের শিক্ষা-সংস্কৃতি বিকাশে রাজশাহী কলেজ গর্বিত ইতিহাসের অংশীদার।

দেশের নামিদামি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে পেছনে ফেলে উত্তরের এই কলেজটি এখনো দেশের একমাত্র মডেল কলেজ। আর এর পেছনের কারিগর কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা. হবিবুর রহমান।

গতকাল কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়ে ম্যুরাল নির্মাণের স্থানেই পাওয়া যায় অধ্যক্ষকে। দাঁড়িয়ে থেকে কাজ তদারক করছিলেন তিনি। জানতে চাইলে প্রফেসর মহা. হবিবুর রহমান বলেন, কলেজের এই অংশটি অব্যবহৃত পড়ে ছিল দীর্ঘদিন। যেখানে কখনোই শিক্ষার্থীদের পায়ের ছাপ পড়েনি। শিক্ষার্থীদের অবাধ বিচরণের জন্য সেখানে চত্বর নির্মাণ হচ্ছে। নির্মল আড্ডা, সাংস্কৃতিক কর্মকার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে এটি। প্রায় ৪-৫ বিঘা এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই অব্যবহৃত পড়ে ছিল। সেখানে রাজশাহী কলেজের ঐতিহ্যের আলোকে নান্দনিকভাবে সাজানো হচ্ছে।

আরও পড়ুন : নুরকে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগের সত্যতা পায়নি পুলিশ

তিনি আরও বলেন, নয় ফুট উচ্চতা এবং ৫০ ফুট প্রস্থের একটি ম্যুরাল হচ্ছে এখানে। ’৪৭-এর দেশ ভাগ থেকে শুরু করে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা, ’৬৯-এর গণআন্দোলন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষ?, মুজিবনগর সরকারের শপথ, একাত্তরের মহান মুক্তিযুক্ত এবং ’৭৫-এর ট্র্যাজেডি ফুটে উঠবে টেরাকোটায়।

পাঠের বাইরের শিক্ষার্থীরা এই টেরাকোটায় বাঙালির ইতিহাস জানতে পারবে। আর শিক্ষার্থীদের পাখির মতো মুখস্থ করতে হবে না। আমরা এমন শিক্ষার্থী চাই যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বড় হয়ে উঠবে।

সূত্রঃ আমাদের সময়
আডি/ ১৩ ডিসেম্বর

Back to top button