ব্যবসা

কোরবানির আগেই অস্থির মসলার বাজার

ঢাকা, ১৯ মে – কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে বাড়ছে মসলাজাতীয় পণ্যের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে জিরার দাম কেজিতে বেড়েছে ১০০ থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত। লবঙ্গের দাম ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে প্রতি কেজিতে। দারুচিনি, তেজপাতা ও ধনিয়ার দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। আগেই বেড়ে যাওয়া আদা ও পেঁয়াজের দাম গত কয়েক দিনে আরও এক ধাপ বেড়েছে।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, রোজার ঈদের পর থেকেই পাইকারি বাজারে বাড়তে শুরু করেছে মসলার দাম। প্রায় প্রতি বছরই কোরবানির ঈদের আগে এভাবে দাম বেড়ে যায়। অন্যদিকে এবারের পরিস্থিতির জন্য ডলারের দাম বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করছেন আমদানিকারকরা।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী কাঁচাবাজার ও নাখালপাড়া বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মানভেদে প্রতি কেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৬০ টাকা, যা সপ্তাহখানেক আগে বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। আর গত বছরের এ সময় জিরার কেজি ছিল ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে পণ্যটির দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

গত সপ্তাহে লবঙ্গের কেজি ছিল ১৪শ থেকে ১৫শ টাকা। কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫শ থেকে ১৬শ টাকা। অন্যদিকে বছরের ব্যবধানে পণ্যটির দাম বেড়েছে ৪০০ টাকা। গত বছরের এই সময়টাতে বিক্রি হয় ১১শ থেকে ১২শ টাকা দরে।

একইভাবে গত সপ্তাহে বিক্রি হওয়া ৪৫০ থেকে ৫২০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া দারুচিনির দাম বেড়ে এখন হয়েছে ৪৯০ থেকে ৫২০ টাকা। অর্থাৎ সাত দিনের ব্যবধানে দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা পর্যন্ত। এক বছর আগে দাম ছিল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে ধনিয়া বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকায়। সাত-আট দিন আগেও দাম ছিল প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। এক বছর আগে পণ্যটি কেনা যেত ১২০ থেকে ১৭০ টাকায়।

ডলারের দাম বাড়ার কারণে মসলার দাম বেড়েছে বলে দাবি করছেন আমদানিকারকরা। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে বাংলাদেশ পাইকারি গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এনায়েত উল্লাহ বলেন, আগে এক ডলারের জন্য আমদানিকারককে পরিশোধ করতে হতো ৮২ থেকে ৮৪ টাকা। এখন করতে হচ্ছে ১১১ টাকার মতো। এ ছাড়া শুল্ক পরিশোধ করতে হচ্ছে মোট দামের ওপর। ডলারের দাম বাড়ার কারণে শুল্কও আগের তুলনায় বেশি পরিশোধ করতে হচ্ছে। অর্থাৎ ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও শুল্কের পরিমাণ বেশি আসার কারণে মসলার আমদানি খরচ বেড়েছে। এ কারণে দেশের বাজারে দাম বাড়ছে।

এনায়েত উল্লাহ বলেন, টাকার মান ধরে রাখতে না পারা সরকারের ব্যর্থতা। এজন্য ব্যবসায়ীরা দায়ী নন; বরং তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তবে শুল্ক মওকুফ করলে মসলার দাম কমে যাবে বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে রাজধানীর বাজারে দাম আরেক দফা বেড়ে এখন প্রতি কেজি দেশি আদা ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায় এবং আমদানি করা আদা ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহে সবজির বাজার বেশ চড়া থাকলেও এ সপ্তাহে তিন-চারটি ছাড়া বেশিরভাগ সবজির দাম কিছুটা কম দেখা গেছে। ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে মিলছে ঢ্যাঁড়শ, পটোল, মুলা, শসা আর টমেটো। গত সপ্তাহে এ তিনটি সবজির দাম ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা।

সূত্র: সমকাল
আইএ/ ১৯ মে ২০২৩

Back to top button