দক্ষিণ এশিয়া

রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে প্রধান বিচারপতির বেতন বেশি

ইসলামাবাদ, ১৮ মে – পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও বেশি বেতন পান । আবার দেখা যায় মন্ত্রী, ফেডারেল সচিব এবং সংসদ সদস্যদের চেয়েও প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর বেতন কম। চাঞ্চল্যকর এই তথ্য এমন সময়ে প্রকাশ পেল, যখন রাজনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত দেশটির উত্তেজনা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে সুপ্রিম কোর্ট।

পাকিস্তানের উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সুপ্রিম কোর্টকে বর্তমান ক্ষমতাসীন জোট সরকারের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে দেখা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল পাকিস্তানের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) কাছে জমা দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেতন পাওয়ার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি সর্বোচ্চ অবস্থান রয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট।

নিউজ ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়, একজন সংসদ সদস্য মাসিক বেতন পান ১ লাখ ৮৮ হাজার রুপি। সে তুলনায় গ্রেড-২২ এর একজন কর্মকর্তা পান ৫ লাখ ৯১ হাজার ৪৭৫ রুপি ।

মঙ্গলবার পিএসি সুপ্রিম কোর্টে এক অডিটে বসে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ এই কর্তা-ব্যক্তিদের ১০ বছরেরও বেশি সময়ের ব্যয়ের অডিট ছিল এটি। পিএসির চেয়ারম্যান নূর খান এদিন সদস্যদের জানান, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের মাসিক বেতন পাকিস্তানি রুপিতে ৮ লাখ ৯৬ হাজার ৫৫০ রুপি এবং প্রধানমন্ত্রীর বেতন ২ লাখ ১ হাজার ৫৭৪ রুপি।

একই সঙ্গে দেশটির প্রধান বিচারপতি পাচ্ছেন ১৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৯৯ রুপি। বিস্ময়করভাবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের বেতন ১৪ লাখ ৭০ হাজার ৭১১ রুপি করে এবং ফেডারেল মন্ত্রীদের বেতন ৩ লাখ ৩৮ হাজার ১২৫ পাকিস্তানি রুপি।

কিন্তু এ অডিটে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার অনুপস্থিত থাকেন। এ সময় নুর খান অভিযোগ করে বলেন, ‘পিএসির সামনে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান হিসাবরক্ষকই যদি অনুপস্থিত থাকেন, তাহলে বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো কেন জবাবদিহি করবে।’ কমিটি আগামী মঙ্গলবারের বৈঠকে পুনরায় রেজিস্ট্রারকে তলব করেছে এবং হাজির না হলে তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারির হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

এদিকে অডিটে অনুপস্থিত রেজিস্ট্রারের এক চিঠির বরাতে নুর খান জানান, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাকাউন্টগুলোর অডিটের বিষয়টি বিচারাধীন এবং পিএসির আওতাধীন নয়। ফলে তিনি কমিটির সামনে হাজির হতে আইনত বাধ্য নন।

পাকিস্তানের হিসাবরক্ষক জেনারেল ২০১০-১১ থেকে ২০২০-২১ সাল পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের বাধ্যতামূলক ব্যয় সম্পর্কিত তথ্য পিএসির এজেন্ডায় নিয়ে এসেছেন। তার মতে, অডিটর জেনারেলের কার্যালয় ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের ব্যয় অডিট করেছে।

পিএসি সম্প্রতি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের অন্য সব বিচারপতিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধার বিশদ বিবরণ চেয়েছে।

সূত্র: দেশ রূপান্তর
আইএ/ ১৮ মে ২০২৩

Back to top button