পশ্চিমবঙ্গ

৩ বছরে ডাক্তার আর ৭ দিনে পুলিশ বানানোর প্রস্তাব মমতার

কলকাতা, ১৩ মে – পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৩ বছরের ডাক্তারি কোর্স এবং ৭ দিনের প্রশিক্ষণ দিয়ে পুলিশে নিয়োগ করার যে প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু এই ধরনের প্রস্তাবকে অবাস্তব এবং অবৈজ্ঞানিক বলছেন চিকিৎসক ও পুলিশ কর্মকর্তারা। শুধু তাই নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নার্সদেরও প্রশিক্ষণ দিয়ে ‘সেমি’ ডাক্তার বানানো যায় কিনা সেই দিকটিও ভেবে দেখতে বলেছেন।

মমতার মতে, পশ্চিমবঙ্গের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকের অভাব। তাই কম সময়ের কোর্স করিয়ে বা নার্সদের ‘সেমি’ ডাক্তার বানিয়ে কম জটিল রোগের চিকিৎসা করানো যায় কিনা সেটা ভেবে দেখতে বলেছেন। ডিপ্লোমাধারী ডাক্তারদের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘লোকসংখ্যা বাড়ছে, হাসপাতাল বাড়ছে। ডাক্তারদের একটা ডিপ্লোমা কোর্স চালু করতে পারি কিনা দেখব, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো।’এদের মূলত গ্রামীণ সরকারী হাসপাতালগুলোতে কাজে লাগানো যেতে পারে। নার্সদের সংখ্যা কম থাকায় সমস্যা হচ্ছে। নার্সিং কলেজ তৈরি করা উচিত আরো। তাদের ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজে লাগানো যেতে পারে। ১৫ দিনের প্রশিক্ষণই যথেষ্ট।’

তিনি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকরা প্রেসক্রিপশন দিয়েই চলে যায়। বাকি কাজগুলো কিন্তু করেন নার্সরাই। তাই তাদের প্রশিক্ষণ দিলে তারাও সাধারণ চিকিৎসাগুলো করতে পারবেন। তবে অপারেশন বা জটিল রোগের চিকিৎসা করানো হবে না।

চিকিৎসক এবং নার্সদের নিয়ে প্রস্তাব দেওয়ার পরই রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব এনএস নিগমকে এই নিয়ে কমিটি তৈরি করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু কম সময়ের ডাক্তারি কোর্স বা নার্সদের পদোন্নতি দিয়ে ‘সেমি-ডাক্তার’ অথবার সাত দিনের প্রশিক্ষণে পুলিশ – এই সবগুলি প্রস্তাবেরই বিরোধিতার করছেন চিকিৎসক এবং পুলিশ মহল। তারা এই প্রস্তাবগুলিকে অবাস্তব এবং অবৈজ্ঞানিক বলছেন।

পুলিশে নিয়োগের বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে রাজ্য পুলিশে সব নিয়োগ শেষ করতে হবে। এত দিন ছয় মাস ধরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। এখন সাত দিন প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর তাদের থানায় পাঠান। সেখানে ফোর্স বাড়ান। মাসের মধ্যে ২১ দিন ফিল্ডে করানো হোক। সাত দিন অন্যান্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হোক।

অবসরপ্রাপ্ত একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা সাত দিনের প্রশিক্ষণ দিয়ে পুলিশে নিয়োগ নিয়ে কিছু বলতে চান নি। তবে একজন অবসরপ্রাপ্ত অফিসার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ছয় মাসের প্রশিক্ষণের অনেকগুলো বিষয় থাকে, সেখানে আইন পড়তে হয়, শারীরিক সক্ষমতা শেখানো হয়, অস্ত্র চালনা, তদন্ত করা ইত্যাদি শেখানো হয়। সব কিছু সাত দিনের মধ্যে কীভাবে সম্ভব!’

সূত্র: কালের কন্ঠ
আইএ/ ১৩ মে ২০২৩

Back to top button