জাতীয়

মোখার কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ বাড়ছে

ঢাকা, ১২ মে – দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোকার কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ বাড়ছে। কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। শুক্রবার ভোরে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ ৯ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়া ‘মোকা’ শুক্রবার সকালে আরও শক্তি সঞ্চয় করে মধ্য বঙ্গোপসাগরে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে এগোতে পারে। রোববার দুপুরে বাংলাদেশের কক্সবাজার ও মিয়ানমারের কায়াকপুরের মধ্যে আছড়ে পড়তে পারে মোকা। এ সময় গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৭৫ কিলোমিটার।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ সামান্য উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি শুক্রবার ভোর ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও আরও ঘণীভূত হতে পারে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুদ্ধ রয়েছে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় মোকা স্থলভাগে আঘাত করার সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার। আমেরিকার নৌবাহিনী পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টারের সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে, ঘূর্ণিঝড় মোকা তার সর্বোচ্চ গতিবেগ অর্জন করবে ঠিক স্থলভাগে আঘাতের আগে। এমনকি স্থলভাগের উপরে উঠার পরেও ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় প্রায় ১৬৭ কিলোমিটার। মোকা বৃহস্পতিবার রাত ১টার সময় প্রায় ১৩ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৮ ডিগ্রি পূর্বা দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করে।

জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, মোকা বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় যে স্থানে অবস্থান করছে সেখানে সমুদ্রে ২৫ ফুট উচ্চতার ঢেউ সৃষ্টি হচ্ছে।

কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, কক্সবাজার জেলার সকল দ্বীপ এলাকার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে হবে শনিবার দুপুরের মধ্যে। সন্ধ্যার আগে সকল মানুষের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের কোনো মানুষ যেন তাদের কুঁড়েঘরে না থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে। সকল মানুষকে বাণিজ্যিক হোটেলগুলোতে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। সম্ভব হলে অনেক মানুষকে সরিয়ে নিতে হবে টেকনাফে।

সূত্র: সমকাল
আইএ/ ১২ মে ২০২৩

Back to top button