ধর্ম অবমাননার অভিযোগে পাকিস্তানে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা
ইসলামাবাদ, ০৭ মে – পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সমাবেশে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে উত্তেজিত জনতা এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। শনিবার এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
পাকিস্তানে অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি বিষয় ব্লাসফেমি বা ধর্ম অবমাননা। দেশটিতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার আগেই সাধারণ জনগণ প্রায়ই সহিংস উপায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে হত্যা করে।
ইমরান খানের রাজনৈতিক দলের সমাবেশে ওই ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে উন্মত্ত জনতার মারধরের হাত থেকে ওই ব্যক্তিকে বাঁচানোর ব্যর্থ চেষ্টা চালাতে দেখা যায় পুলিশকে।
শনিবার আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় অতি-রক্ষণশীল খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মারদান শহরের সাওয়াল ধের এলাকায় ওই ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ বলেছে, নিগার আলম নামের একজন ব্যক্তিকে ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) আয়োজিত সমাবেশে সমাপনী প্রার্থনা করতে বলা হয়েছিল। প্রার্থনার সময় তার কিছু মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে জনতা।
তবে তিনি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলন। পরবর্তীতে একদল লোক এক আত্মীয়র বাসায় তার অবস্থান শনাক্ত করে।
জেলা পুলিশের প্রধান নাজিব-উর-রেহমান বলেছেন, ‘প্রাচীরের উপর উঠে বাড়ির ভেতরে ঢুকে পড়েছিল উত্তেজিত জনতা। সেখানে তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।’
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, ‘জনতা এতটাই উত্তেজিত ছিল যে, এমনকি লাশ উদ্ধার করাও পুলিশের জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়ায়।’
সেখানকার পুলিশের আরেক কর্মকর্তা উমাইর খানও এই ঘট্নার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তবে দলীয় ওই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন না পিটিআইয়ের প্রধান ইমরান খান। আর দলটির নেতারাও এই বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করেনি।
পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা স্থানীয় সংগঠন সেন্টার ফর সোশ্যাল জাস্টিসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটিতে ১৯৮৭ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত ২ হাজার জনেরও বেশি মানুষকে ধর্ম অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আর এই অভিযোগে অন্তত ৮৮ জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
সূত্র: ঢাকা পোস্ট
আইএ/ ০৭ মে ২০২৩