পশ্চিমবঙ্গ

মমতার নির্দেশে অমর্ত্য সেনের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ

কলকাতা, ০৬ মে – পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তরফে নোবেলজয়ী ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অমর্ত্য সেনকে ‘উচ্ছেদের হুঁশিয়ারির’ প্রতিবাদে শনিবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে শান্তিপূর্ণ অবস্থান।

একদিকে ছবি আঁকা, অন্যদিকে গান-এই দুইয়ের মধ্যদিয়ে চলছে এই অবস্থান। অমর্ত্য সেনের ‘প্রতীচী’ বাড়ির কাছেই মঞ্চ বানিয়ে চলছে এই প্রতিবাদ।

মঞ্চে অবস্থান বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন পরিচালক গৌতম ঘোষ, চিত্রকর শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্যসহ বিদ্বজ্জনদের একাংশ। উপস্থিত রয়েছেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, সাংসদ অসিত মালসহ বিধায়ক ও দলের বীরভূম জেলার কোর কমিটির সদস্যরা।
মঞ্চের এক পাশেই ‘কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে একজন অমানুষ দগ্ধ করছে’- এমনই একটি আঁকা ছবির মাধ্যমে প্রতিবাদ করেন চিত্রকর শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য। সেখানে কেউ অমর্ত্য সেনের সমর্থনে, কেউ আবার বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে ব্যঙ্গ করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। এতে অংশ নিয়েছেন বিশ্বভারতীর শিক্ষার্থীরাও। পাশাপাশি বাউল শিল্পীদের নিয়ে চলছে একের পর এক গান পরিবেশন।

মূলত বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কোনোভাবে যাতে সেই জমি উচ্ছেদ না করতে পারে তা আটকাতেই ৬ এবং ৭ মে অমর্ত্য সেনের বাড়ির সামনে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সমাজের বিভিন্নস্তরের মানুষদের পাশাপাশি বীরভূম জেলার বাউল ও লোকসংগীত শিল্পীদের সম্পৃক্ত করে ওই দুইদিন বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এই অবস্থানের নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল রাজ্যের মন্ত্রী ও বোলপুর কেন্দ্রের তৃণমুল কংগ্রেস বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিনহাকে। সেই মতো ‘বিশ্বভারতী বাঁচাও কমিটি’র ব্যানারে এদিনের এই শান্তিপূর্ণ অবস্থান।

উল্লেখ্য, বিশ্বভারতীর তরফে অমর্ত্য সেনের ‘প্রতীচী’ বাড়িতে জোর করে দখল ১৩ শতক জমি খালি করার জন্য ১৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেয়। সেক্ষেত্রে ৬ মে-এর মধ্যে জমি খালি করতে বলা হয়। অন্যথায় বলপ্রয়োগ করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। যদিও, বিশ্বভারতীর এই নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

পরিচালক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘অমর্ত্য সেন শান্তিনিকেতনের বাসিন্দা। এটা আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তার মতো মানুষকে নিয়ে যা হচ্ছে তা কাম্য নয়। এটা সহজেই মিটিয়ে নেওয়া যেত। খুবই খারাপ লাগছে, তাই আমরা ছুটে এসেছি। আমরা চাই বিশ্বভারতী এই সমস্যা মিটিয়ে ফেলুক। এটা নিয়ে ঢাক পেটানোর কিছু নেই। এটা অহেতুক করা হয়েছে বলেই আমার মনে হয়।’

চিত্রকর শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব। কীভাবে একজন বিশ্ববরেণ্য মানুষকে উপাচার্য দিনের পর দিন জমি দখলকারী বলতে পারেন? এটা বাঙালির অবমাননা। তাই আমরা পথে নামতে বাধ্য হয়েছি।’

সূত্র: বিডি প্রতিদিন
আইএ/ ০৬ মে ২০২৩

Back to top button