আয় বেড়েছে আজমতের কমেছে জাহাঙ্গীরের
গাজীপুর, ২৯ এপ্রিল – তিন বছর গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র থাকার পর জাহাঙ্গীর আলমের সম্পদ ও আয় দুটিই কমেছে। আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়রপদে স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগ- বিদ্রোহী) প্রার্থী হিসেবে তার দাখিলকৃত নির্বাচনী হলফনামায় তিনি বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৯ লাখ টাকা। অথচ ২০১৮ সালে নির্বাচনের সময় দাখিলকৃত হলফনামায় তার বার্ষিক আয় ছিল ২ কোটি ১৬ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। বর্তমানে বার্ষিক আয়ে জাহাঙ্গীর আলমের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান। দাখিলকৃত হলফনামায় তিনি বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৩১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।
পাঁচ বছর আগে জাহাঙ্গীর আলমের কৃষি খাত থেকে আয় ছিল দেড় লাখ টাকা। এবার কৃষি খাত থেকে তিনি আয় দেখিয়েছেন ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। বাড়ি ও দোকান ভাড়া বাবদ আয় ছিল ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এবারও একই অঙ্ক দেখিয়েছেন। গতবার ব্যবসা থেকে আয় দেখিয়েছিলেন ৯৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। এবার সে আয় কমে ৩ লাখ টাকা হয়েছে। পাঁচ বছর আগে তার স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কৃষিজমি ছিল ১৪.১৫ একর, এবার তার কোনো কৃষিজমি নেই। আগে অকৃষি জমি ছিল ৩৩.৭১ শতাংশ, এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১৫.২১ শতাংশে। আবাসিক সম্পদ ছিল ৭.৪৩ শতাংশ, এবার বেড়ে হয়েছে ৪১.১৫ শতাংশ।
জাহাঙ্গীর আলমের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে হাতে রয়েছে নগদ ৪০ লাখ টাকা, যা পাঁচ বছর আগে ছিল ৭ কোটি ৪৮ হাজার ৯৬ হাজার টাকা। ব্যাংকে তার জমা আছে ৫০ হাজার টাকা, যা আগে ছিল ১ লাখ ৫৫ হাজার ৯৭১ টাকা। এবার তিনি তালিকাভুক্ত ও নন তালিকাভুক্ত শেয়ারের মূল্য দেখিয়েছেন অনারেবল টেক্সটাইলে ৪৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং জেড আলম অ্যাপারেলসে ২০ লাখ টাকা। সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ দেখিয়েছেন ১০ লাখ টাকা। আগেরবার তিনি বিনিয়োগ দেখেয়েছিলেন ব্যবসায় ৭৫ লাখ ২৩ হাজার ৭৮৭ টাকা এবং সঞ্চয়পত্রে ১০ লাখ টাকা। এ ছাড়াও জাহাঙ্গীরের দুটি গাড়ি, ৩৫ ভরি স্বর্ণ, একটি বন্দুক, একটি পিস্তল, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী এবং আসবাবপত্র আগের মতোই রয়েছে। পাঁচ বছর আগে তার বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা না থাকলেও এবার তার বিরুদ্ধে আটটি ফৌজদারি মামলা রয়েছে।
অপরদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানের বার্ষিক আয় জাহাঙ্গীরের চেয়ে বেশি। তার আয় ৩১ লাখ ৬৫ হাজার ৫০৫ টাকা। এর মধ্যে আইন পেশা থেকে বার্ষিক আয় ৬ লাখ টাকা এবং পুঁজিবাজারে শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংকসুদ থেকে বার্ষিক আয় ৬২ হাজার ৫০৫ টাকা। কৃষি ও তৈরি পোশাকের তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি বার্ষিক ২৪ লাখ ৩ হাজার টাকা সম্মানী ভাতা পান। এ ছাড়াও লেখক হিসেবে বই বিক্রি করে বার্ষিক ১ লাখ টাকা আয় করেন।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তার হাতে নগদ ৪ লাখ ৩১ হাজার ৭৩৬ টাকা রয়েছে। স্ত্রীর কাছে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৫০৬ টাকা রয়েছে। তার নিজের কোনো গাড়ি না থাকলেও স্ত্রীর নামে একটি প্রাডো গাড়ি রয়েছে। নিজের ২০ তোলা ও স্ত্রীর ৩০ তোলা স্বর্ণ রয়েছে। স্থাবর সম্পদের মধ্যে তার কোনো কৃষিজমি নেই। অকৃষিজমি হিসেবে নিজের নামে ১৪০.৬৩ শতাংশ এবং স্ত্রীর নামে ২৩৭.৮ শতাংশ জমি রয়েছে। ৭ শতাংশ জমির ওপর তার নির্মাণাধীন বাড়ি আছে। আগে আজমত উল্লার নামে একটি হত্যা মামলাসহ তিনটি মামলা থাকলেও টঙ্গী থানার হত্যা মামলার চার্জশিট থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অন্য দুটি মামলা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সূত্র: আমাদের সময়
আইএ/ ২৯ এপ্রিল ২০২৩