ক্রিকেট

সুপার লিগে সফল হয়েই বিশ্বকাপে যাবে টাইগাররা

ঢাকা, ২৪ এপ্রিল – পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে গত এক দশকে নিজেদের সমীহ জাগানিয়া দল হিসেবে প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ। দেশ কি দেশের বাইরে, দুদিকেই আধিপত্য রয়েছে টাইগারদের। চলমান ওয়ানডে বিশ্বকাপ সুপার লিগেও ভালো অবস্থানে রয়েছে তামিম ইকবালের নেতৃত্বে দলটির। এই লিগে আর মাত্র একটি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। তবে প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড হওয়ায়, সিরিজ জিতে সফলতার সঙ্গেই ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে যাওয়ার আশা সমর্থকদের।

গতবারের মতো ২০২৩ ভারত বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দল মোট ১০টি। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সুপার লিগে খেলা ১৩ দলের মধ্যে শীর্ষ সাত দল সরাসরি অংশ নেবে বিশ্বকাপে। আয়োজক হিসেবে ভারত বিশ্বকাপে অটো চয়েজ হিসেবে খেলবে। প্রতিটি দলকে দেশে এবং বিদেশে চারটি করে মোট আটটি দ্বিপক্ষীয় ওয়ানডে সিরিজ খেলতে হবে। প্রতিটি সিরিজ ৩ ম্যাচের, ম্যাচ সংখ্যা তিনের বেশি হলেও, শুধুমাত্র তিন ম্যাচের জন্য পয়েন্ট নির্ধারণ করেছে আইসিসি। প্রতি ম্যাচে জয়ী দল পাবে ১০ পয়েন্ট। আর খেলা টাই কিংবা কোন কারণে পণ্ড হলে সমান ৫ পয়েন্ট করে পাবে দু’দল।

এই আট দলের বাইরে ওয়ানডে মর্যাদা পাওয়া বাকি পাঁচ দল খেলবে বাছাই পর্ব। সেখানে আইসিসির সহযোগী দেশগুলোর আরো পাঁচটি মিলিয়ে মোট ১০টি দল অংশ নেবে কোয়ালিফাইং রাউন্ডে। সে আসরের দুই ফাইনালিস্ট টিকিট পাবে ২০২৩ বিশ্বকাপের।

আসন্ন আইরিশ সিরিজটি বাংলাদেশ খেলবে ইংল্যান্ডের মাটিতে। তিন ম্যাচের সিরিজে লাল-সবুজের দল সবকটি জিতলে লিগে ৩০ পয়েন্ট যোগ হবে। নিজেদের ২৪ ম্যাচের মধ্যে ২১টিতে খেলেছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে ১৩ জয় ও ৮ পরাজয়ে ১৩০ পয়েন্ট নিয়ে চারে রয়েছেন সাকিব-তামিমরা। ২৪ ম্যাচের চক্র পূরণ করে শীর্ষে রয়েছে নিউজিল্যান্ড। কিউইদের পয়েন্ট ১৭৫। সমান ম্যাচ খেলে ১৫৫ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ইংল্যান্ড। ২১ ম্যাচ খেলে ১৩৯ পয়েন্ট নিয়ে তিনে ভারত।

সুপার লিগের নিয়ম অনুযায়ী অংশগ্রহণ করা ১৩ দলের সবাই ৮টি করে সিরিজ খেলবে। প্রতিটি সিরিজ ৩ ম্যাচের। বাংলাদেশের বাকি রয়েছে শুধুই আয়াল্যান্ড সিরিজ। যেখানে আগের ৭ সিরিজের ৫টিতেই জিতেছে বাংলাদেশ।

এই লিগে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে। মিরপুর শের-ই-বাংলায় সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে যথাক্রমে ৬ ও ৭ উইকেটে জিতে সিরিজ ঘরে তোলে বাংলাদেশ। আর চট্টগ্রামে ১২০ রানে জয় পেয়ে ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দেয়। প্রথম সিরিজ থেকেই বাংলাদেশ পূর্ণ ৩০ পয়েন্ট অর্জন করে।
তবে নিজেদের পরের সিরিজেই মুদ্রার ওপিঠ দেখে ফেলে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে গিয়ে এবার উল্টো ধবলধোলাই। যেখানে ডানেডিনে প্রথম ম্যাচে বাজে খেলে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হার। দ্বিতীয় ম্যাচে ডানেডিনে ভালো করলেও ৫ উইকেটের পরাজয়। আর ওয়েলিংটনে শেষ ম্যাচে ফের বাজে খেলে ১৬৪ রানে হেরে যায়। ফলে এই সিরিজ থেকে একটি পয়েন্টও অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশ।

পরের সিরিজে শ্রীলংকাকে ঘরের মাঠে আমন্ত্রণ জানায় বাংলাদেশ। এবার লংকানদের মিরপুরে প্রথম দুই ম্যাচ হারিয়ে সিরিজ জয় করে নেয়। প্রথম ওয়ানডেতে ৩৩ রানে জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে ডিএলএস পদ্ধতিতে ১০৩ রানে বিশাল জয়ে সিরিজ ঘরে তোলে। যদিও একই ভেন্যুতে সিরিজের শেষ ম্যাচে ৯৭ রানে হেরে যায় টাইগাররা।

জিম্বাবুয়ে সিরিজ ছিল বাংলাদেশের এই লিগে তৃতীয় দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। তবে সফরে গিয়ে এক সময়ের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বীদের পাত্তাই দেয়নি টাইগাররা। হারারে স্পোর্টস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হওয়া তিন ম্যাচ জিতে হোয়াইটওয়াশ করে স্বাগতিকদের। প্রথম ম্যাচে ১৫৫ রানে বড় জয় পায় বাংলাদেশ। যেখানে ৩ ও ৫ উইকেটে যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচও জিতে নেয়। এই সিরিজ থেকেও বাংলাদেশ পূর্ণ ৩০ পয়েন্ট অর্জন করে।

 

ঘরের মাঠে বাংলাদেশের পরবর্তী প্রতিপক্ষ ছিল রশিদ-নবীদের আফগানিস্তান। তবে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম দুই ম্যাচে টাইগারদের কাছে পাত্তা পায়নি আফগানরা। জয় পায় ৪ উইকেট ও ৮৮ রানে। এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ ঘরে তোলে। যদিও একই ভেন্যুতে শেষ ম্যাচে তালগোল পাকিয়ে ৭ উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের পরের সিরিজ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার মতো কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে। তাও আবার তাদেরই মাটিতে। যেখানে এর আগে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে তাদের মাঠে কখনোই জিততে পারেনি বাংলাদেশ। তবে এবার তামিম ইকবালের নেতৃত্বে ইতিহাসই গড়ে টাইগাররা। সেঞ্চুরিয়নে প্রথম ম্যাচে ৩৮ রানে জয় পায় বাংলাদেশ। তবে জোহান্নেসবার্গে দ্বিতীয় ম্যাচে ৭ উইকেটে জিতে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। কিন্তু সেঞ্চুরিয়নে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে চূড়ান্ত ইতিহাস রচনা করেন তামিমরা। ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে জিতে সিরিজ ঘরে তোলে। এই সিরিজ থেকে ২০টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ঘরে তুলতে পারে লাল-সবুজের দল।

এরপর দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশ সফরে আসে ইংল্যান্ড। এখন পর্যন্ত এই একটি দলের বিপক্ষে কোনো সিরিজ জিততে না পারা টাইগারদের জন্য ভালো সুযোগ অপেক্ষা করছিল। তবে এবারও হলো না। মিরপুরে প্রথম দুই ম্যাচে যথাক্রমে ৩ উইকেট ও ১৩২ রানে হেরে সিরিজ খোয়ায়। চট্টগ্রামে শেষ ম্যাচে ৫০ রানে জিতে অবশ্য মূল্যবান ১০টি পয়েন্ট হাতে নিতে পারে স্বাগতিকরা।

সূত্র: আমাদের সময়
আইএ/ ২৪ এপ্রিল ২০২৩

Back to top button