ঢাকা, ০৯ ডিসেম্বর- আমনের ভরা মৌসুমে বাজার নিয়ন্ত্রণের নামে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি করছে সরকার। ১৭১ কোটি ৪৪ লাখ টাকায় ভারতীয় একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এই চাল কেনা হবে। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটির বৈঠকে চাল আমদানির বিষয়টি অনুমোদন হয়। দুর্যোগকালীন চাল আমদানি না করে ভরা মৌসুমে সরকারের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কৃষি অর্থনীতিবিদ ও কৃষক নেতারা।
দেশে কয়েক দফা বন্যার পরও কৃষকদের কল্যাণে আমনের বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। ইতোমধ্যে ৭০ শতাংশ জমির ধান কাটাও শেষ হয়েছে। বাজারে আসা প্রতি মণ নতুন আমন ধান বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকার উপরে। এতে বন্যার ধাক্কা কাটিয়ে কিছুটা লাভের মুখ দেখছেন কৃষকরা।
এমন অবস্থায় হঠাৎ চাল আমদানির ঘোষণা দিলো সরকার। ভারতীয় একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৫০ হাজার টন চাল কেনা হবে।
মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু সালেহ মোস্তফা কামাল বলেন, ‘৫০ হাজার মেট্রিক টন বাসমতি চাল। আর টাকায় রূপান্তর করলে দাঁড়াবে ১৭১ কোটি ৪৪ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। প্রতি কেজি ৩৪.২৮ টাকা। এটা সাপ্লাই দিচ্ছে মুম্বাই।’
সরকারের এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে কৃষি অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে মৌসুমের অন্তত দু’মাস আগে সরকারের চাল আমদানি করা উচিত ছিলো।
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সেপ্টেম্বরে আমরা দেখেছি চালের দাম বেড়ে গেলো। আলটিমেটলি আমাদের আমদানি করতে হচ্ছে। ওই সময়টাতে যদি এই সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত তাহলে কৃষকরা দাম পড়ে যাওয়া হাত থেকে রক্ষা পেত।
সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতী বলে মন্তব্য করেছেন কৃষক নেতারা।
রংপুর জেলা কৃষক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক পলাশ কান্তি নাগ বলেন, ‘মিল মালিকদের গোডাউনে পর্যাপ্ত চালের মজুদ থাকার পরও তারা কিন্তু বাজারে চাল সরবরাহ করছে না। আমরা মনি করি যে, এই ক্ষেত্রে আসলে সরকারের মিল মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।
আরও পড়ুন : বাবুনগরী-মামুনুলদের বিরুদ্ধে একদিনে দুই মামলা
রংপুর জেলা জাতীয় কৃষক সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানি বলেন, ‘আমদানিকে এই মুহূর্তে আমরা নিরুৎসাহিত করতেছি এবং কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনার পরামর্শ দিচ্ছি।’
বর্তমানে দেশে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি সরু চাল ৫৫-৫৭ টাকা; মাঝারি চাল ৪৮-৪৯ টাকা এবং মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪-৪৬ টাকায়।
সূত্রঃ সময় নিউজ
আডি/ ০৯ ডিসেম্বর