দক্ষিণ এশিয়া

ভর্তুকিতেও সমাধান মিলছে না পাকিস্তানের

ইসলামাবাদ, ২০ এপ্রিল – পাকিস্তানের রাজস্ব ঘাটতি এবং ক্রমবর্ধমান ঋণকে দেশটির অর্থনীতির জন্য ‘বিপজ্জনক’ বলে মন্তব্য করেছে বিশ্বব্যাংক। এ সমস্যা মোকাবিলায় দেশটিকে ভর্তুকি বন্ধ করাসহ বেশকিছু পরামর্শও দিয়েছে সংস্থাটি। খবর: দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।

পাকিস্তানের অর্থনীতির উন্নতির জন্য বিশ্বব্যাংক তার পর্যালোচনা প্রতিবেদনে ঋণ ব্যবস্থাপনা এবং একটি একক ট্রেজারি অ্যাকাউন্ট প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, দেশটি অপ্রয়োজনীয় খরচ এবং ভর্তুকি দূর করে বছরে ২.৭২ ট্রিলিয়ন রুপি সাশ্রয় করতে পারে। কারণ এ দুইয়ের পেছনেই দেশটির বাজেটের ৭০ শতাংশ চলে যায়। আরও যোগ করা হয়েছে, রাজস্ব বৃদ্ধি ছাড়াও, এই প্রশাসনিক ব্যবস্থাগুলোর মাধ্যমে দেশটির জিডিপির ৪ শতাংশের সমপরিমাণ সঞ্চয় করা সম্ভব হয়েছিল।

প্রতিবেদন বলছে, দেশটির উন্নয়ন বাজেটের লাগাম টেনে ৩১৫ বিলিয়ন রুপি সাশ্রয় করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে ‘বেনজির আয় সহায়ক প্রকল্প’ বা বিআইএসপি ব্যয়ের ৯০ শতাংশসহ বিভিন্ন বিষয় প্রদেশগুলোর ওপর ন্যস্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, বিআইএসপি ব্যয়ের ৯০ শতাংশ প্রদেশগুলো দেখভাল করলে ২১৭ রুপি সাশ্রয় করা যেতে পারে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, কর রাজস্বে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের অংশগ্রহণ মাত্র ৪৬ শতাংশ, যেখানে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৬৭ শতাংশ। সুদ, ভর্তুকি এবং বেতন-ভাতা সরকারের ওপর এখন একটি বড় বোঝা। পাকিস্তানের অষ্টাদশ সংবিধান সংশোধনের পর ব্যয় ও ঘাটতি বেড়েছে বলে বিশ্বব্যাংক তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর দেশটির রাজস্ব ঘাটতি ছিল ৭.৯ শতাংশ, যা বিগত ২২ বছরের সর্বোচ্চ। এ ছাড়া ঋণের অনুপাতও বেড়ে ৭৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছিল, যখন দেশটির মোট রাজস্ব ছিল জিডিপির মাত্র ১২.৮ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ছিল প্রাদেশিক বিষয়। আর এ দুটি বিষয়কে প্রাদেশিকভাবেই পরিচালনা করতে দিলে ৩২৮ বিলিয়ন রুপি বাঁচানো সম্ভব।

বর্তমান নাজুক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশটির নিম্ন-আয়ের শ্রেণিকে কিছুটা স্বস্তি দিতে সরকার প্রতি লিটার পেট্রোলে ১০০ রুপি পর্যন্ত ভর্তুকি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। আর এ ভর্তুকির তহবিল সংগ্রহ করা হবে ধনী গ্রাহকদের কাছ থেকে। তারা বেশি দামে জ্বালানি কিনবেন। এ ক্ষেত্রে ধনী-গরিব বিবেচনায় একটি দুই স্তর বিশিষ্ট মূল্য ব্যবস্থা চালু করা হবে।
দুই বা তিন চাকার যানবাহনের জন্য প্রতি মাসে ২১ লিটারের মাসিক প্যাকেজ রয়েছে। এ ছাড়াও ৮০০ সিসি বা তার কম ক্ষমতাসম্পন্ন ছোট গাড়ির জন্য প্রতি মাসে ৩০ লিটারের প্যাকেজ রয়েছে।

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী মুসাদিক মালিকের মতে, এ ব্যবস্থাটির আওতায় প্রায় ২ কোটি নিবন্ধিত মোটরসাইকেলের পাশাপাশি থাকবে রিকশা এবং সাড়ে ১৩ লাখেরও বেশি গাড়ি। এদিকে এ ধরনের পরিকল্পনায় অসন্তুষ্টি দেখিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এ অবস্থায় পাকিস্তানের সরকার কর্মী পর্যায়ের চুক্তির জন্য অপেক্ষা করছে, যা কি-না এরই মধ্যে ৮ মাস বিলম্ব হয়ে গেছে।

তবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থার সঙ্গে পরামর্শ ছাড়াই একটি ভর্তুকি পরিকল্পনা ঘোষণা করায় চুক্তিটিকে আরও বিলম্বিত করতে পারে!

সূত্র: আমাদের সময়
আইএ/ ২০ এপ্রিল ২০২৩

Back to top button