জাতীয়

‘খোঁজ নেই’ সেই আরাভের

রিয়াদ তালুকদার

ঢাকা, ২০ এপ্রিল – ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির পর থেকে খোঁজ নেই পুলিশ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি দুবাইয়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের। এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সরব উপস্থিতি ছিল তার। এখন আর তাকে সেখানে দেখা যাচ্ছে না। এমনকি রেড নোটিশ জারির পর আরাভ কোথায় সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই বলে দাবি করছে পুলিশও।

রেড নোটিশ জারি থাকা ব্যক্তির বিষয়ে কোনও তথ্য ইন্টারপোল দেয় না। সংস্থাটি নিজেদের মতো তথ্য সংগ্রহ এবং কার্যক্রম চালায়। তারপরও বাংলাদেশ পুলিশের এনসিবি শাখা প্রতিনিয়ত ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র বলছে, আরাভ দুবাইয়ে অবস্থান করছে নাকি দুবাই ছেড়ে অন্য কোনও দেশে গেছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে দুবাই পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে এসব বিষয় নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে। তার অবস্থান শনাক্ত করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে এবং সংশ্লিষ্ট দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিয়ে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য যোগাযোগ চলছে। যেহেতু আরাভ খান ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে দুবাই অবস্থান করছিল সে কারণে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, হিরো আলম, চিত্রনায়িকা দীঘিসহ বেশ কয়েকজন দুবাইয়ে আরাভের স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে যান। এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে রবিউল ওরফে আরাভের প্রসঙ্গটি আলোচনায় উঠে আসে আবার। পুলিশ আবার নড়েচড়ে বসে। ইন্টারপোলের রেড নোটিশে থাকা রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভের বিষয়ে জানতে ইন্টারপোলে ইমেইল পাঠানো হয়। ফিরতি মেইলে জানানো হয়, সংস্থা (ইন্টারপোল) নির্দিষ্ট কেস, তদন্ত বা ব্যক্তি সম্পর্কে মন্তব্য করে না। সংশ্লিষ্ট দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ পুলিশ সদর দফতরের এআইজি মিডিয়া মনজুর রহমান বলেন, ইন্টারপোলের পক্ষ থেকে পুলিশ হত্যা মামলার আসামি আরাভের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে। আরাভের অবস্থান কোথায় এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে আর কোনও তথ্য নেই। তবে তার অবস্থান শনাক্ত করতে ইন্টারপোল এবং দুবাই পুলিশসহ বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ চলমান রয়েছে। তার অবস্থান শনাক্ত করে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে এনসিবি শাখা কাজ করছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশি অপরাধী হিসেবে ইন্টারপোলের মোস্ট ওয়ান্টেডের তালিকায় রবিউল ইসলাম রবিউলের নাম যুক্ত হয়েছে। ৩৫ বছর বয়সী রবিউলের জন্মস্থান বাংলাদেশের বাগেরহাটে। জাতীয়তা দেখানো হয়েছে বাংলাদেশি। ইন্টারপোলের রেড নোটিশের তালিকায় রবিউল ইসলামের নাম যুক্ত হওয়ায় সংস্থাটির তালিকায় বাংলাদেশি অপরাধীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬৩ জনে। তারা বিভিন্ন দেশে পালিয়ে অবস্থান করছে।

রবিউল ওরফে আরাভ কীভাবে বিশাল সম্পত্তির মালিক হয়ে গেছেন, এর পেছনে কারা রয়েছে এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে তিনি কীভাবে ভারত গিয়েছেন, কীভাবে ভারতে পাসপোর্ট তৈরি করে আবার বাংলাদেশে ঘুরে গেছেন, এর পেছনে পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার একজন পুলিশ কর্মকর্তা তাকে সহায়তা করেছে বলে যে তথ্য পাওয়া গেছে এসব বিষয় খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দারা। এছাড়া পুলিশ হত্যা মামলার চার্জশিট দেওয়া হলেও মামলাটি আবারও পুনঃতদন্তের জন্য আবেদন করেছে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

২০১৮ সালের ৮ জুলাই বনানীতে আরাভের অফিসে পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুন ইমরান খানকে হত্যা করা হয়। পরে তার মরদেহ পুড়িয়ে দেয় তারা। এ ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় আসামি করা হয় আরাভ খান ওরফে রবিউল ওরফে হৃদয়কে।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
আইএ/ ২০ এপ্রিল ২০২৩

Back to top button