জাতীয়

আজ চৈত্রসংক্রান্তি, ১৪২৯ বঙ্গাব্দের শেষ দিন

ঢাকা, ১৩ এপ্রিল – সংক্রান্তি মানে মাসের শেষ। চৈত্র মাসের সঙ্গে আজ ১৪২৯ বঙ্গাব্দেরও শেষ দিন। বসন্তের এই বিদায়ক্ষণে দেশজুড়ে এখন গ্রীষ্মের প্রখর উত্তাপ। এরই মধ্যে চলছে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর পালা, যার প্রধান অনুষঙ্গ রমনার বটমূলে ছায়ানটের ঐতিহ্যবাহী বর্ষবরণের আয়োজন আর চারুকলা ইনস্টিটিউটের বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা।

বর্ষপঞ্জির শেষ দিন হিসেবে চৈত্রসংক্রান্তি বাঙালির জীবনে এক বিশেষ দিন। কৃষি সংস্কৃতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই দিনটি বাঙালিদের অনেকেই স্নান, দান, ব্রত, আচার ও বিশেষ খাবার গ্রহণের মাধ্যমে উদযাপন করে। কারণ চৈত্রসংক্রান্তি অনেকাংশে এক ধর্মীয় পর্বও। বছরের এই সব শেষ দিনে বাঙালি হিন্দুরা শিবের পূজা করে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের উৎসব-অনুষ্ঠান ও মেলা হয়। তবে পরের দিনের নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার অনুষ্ঠানটি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব বাঙালির।

বছরের বিদায়বেলায় আগের বছরের সব গ্লানি, ব্যর্থতা, রোগ-শোক, বালা-মুসিবত থেকে মুক্তির প্রত্যাশা থাকে সবার। মনে থাকে নতুন বছরে সুখ-শান্তি, সচ্ছলতা ও নির্ঝঞ্ঝাট জীবনের আশা। এই ভাবনা থেকেই কৃষিভিত্তিক এই জনপদের চৈত্রসংক্রান্তির আচার-অনুষ্ঠানের উদ্ভব। ফাল্গুনের পর বসন্তের মৃদুমন্দ হাওয়া চৈত্রে এসে বদলে যেতে থাকে। চৈত্রের দহনের প্রখরতা আরো বেড়ে যায় গ্রীষ্মে। ঝড়ঝঞ্ঝা আর কালবৈশাখীর দাপট তীব্র হয়। এসব থেকে রক্ষা পেতে প্রকৃতির স্তুতির আয়োজন করাই চৈত্রসংক্রান্তির লোকাচারের মূল ভাবনা।

কালের প্রবাহে চৈত্রসংক্রান্তি পালনের লোকজ রীতিগুলোর বেশির ভাগই টিকে না থাকলেও এখনো গ্রামাঞ্চলে মেলা বসে। চৈত্রসংক্রান্তির প্রধান উৎসব চড়ক। এর সঙ্গে চলে গাজনের মেলা। সনাতন বিশ্বাস অনুযায়ী, চৈত্রের শুরু থেকে বর্ষা পর্যন্ত সূর্যের যে প্রখর উত্তাপ তা প্রশমিত হয় গাজনের স্তুতিতে। সংক্রান্তির আরেক প্রধান আয়োজন হলো চড়ক। চৈত্র মাসজুড়ে উপবাস, ভিক্ষান্নভোজন প্রভৃতি নিয়ম পালন করার পর সংক্রান্তির দিন বড়শি গাঁথা অবস্থায় চড়কগাছে (উঁচু করে পোঁতা কাঠে) ঘোরার মতো কষ্টসাধ্য দৈহিক কলাকৌশল দেখানো হয়। দেশের হিন্দুপ্রধান অঞ্চলে যুগ যুগ ধরে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বিশেষ করে একসময় ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, বরিশাল ইত্যাদি অঞ্চলে এই মেলা বেশি বসত। এখন তা কমে এসেছে।

ঢাকায় গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন ও শিল্পকলা একাডেমি যৌথভাবে আজ চৈত্রসংক্রান্তি উদযাপন করবে। সন্ধ্যা ৭টায় সরোদ বাদনের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠান শুরু হবে জাতীয় নাট্যশালায়। থাকবে গান, অভিনয়, ধামাইল নৃত্যসহ নানা কিছু।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ১৩ এপ্রিল ২০২৩

Back to top button